মহেন্দ্র
মহেন্দ্র
সেই গোলাপী ভোরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার ছেলেবেলা। সেই নদী সেই বকুলতলার ঘাট রাধারাণীর কচুরি আর মহেন্দ্রলাল যাদব। আমি বলতাম মহেন্দ্র কাকু। মহেন্দ্র কাকুর ছিল একটা রিক্সা। তাতে গানও বাজতো, রহে না রহে হাম। আমার সঙ্গে কখনো কখনো বুবুনও যেতো। বুবুন মেয়েদের স্কুলে যেতো আর আমি ছেলেদের। আমরা থাকতাম দুশো বছরের একটা পুরনো বাড়িতে। আমাদের পাশেই কাকু থাকতো অন্ন কাকিমাকে নিয়ে। সেই বাড়ি থেকে সবুজ বয়াও দেখা যেতো নদীতে ভাসছে। আর দেখা যেতো শুশুক। ঝুপ করে রাত নামলে আমি ওদের লাইট নিভিয়ে দিয়ে আসতাম দুষ্টুমি করে।
অনেক বছর পর বকুলতলার ঘাটে গেছি। মহেন্দ্র কাকু আর তার রিক্সার সঙ্গেও দেখা হয়ে গেল। সেই একই গান বাজছে, রহে না রহে হাম। বলল, চিনতে পারছো আমায় শীর্ষ? হেসে বললাম, হ্যা। তুমি লাইট নিভিয়ে দিতে মনে আছে? আমি বললাম, তুমি ভয় পেতে কেনো? কাকু বলল অন্ধকার হলেই দাউ দাউ আগুন দেখতে পেতাম আর শুনতাম আর্তনাদ নারী কন্ঠের। আমি অবাক হয়ে বললাম কেনো? মহেন্দ্রকাকু চোখে রোদ চশমা এঁটে নিয়ে বলল, বলা যাবেনা। তারপর দূরে মিলিয়ে গেল।