নীলকন্ঠ
নীলকন্ঠ
হলাহল পূর্ণ ধরিত্রীর কলস,তোমাকে নিবেদন করি!
জ্ঞান সমুদ্র মন্থনে ,উঠে আসা বিজ্ঞানের বিষ!
পরাস্ত হোক অসুরি শক্তি,দৈব শক্তির আগে।
পুনরজন্ম হোক সত্যযুগের।
দু'পেয়ে ক্লীবের ন্যায় ,উদর সমস্ত জীবন বড়ো দুর্বিসহ।
নখ উল্টে পড়ে থাকা,প্রগতি আজ নিশ্চল।
সময়ের চাকার নিচে পিষ্ট যতো লোভ,ক্ষোভ ও দূষণ।
তুমি মহাকাল,তোমার অমোঘ কালের ঘূর্ণির আবর্তে আজ বিশ্বপ্রাণ!
বিজ্ঞানের প্রসাদ ভার,অদৃশ্য জীবাণু করেছে আজ মানবকে অস্পৃশ্য!
যান্ত্রিক জীবনে লেগেছে অবসর।
ইঁদুর দৌড়ে হেরে গেছে আজ মানবজাতি।
থেমে থাকার অসুখে আজ কেউ খোঁজে সুখ;
কেউ বা অতন্দ্র প্রহরীর মতন ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচাতে প্রাণ।
তুমি নেই মন্দির,মসজিদ, গীর্জা বা গুরুদুয়ারায়।
আছো-ছিলে-থাকবে আমার গোপন কুটিরে!
লজ্জায় মুখ লুকানো আবরণে ঘিরে থাকা আমার মুখ,
পাছে মৃত্যু আমাকে চিনে নেয়।
কে যেন হাতছানি দেয় ঝরখার বাইরে;
অন্তঃপুরের আড়াল থেকে চোখ রয় সারি সারি।
বিরল জনপদে বন্যদের স্বাধীন বিচরণ।
জঙ্গল আজ গন্ডির বাইরে।
বহুকাল পরে ডলফিনের জলকেলি,
মানব সভ্যতাকে দেখায় বুড়ো আঙুল।
আকাশ,বাতাস,নদী-আজ মুক্ত...
বন্দি থাকা আমি,আমার নিৰ্দিষ্ট আশ্রয়ে।
তোমার কৃপায় বেঁচে থাকা আমি!
শ্বাসরোধ যে কতো যাতনার শাস্তি!
তুমি প্রকৃতি,তুমি নারী,
তুমি রুদ্রা, তুমি কালী!
মুন্ডমালায় সুসজ্জিতা,
রক্তপিপাসু অদৃশ্য জীবাণু!
খড়্গ রুপী তোমার ঘাতে, কুপিত প্রাণ আমি!
ভ্রূণে শেষ হয়ে যাওয়া লিঙ্গ আমি।
ফিরে পেতে চাই নিঃশ্বাসের অধিকার!
ক্ষুদার জ্বালায় মৃত শৈশব,
আমার প্রাচুর্যকে প্রশ্ন করে...
"আমি ঈশ্বর কে সব বলে দেব"...সিরিয়ার ক্ষতবিক্ষত, শৈশবের শেষ ক্রন্দন!
অনুশোচনা, সন্তাপ আমাকে দগ্ধ করুক;
নির্মল করো মোরে!
হলাহল মোর অর্পণ করি...
তুমি শিব,তুমি মহাকাল!
উৎসর্গ করি,আমার দম্ভ, আমার ষড় রিপু!
মহাকাল,তুমি নীলকন্ঠ হও!