প্রতিদান
প্রতিদান


গরমের দিন তার উপর বাসে প্রচণ্ড ভিড়। ব্রেক কষতেই এক আধুনিকা তরুণী এক বৃদ্ধের গালে সপাটে চড় কষে দিল। বৃদ্ধ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিড় বাসে তরুণীর উগ্র মূর্তি আর চিৎকার। "লজ্জা লাগে না এই বয়সে এক মেয়ের বয়সী মেয়ের গায়ে পড়ছেন। ছোটোলোকের দল"। আরো অনেক গালগালি দিতে লাগলো।
বেচারা বয়স্ক লোকটি একটাও উত্তর দিল না। নিচে পড়ে ভেঙ্গে যাওয়া চশমাটা কুড়িয়ে পকেটে রাখলো। বাস ভর্তি এত লোক কেউ কিছু বললো না। লোকটি পরের স্টপেজে নেমে পড়লো।
একদিন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সেই আধুনিকা তরুণী তার হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্য হীন দিদিকে খুঁজতে খুঁজতে এক সেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে পৌঁছালো। সেখানে তার দিদিকে খুঁজেও পেল। পরম স্নেহে আর ৫ টা মেয়ের মতো গাছে জল দিচ্ছে। পুলিশ সেই সেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধানকে পা ছুঁয়ে প্রণাম করে সেই তরুণীর পরিচয় দিল উদ্ধার হওয়া মানসিক ভারসাম্য হীন মেয়েটির বোন বলে। তরুণীর চিনতে অসুবিধা হলো না এই সেই বৃদ্ধ যাকে সে চড় মেরেছিলো। তরুণীর মাথা হেঁট হয়ে গেল। বৃদ্ধ তরুণীকে চিনতে পেরেও সে প্রসঙ্গে একটিও কথা বললো না। বরং নিজের কন্যার মতো ব্যবহার করলো। তরুণী নিজেকে আরও লজ্জিত অপমানিত বোধ করলো যখন জানলো এই বৃদ্ধ ১০০ টিরও বেশি এরকম হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে উদ্ধার করেছেন। উনি একজন অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক ও সমাজসেবী। এবং খুব স্বনামধন্য এক কবি।।