স্কুল জীবন
স্কুল জীবন


জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি ছোটবেলায়। স্কুলজীবন ঘিরে কত কত স্মৃতি, কত গল্প। কোনটা যে বলবো ভেবে পাচ্ছিনা। একান্নবর্তী পরিবারের ছোট্টো পাঁচ বছরের মেয়েটি বাবার হাত ধরে যখন গেল কাছেই পাড়ার স্কুলটিতে মনে সে কি আনন্দ। আজও মনে পড়ে। তার আগেই বাড়িতে বর্ণপরিচয় এর দুটো ভাগ, অঙ্কের যোগ বিয়োগ আর অগণিত ছড়ার বই শেষ। যার জন্য খুব অনায়াসেই ভর্তি হয়ে গেলাম ক্লাস ওয়ান এ। পরদিন নতুন আলুমিনিয়াম সুটকেস এ খাতা পেন্সিল রাবার নিয়ে নতুন ড্রেস পরে শুরু হলো স্কুল যাওয়া। মর্নিং স্কুল। সবাই ছোটো। প্রথম প্রথম ক্লাসে বসেই ঢুলতাম। স্নেহপ্রবন দিদিমণি কাছে এসে মাথায় হাত দিয়ে গাল টিপে আদর করে তুলে পড়া বোঝাতেন। আর প্রথম দিন থেকেই শুরু হলো এক নতুন অধ্যায় 'বন্ধু'। আর এই বন্ধু প্রীতি আমার আজও চলছে। ওই স্কুলেই জীবনের প্রথম দশটা বছর কাটিয়েছি। অনেক অনেক ঘটনা। বলতে গেলে তো মহাভারত হয়ে যায়। পড়াশোনায় মোটামুটি ভালোই ছিলাম। তাই দিদিমণি দের প্রিয়পাত্রী। শান্ত ছিলাম সেজন্য তেমন শাস্তিও পাইনি কোনোদিন। আর সব থেকে যেটা পেয়েছি সেটা হলো বন্ধুদের ভালোবাসা। নিজের ক্লাসের মেয়েরা তো বটেই উঁচু ক্লাসের দিদিরা বা নীচু ক্লাসের বোনেরা সবাই কেন জানিনা খুব ভালোবাসত। দিদিরা খুব আদর করতো। জীবনের সেরা সময় বোধহয় কাটিয়েছি ওই সব দিনে। একটা দুঃখ ছিলো স্কুল থেকে বাড়ি বড্ডো কাছে, তাই যখন একসাথে দলবেঁধে ফিরতাম বড্ডো মিস করতাম ওদের গল্পগুলো কারণ আমি তো দু মিনিটেই বাড়ি ঢুকে যেতাম। স্কুলের পঞ্চাশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে নিজের খুব ভালো লেগেছিলো কারণ তখন আমি এক সন্তানের মা, ঘোরতর সংসারী। আজও যখন স্কুলের সামনে দিয়ে বাপের বাড়ি যাতায়াত করি সেই ছোট্ট বেলার দিনগুলো ছবির মতো চোখের সামনে ফুটে ওঠে।