প্রতিবেদন
প্রতিবেদন
গোটা দেশ সবুজে-সবুজ। ফুলে-ফুলে ছেয়ে আছে অলিগলি। প্রজাপতির পাখনা থেকে রং ঝরে ঝরে মিশে যাচ্ছে মানুষের মনে। কচি কচি বাচ্চারা কাঁটা-ঝোপঝাড়ে হুঁচোট খেয়ে পড়েও হাসে। যেন মায়ের কোল। সাদা কবুতরদের ডানা এত ভারী হয়ে উঠেছে, আর কোনও দিনই হয়তো উড়ে যেতে পারবে না এখান থেকে।
প্রতিবেদনটা পড়েই শঙ্খশুভ্র ঠিক করে ফেলল, এই স্বপ্নময় প্রতিবেশী দেশে যাবার। না, আকাশ পথে নয়। সে সব কিছু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখতে চায়। পারলে, পায়ে হেঁটেই ঘুরবে গোট দেশ। সেই মতো রওনা হয়ে গেল সে। ওদের সীমানায় পা রাখতেই কে যেন তাকে একটা চশমা পরিয়ে দিল। ও বুঝতে পারল, কতগুলো সতর্ক দৃষ্টি তাকে আগলে রেখেছে। যেখানে যাচ্ছে, মোলায়েম কার্পেট পাতা। মাথার উপরে ছাতা। রাত কাটাতে হোটেলে ঢুকলেই দরজার কাছে লাইন দিয়ে হাজির সার সার ডানা টাকা পরী।সত্যিই কি দেশটা এমন! সব ক'টা চোখকে ফাঁকি দিয়ে ঝট করে ও ঢুকে পড়ল সামনের একটা ফটকে। চশমাটা খুলল। মনে হল, সরকারি অফিস। চেয়ারে-চেয়ারে ওরা কারা! মুখগুলো অন্ধকারে ঢাকা! চোখ উপড়ে ফেলা কোটর। ঠোঁট জুড়ে সূক্ষ্ম সেলাই। পাঁজর খুঁড়ে চাই চাই পাথর ভরা। কপালের পাশে ঠেকানো আগ্নেয়াস্ত্রের নল। মাথা গুঁজে সোনার কলমে ওরা লিখে যাচ্ছে কী সব। উঁকি দিয়ে শঙ্খশুভ্র দেখল, সেই প্রশস্তি প্রতিবেদন, যেটা পড়ে ও এ দেশে এসেছে। সেটাকেই আরও আরও আরও বর্ণময়, চমকপ্রদ, নিখুঁত করে তুলছে ওরা।