SHYAMAL CHAKRABORTY(GREEN)

Tragedy Classics

4.5  

SHYAMAL CHAKRABORTY(GREEN)

Tragedy Classics

রমার দুর্ভাগ্য(  সমকাম )

রমার দুর্ভাগ্য(  সমকাম )

4 mins
358


          

        শ্যামল চক্রবর্ত্তী( সবুজ)


রমার পিতার নেই, মা ভাই বোন দাদা নিয়ে সংসার।

অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছে।

বিয়ের বয়স হয়েছে রমার। উপযুক্ত পাত্র দেখে মা বিয়ে দিল। পাত্র বুদ্ধিমান শহুরে নৃপেন ।মেয়েরা কি শুধু পেট ভরে ভাত আর পোশাক দেওয়ার জন্যই কি বিয়ে দেওয়া? স্বামীর কাছে অনেক কিছু পাওয়া ও চাওয়ার থাকে!

জীবনে উভয়ের এডজাস্টমেন্ট অর্থাৎ কম্প্রোমাইজ বা মানিয়ে নেওয়া জীবন।

বুদ্ধিতে, ধার দেওয়া হয়। নাকি জন্মগত বুদ্ধিমান হয়। সে কেউই জানেনা। পৃথিবীতে অনেক বড় বড় বিজ্ঞানী জন্মেছিলেন। তাদের মেধা ছিল। মেধা নাকি মাপা যায়।

যাইহোক রমা বুদ্ধিমান কিনা আপনারাই বিচার করবেন ।

আমরা শুধু গল্পের আকারে তুলে ধরছি।

রমা: 'হ্যাগো---- তুমি তো দেখি অশোকের সঙ্গে খালি গল্প করো। তোমার কি কাজকর্ম কিছু নেই?


নৃপেন: " দেখো 'অশোক 'বাঁকুড়া থেকে এসেছে।

উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় থাকার প্রয়োজন। আমার ঘরের এক ভাড়াটিয়া। দু'বছর ধরে ভাড়া আছে।" 

"ওর মা দেখতো মাঝে মাঝেই আসে। আমাকে বলে গেছে দাদার মতো দেখাশুনা করতে।"

রমা: "মা তোমায় দেখে দিয়েছে বিয়ে । তুমি কার জন্য কাজ করো? তুমি ভেবে নিয়েছো ভাড়াটিয়ার ভাড়া দিয়ে সংসার চালাবে? কিছু করবে না তাইতো?

নৃপেন: "ঘর ভাড়া দিয়ে সংসার চলে যায়----- তোমার ত আপত্তি কিসের?"

রমা : "আমার সবে দু মাস হলো বিয়ে হয়েছে। আমাকে তুমি সময় দাও না!" আমার সঙ্গে তুমি ঠিকমত গল্প করো না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কত মধুর সম্পর্ক থাকে। রোমান্স থাকে। কত কিছু চাওয়া পাওয়া থাকে।" "আমার সাথে তোমার জন্য বিরহের সম্পর্ক। আমার সঙ্গে কথা বললে তোমার টক ঝাল খাই মেজাজ । মুখ ঝামটা দাও।"

বিয়ের পর লোকের হানিমুনে যায় ওই হানিমুনে তো নিয়ে গেলে না?"

নৃপেন: সময় কি বেরিয়ে গেছে? দেখো আমার অর্থ জোগাড় করি।

রমা: আমি তোমায় বলছি না, আমেরিকা-বৃটেন ঘোরাও। তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমাকে নিয়ে চলো কাছাকাছি কোথাও।"

"দেখো আমি অবুঝ মেয়ে নই, তোমার কি সামর্থ্য আমি বুঝবো না। সামান্য টাকা তোমার নেই এটা হতে পারে না।"

নৃপেন: "না আমি তোমায় নিয়ে যাব না---। তুমি আমায় সন্দেহ করছো।"

রমা: "দেখো চোর কেমন নিজেই ধরা দেয়।" কিসের সন্দেহপ্রবণ ?" আমি কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না।"

নৃপেন: "সন্দেহ সন্ধি। তুমি কি মনে করো পুরুষের সাথে পুরুষের সম্পর্ক হয়?"

রামা: কি সব বলছো; বলতো সব ভাবতেই পারছিনা? আমি সরল সাদাসিদে মেয়ে। কি কথা বলছো, পুরুষের সঙ্গে পুরুষের সম্পর্ক মানে?

অবশ্য, তোমার মধ্যে এত গুণ আছে আমি তো জানতাম না?"

(কচি নরম মন যেন বিষিয়ে তুলছে)

রমা: সদ্যবিবাহিতা।

"বিয়ের দু সপ্তাহ পর থেকেই। তুমি আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছো।" নারীদের যে সুখ, মানসিক শারীরিক। পেলাম কোথায় তোমার থেকে?"

"বন্ধুদের থেকে শুনেছিলাম। পুরুষের সঙ্গে নাকি পুরুষের সম্পর্ক হয়। তাকে হোমোসেক্স বলে। ভাড়াটিয়া অশোক, আমি আর চাইনা এই ভাড়াটে এখানে থাক।"

নৃপেন: এএএএএএটা---, তোমার বাড়ি তোমার কথা বলতে চলবে?

রমা :"আমি তোমার সহধর্মিনী জীবনসঙ্গী। আমার ভালো খারাপ তোমার ভালো-খারাপ পরস্পর সম্পর্কিত। সুতরাং খারাপ কিছু হোক সেটা আমি চাইনা"

"জীবন একটাই। সে জীবন অনেক কষ্টের তৈরি করতে হয়। বিবাহিত জীবনে, নষ্ট করে দেবে কেউ সেটা আমি চাইবো না। তোমার এত আপত্তি কিসের? আর তুমি বলছো এটা তোমার বাড়ি মানে?"

তোমাকে দেখে আমার বাবা-মা আমাকে সঁপে দিয়েছে। তুমি আমার লাথি-ঝাটা করবে এই সম্পর্কের আমি আমি কিছুতেই বরদাশ্ত করবো না।

অদ্ভুত সমাজ ও দুর্যোগ আমার। ছেলেদের সঙ্গে ছেলেদের সম্পর্ক হয়ে গল্প শুনেছি ।কিন্তু বাস্তবে এমন ঘটবে আমি জানতাম না বিশেষ করে আমার জীবনে। গত পরশুদিন তুমি আমার সঙ্গে শুয়ে ছিলে। আমি ওয়াজ করেছি তুমি রাত্রে বেলা আমার বিছানা থেকে উঠে গেছো। একি অদ্ভুত সম্পর্ক তুমি তৈরী করেছ অশোকের সঙ্গে। আমি জানিনা । এ এক অদ্ভুত রোগ তুমি ঠিক হবে কিনা?

নৃপেন: "আমি কথা দিচ্ছি আমি ঠিক হয়ে যাবো, কাউকে বলো না!"

রমা: অশোকের সঙ্গে তোমার এত কি গল্প? তোমার কাজে যাও।

"আমার মা বিয়ের সময় তোমাকে দেখে দিয়েছে, তুমি একটা কাজ করো। একটা কাজের ছেলে। এখন দেখছি তোমার বাড়ি ঘর দিয়ে চলে।" কাজ ফালতু কথা।"

"কথা দিয়েছিলে, আমি ঠিক হয়ে যাবো কিন্তু তুমি কথা রাখনি।"

এঁটুলি পোকার মত তুমি অশোকের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছ। যেন স্বামী স্ত্রী।"

"এটা সামাজিক ব্যাধি না শারীরিক সমস্যা । আমাকে বলতে পারো?"

তোমার সঙ্গে আমার থাকা হবে না। আমি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। এই সমস্যাটাকে বলে হোমো সেক্স্ !

কুকুরের লেজ বাঁকা যতই সোজা করো সোজা হবে না।"

আমি ক্লাবে জানিয়েছি। অশোকের ঘরছাড়া কথা বলেছেন। কিন্তু তুমি তো ছাড়বে না। তাহলে তুমি আমায় ছেড়ে দাও।


আজ ষষ্ঠী, আমি বাপের বাড়ি যাবো।

একটি চিঠি লিখে দিয়ে গেলাম।

ভাগ্যহীন----

এ সমাজে হায় কি সম্পর্ক চায়!

নারী-পুরুষের এ কি খেলা খেলেছো এই দুনিয়ায়।

নিত্য পরিচয়, নারী-পুরুষের সম্পর্ক ভাঙ্গন ঘটাতে চায়।

হয় নাকি সম্পর্ক পুরুষে পুরুষে নারীতে-নারীতে।

জানলে অবাক হবে দুনিয়ায়।

রাসায়নিক দূত নামে তার পরিচয়।

হরমোনের যৌন খেলায়, নিত্য পরিচয়।

দোষ না বোকা কে , ভাগ্যের , কি হরমোনের? নাকি পুরুষের নাকি নারীর।

কোন অধিকারে করলে মরে বিয়ে। পুরুষই যদি চাও নারীকে কেন টানলে জীবনে?

দোষ ভাগ্যের পরিহাস। পরিচয়ের অন্তরে কি খেলা খেলেছো তুমি। বোকা হলো পিতা মাতা।

সাধারণ মোরা, এ ব্যাধি আমার জীবন করল পঙ্গু সঙ্গ হীনা।

যুগে যুগে ঘটেছে কতইনা হরমোনের খেলা।

কেন দোষারোপ তোমাকে। আমার ভাগ্যকে। রমা নামে কতই না মেয়ে। সমাজে এইভাবে সঙ্গহীনা মিশে আছে। খোঁজ করেছো তাদের জীবন কিভাবে কাটবে। আমার জীবন অনেক শখ ছিল। ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

অনেক কথা বলা বাকি রয়ে গেল। পরিবেশে সঙ্গী খোঁজার অপেক্ষায় রইলাম-------

                 

                 

             ইতি: তোমার নয় রমা।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy