মৎস্যকন্যা
মৎস্যকন্যা


চোখাচোখি হতেই মৎস্যকন্যাটি জলের তলায় ডুব দিল। কোথায় গেল সে! দেখতে গিয়ে খাট থেকে পড়ে গেল বাবাই। দাদু বললেন, আমি দিঘিতে যাচ্ছি, যাবি?
ও বলল, দাঁড়াও, দাঁতটা মেজে নিই। দাদুর সঙ্গে যেতে যেতে ও দেখতে লাগল, তাদের কলকাতা থেকে এই করিমপুর কত আলাদা! চারদিকে শুধু গাছ আর গাছ। কোথাও কোথাও পুকুর ভরা কচুরিপানার ফুল। যেন ঝাঁক ঝাঁক প্রজাপতি ডানা মেলে বসে আছে। আকাশের বুকে খেলো বোড়াচ্ছে তুলো তুলো কত মেঘ। দিঘির সামনে যেতেই ওর মনে পড়ে গেল মৎস্যকন্যার কথা। একটু আগেই স্বপ্নের মধ্যে তো এ রকমই একটা দিঘিতে সে মৎস্যকন্যাকে দেখেছিল। তবে কি সে এখানেই থাকে! দাদুকে ও জিজ্ঞেস করল, দাদু, এখানে কী থাকে গো? দাদু বললেন, ঝিনুক। ঝিনুকে মুক্তো।
দাদু কি ঠিক জানেন! ও জিজ্ঞেস করল আরও অনেককেই। হাঁড়ি কাঁখে এক বুড়ি বললেন, এখানে গুগলি আছে। শামুক আছে। কত রকমের পোকামাকড়, কাঁকড়া... শাকের আঁটি মাথায় হাঁটতে হাঁটতে এক বউ বলে গেলেন, এখানে শাপলা, কলমি, ছেঁচি, হেলেঞ্চা, জলমালঞ্চ--- কত কী আছে, তার ঠিক আছে! ছিপ নিয়ে ফিরছিলেন একটা লোক। তিনি বললেন, জলে আবার কী থাকবে? মাছ। যে মাছ তোমরা খাও, সে-ই মাছ।
বাবাই অবাক। এক জায়গায় এত কিছু! আর মৎস্যকন্যা! তার কথা তো কেউ বলছে না! তা হলে কি সে এখানে থাকে না! যাই, নিজে গিয়ে একবার দেখি তো... দিঘির একদম কিনারে গিয়ে সে দাঁড়াল। তার পর একটু ঝুঁকতেই চমকে উঠল সে। আয়নার মতো স্থির স্বচ্ছ জলে তিরতির করে কাঁপছে কেবল তার মুখ আর গোটা জলাশয় জুড়ে এক উজ্জ্বল নীলাভ আকাশ।