সম্পর্ক
সম্পর্ক


মাটি ও বৃষ্টির সম্পর্ক অনেক দিনের। কিন্তু ইদানিং বৃষ্টির স্বভাবে মাটি পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে। বৃষ্টি সেভাবে তার কাছে আসে না। মাটি অপেক্ষা করে থাকে বৃষ্টি তার কাছে আসবে, আজ আসবে কাল আসবে ভেবে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। মাটির সাথে বৃষ্টির প্রতিদিনই হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। মাটি যখনই বলে, ' আজ আসবি তো?' তখনই বৃষ্টি বলে,' না রে আজ তো হবে না। আসলে আমি এখন খুব ব্যস্ত।' শুনে মাটির কষ্ট হয় মনের ভিতরে। মাটি বলে ওঠে 'আচ্ছা ঠিক আছে। তোর ব্যস্ততা কমলেই আসিস।' এইভাবে দিন কেটে যায় বৃষ্টি আসে না। মাটির মনের ভিতর কষ্ট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। মাটি একদিন বৃষ্টিকে বলে,' আমি যখনই ডাকি তুই তখনই না বলিস। তোর এত ব্যস্ততা!' বৃষ্টি বলে ওঠে, ' তোর কি তাতে? আমার সাথে কথা বলবি না।' তখন মাটির বুকটা ধড়াস করে কেঁপে ওঠে; বৃষ্টি ছাড়া সে বাঁচতে পারবেনা। তৎক্ষণাৎ বলে ওঠে,' রাগ করিস না বৃষ্টি। আমি তোর জন্য অপেক্ষা করে থাকব।' এইদিকে মাটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি কষ্ট বুঝেও বুঝেনা। মাটি জলের অভাবে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে অকাতরে সবাইকে সাহায্য করে। কেউ তার শরীর কেটে নিয়ে যায়, আবার কোনো কোনো জীব তার কাছে আশ্রয় নেয়। একদিন একটি পিঁপড়ে তাকে জিজ্ঞেস করে, ' মাটি দাদা এরকম অবস্থা কেন হল?' মাটিদাদা বলে, ' কি অবস্থা?' পিঁপড়ে বলে,' দাদা তুমি কিছুদিন ধরে কেমন ম্রিয়মাণ হয়ে গেছো। তোমার কি হয়েছে?' শুনে মাটি দাদা হেসে বলে,' নারে আমার কিছু হয়নি'। তারপরই মাটিদাদা পিঁপড়েদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করে তার সমাধান করে দেয়। কিন্তু নিজের কষ্টটা প্রকাশ করে না। তার কষ্ট জানল শুধু অন্তর্যামী। অন্যদিকে, বৃষ্টি মেঘেদের সাথে মজায় আছে। সে জানে মাটির ডাকে না সাড়া দিলেও মাটি ঠিক তাকে ডাকবেই। কিন্তু মেঘেরা ডাকলে যেতেই হবে। এমনিতেও মাটি দেখতে মেঘেদের মতো এতো সুন্দর নয়। আর মাটি তো সবকিছুই সহ্য করে, এই কষ্টও সহ্য করতে পারবে। এইভাবে দিন যেতে থাকে বৃষ্টিও তার সাথে আর সেভাবে কথা বলেনা; মাটিও বৃষ্টির সাথে কথা বলে তাকে বিরক্ত করতে চায়না। বৃষ্টি বড়ই ব্যস্ত। একদিন বৃষ্টি ফিরে আসবেই এই আশা নিয়ে মাটি অপেক্ষা করে থাকে।