মন্ত্র
মন্ত্র
থালায় একটু চাল আর দুটো আলু দিয়ে বউ বলল, যাও, দিয়ে এসো।
দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন কালো আলখাল্লা পরা এক ফকির বাবা। বিনায়ক তাঁর ঝোলায় উপুর করে সেটা ঢেলে দিতেই, ফকির বাবা তাঁর দু'হাত মুঠো করে ওর সামনে মেলে ধরে বললেন, বেটা, আমার দু'হাতের মুঠোয় দুটো মন্ত্র আছে। তুই যেটা ইচ্ছে দিতে পারিস।
মন্ত্র! ভুরু কোঁচকালো বিনায়ক।
ফকির বাবা বললেন, আমার ডান হাতের মন্ত্রটা উচ্চারণ করলেই, তোর শরীরে সময় আর কোনও দিনই কোনও আঁচড় বসাতে পারবে না। দেশের সেরা সুন্দরীরা তোর বশীভূত হয়ে থাকবে। যতই খরচ করিস না কেন, তোর ব্যাংক ব্যালান্স দিনকে দিন বাড়তেই থাকবে।
--- আর বাঁ হাতেরটা? জানতে চাইলে বিনায়ক।
--- বাঁ হাতের মন্ত্রটা উচ্চারণ করলেই, যখন ইচ্ছে, যতক্ষণ ইচ্ছে, তুই অদৃশ্য হ
য়ে থাকতে পারবি। ইচ্ছে হলে, যা ছুঁবি, সেটাকেও অদৃশ্য করে দিতে পারবি। আর মন চাইলে, যে কোনও অদৃশ্যকে সবার সামনে দৃশ্যমান করে দিতে পারবি। নে বেটা, নে। কোনটা নিবি?
--- কোনটা! কোনটা! কোনটা! বিনায়ক একবার ডান মুঠোর দিকে তাকায়, একবার বাঁ মুঠোর দিকে। আচ্ছা, এক মিনিট, বলেই পকেট থেকে এক টাকার একটা কয়েন বার করে করল সে।
যখন দুটো অপশন থাকে এবং দুটোর একটাকেও ছাড়তে মন চায় না, দোটানায় পড়তে হয়, তখন একমাত্র পথ হল, টস করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
টস করার জন্য কয়েনটা উপর দিকে ছুড়ে দিল বিনায়ক। কিন্তু ধরতে পারল না। উপর থেকে পড়েই গড়াতে গড়াতে হাইড্রেনের ফাঁক গলে টুক করে নীচে পড়ে গেল।
--- নে বেটা, নে, কোনটা নিবি নে... ফকির বাবা ফের বললেন।
বিনায়ক তাঁর দিকে তাকিয়ে শুধু বলল, আবার?