সমব্যাথী
সমব্যাথী


পৃথুলা শরীর নিয়ে যখন রিমলির শ্বাশুড়ি খাটে পদযুগল ছড়িয়ে বলল, ---- বসে থাকতে থাকতে যেন মাজা ধরে গেল। আচমকা ঐ ভঙ্গী দেখে রিমলির মনে পড়ে গেল তাঁর কথা। এই লকডাউনের বাজারে সে খাবার পাচ্ছে? তাঁর তো নড়াচড়ার উপায়ও নেই। থাকার কোন আলাদা বাসস্থান নেই! বাসস্ট্যান্ডের তলাতেই এক কোণে পড়ে থাকা। তবে----!
আজ চোদ্দ দিন হল লকআউটের! অফিসে যেত যখন তখন বিস্কুট –পাউরুটি - কেক –সামনের দোকান থেকে যা পেত টুকিটাকি কিনে দিত। সামনের মন্দির থেকেও দু বেলা খাবার পেত। কিন্তু ভগবানের দরজাও এখন বন্ধ! এদিকে নিজেদের রোজকার ফিস্টের ঠ্যালায় তাঁর কথা এখন পুরো বিস্মৃত! দুটো মুড়ি-বাতাসাও তো দিয়ে আসতে পারত! কিন্তু পরক্ষণেই মনকে প্রবোধ দিল রিমলি--- বেরোলেই তো পুলিশ ধরছে --- তাছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয় তো আছেই !
তা এখন কিঞ্চিৎ শিথিলও হয়েছে লকআউট । আর অযথা চিন্তা না করে রিমলি গ্লাভস-মাস্ক পড়ে বেরোল বাজারের ব্যাগ হাতে। সাথে সাথে পাড়ার কুকুরটা লেজ নাড়তে নাড়তে চলে এল। তাঁকে বিস্কুট খাওয়ানোও একটা রোজের রুটিন ছিল রিমলির তখন । সামনের মুদিখানার দোকানে গিয়ে অনেক বিস্কুট-কেক আর প্পাউরুটি কিনল। পাড়ার কুকুরটাকে দিতেই সে মুখে করে নিয়ে তৎক্ষণাৎ চলে গেল। ধীরেসুস্থে রিমলি পৌঁছল যথাস্থানে। গিয়ে তার পরোপকারের আত্মশ্লাঘা মুহূর্তে মাটিতে মিশে গেল।
পাড়ার কুকুরটা বিস্কুটের প্যাকেট ছিঁড়ে একটা খাচ্ছে আর একটা সেই বাসস্ট্যান্ডের আশ্রিতাকে দিচ্ছে!