পাপীষ্ঠা
পাপীষ্ঠা


ভোরবেলায় সুধাংশুবাবুর বাড়ির সামনে পুলিশে ভর্তি। সুধাংশু বাবুকে খুন করা হয়েছে, খুনী আর কেউ নয় তার স্ত্রী মীরা।
পাড়ায় সুধাংশুবাবুকে সকলেই খুব ভালোবাসেন। সুধাংশুবাবু যেমন নম্র ভদ্র মানুষ, সেরকম মিশুকে। পাড়ায় সকলের বিপদে, দরকারে সবসময় তিনি পাশে থাকেন। একটি অনাথ আশ্রম ছিল তার। তারা নিঃসন্তান দম্পতি। কিন্তু তার স্ত্রী মীরা বড়ো মুখরা। ঘর থেকে প্রায় তাদের ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যেত।
ফোন করে মীরাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি হত্যা করেছেন। সব চ্যানেলে একটাই খবর
---নৃশংস ভাবে স্বামীকে হত্যা করেছেন তার স্ত্রী।
সকলের সামনে দিয়ে তাকে, হাতকড়া পরিয়ে পুলিশের ভ্যানে তোলে পুলিশ। ভ্যানে ওঠার সময় ভেসে আসে কটুক্তিগুলো;
---পাপীষ্ঠা মেয়েমানুষ !
---খুনে বৌ!
---এই বৌকে বিষ খাওয়াতে হয়।
---যা ঝগড়ুটে, এটাই স্বাভাবিক! পাপী!
চোখটা ঝাপসা হয়ে আসে মীরার। গতকাল মধ্যরাতেই পার্টি থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফিরেছিলেন। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখেন সোফায় একটি কিশোরী মেয়ে, তার মুখ হাত বাধা। হতচকিত হয়ে গেছিলেন , তারপর অনাথ আশ্রমের এই মেয়েটি তার চেনা। ওর হাতগুলো খুলে দিতেই সে মীরাকে জড়িয়ে ধরে, বেডরুমের দিকে ইঙ্গিত করে। বেডরুমের দিকে যেতেই তিনি স্তম্ভিত হয়ে যান। বিছানায় অনাথ আশ্রমের এক শিশুকন্যার সংজ্ঞাহীন দেহ আর সুধাংশুবাবুকে দেখে ঘেন্নায় গা গুলিয়ে উঠেছিল। ততক্ষণে ঐ কিশোরীটি ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সুধাংশুবাবুর উপর, তীব্র আক্রোশে ছুরি দিয়ে বারবার আঘাত করে সুধাংশুবাবুকে। তারপরেই কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোরী। কিশোরী আর শিশুটিকে মীরা বেশকিছু টাকা দিয়ে বলেন
---তোরা পালিয়ে যা এখান থেকে।
একজন রেপিস্টের জন্য একটি মেয়ের জীবন বরবাদ হতে তিনি কিছুতেই দেবেন না।