STORYMIRROR

Rahul

Comedy Romance Classics

4  

Rahul

Comedy Romance Classics

লেখাটা কি ঠিক হল

লেখাটা কি ঠিক হল

3 mins
20

একটু ভয়ে ভয়ে আছি। কারণ আজ যেটা লিখতে চলেছি, নাও লিখতে পারি। ভাবনা চলছে, যদি দেখি খুব একটা হইহই হবে না তবে লেখা যেতেই পারে। তাও একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে। লেখাটা বোধহয় ঠিক হবে না। তাও লিখব, কারণ লেখার মতো এখন আমার কাছে কিছুই নেই। আর এই লেখাটার মধ্যে মশলা আছে, প্রেম আছে। তাই পাঠকগণ ও মন দিয়ে পড়বে। কাঁঠালের আঠা কিনা ছাড়তেই চায় না। কত সমাজ, থ্রিলার নিয়ে লিখলাম দেখছি পড়েই না কেউ। তাই বাধ্য হয়ে লিখতেই হচ্ছে আমাকে লেখাটা। খুব যে আহামরি কান্ড তাও না। কিন্তু একজন বিখ্যাত ব্যক্তির নাম জড়িয়ে আছে। এই বিখ্যাত ব্যক্তিদের একটি জাদু আছে। এরা একটা ভিনভিনে মাছিকেও ছুয়ে দিলে সেই মাছি বিখ্যাত হয়ে যায়। আরে মশাই দেখতে পান না খবরে - বিড়াল ছানা ঢুকে পড়েছে তমুক অভিনেতার বাড়ি। কিংবা মন্ত্রীমশাই কলে নিলেন এক অবলা কু কু রছানা কে। সেই বার ভোটের সময় মন্ত্রীমশাই আমাদের গ্রামের টুলুর ছাগলের গায়ে হাত বুলিয়ে দিতেই সাধারণ ছাগল হয়ে উঠল রাজনীতি ছাগল। টুলু করে এক পার্টি আর টুলুর ছাগলে হাত বুলিয়েছে অন্য পার্টির মন্ত্রী। বেশ হয়ে গেল ! টুলুর ছাগল কে নিয়ে লোফালোফি শুরু। টুলুর দল বলে ' এ হচ্ছে বিরোধী পার্টির চক্রান্ত। ওরা ভোলাভালা পাঠা সরি টুলুর পাঠা কে হাতবুলিয়ে নিজেদের দলে টানতে চায়ছে। যা কখনও হবে না।' তবে চিন্তা নেই আমার গল্পে কোন রাজনীতি নেই। শুধু প্রেম আছে আর একটু অভিমান। আসল কথায় আসি। গত পরশু দিন তিতাস এসে বলছে। তিতাস কে? লজ্জা দিচ্ছেন তো! তিতাস আমার বোন না। এইবার বুঝে নেন। যতই হোক বাঙালি তো প্রেমিকা কে প্রেমিকা বলতে লজ্জা লাগে বয়কি একটু। হ্যাঁ যা বলছিলাম, তিতাস এসেই আমাকে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে। আমি মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললাম ' আহা কাঁদে না কাঁদে না। চকলেট কিনে দেব কেমন। কে মেরেছে কে ধরেছে? মা বোকেছে বুঝি?' ' ফাজলামি হচ্ছে? আমি কাঁদছি আর তুমি ফাজলামি করছ?' তিতাস। ' ওই দেখ ফাজলামি কোথায় করলাম? কি হয়েছে বলবা তো। নয়লে বুঝব কেমন করে।' ' তোমাকে আর বুঝতে হবে না। আর তোমাকে বলে লাভ ই কি? থরাই পারবে তুমি তাই যে' তিতাস। ' বল তো আগে তারপর দেখা যাবে।' ' শরৎচন্দ্র আমাকে কাঁদিয়েছে' তিতাস। ' দেখ তিতাস মানছি তুমি ফাজলামি কর তাতে কোন আপত্তি নেই আমার। তা বলে শরৎচন্দ্র কে নিয়ে ফাজলামি ! সমাজ কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না।' আমি কোন ফাজলামি করছি না। সত্যিই শরৎচন্দ্র কাঁদিয়েছে আমার ' তিতাস। ' মরা মানুষটাকে তুমি এমন করে দোষারোপ করতে পার না তিতাস।' ' জানতাম আমি তুমি আমাকে বিশ্বাস করবে না। কোনদিন করো ও না। আর কখনও কথা বলবে না আমার সাথে।' আসলে ব্যাপারটা হয়েছে কি তিতাস শরৎচন্দ্রের ' চরিত্রহীন ' উপন্যাস টা পড়েছে। আমি ই বলেছিলাম পড়তে। আমি তো তখন আর ভাবিনি যে ' চরিত্রহীন ' আমার কাল হবে। যখন থেকে পড়া শুরু করেছে তখন থেকে তিতাসের চোখের জল টপটপ করে বয়ে গেছে অনেক। এর জন্য চোখ ড্রাই ও হয়ে গেছে। ডাক্তার দেখিয়ে হাজার টাকা ঘুচেও গেছে। কিন্তু চোখের জল শুকিয়ে গেলেও তিতাস এর শরৎচন্দ্র পড়তে মন চাইছে। আসলে শরৎচন্দ্র কে ভালো লেগে গেছে। সরি সরি শরৎচন্দ্রের লেখা কে। এদিকে পড়লে চোখ থেকে জল পড়বেই আবার চোখের সামনে বই থাকলে থাকা ও যাচ্ছে না। পড়তে মন চায়ছে বারবার। তিতাস এর দাবি হল আমার কাছে আমাকে শরৎচন্দ্রের রচনাবলি নিষিদ্ধ করতে হবে। নয়লে সব বই এর দোকান থেকে শরৎচন্দ্রের যত বই আছে চুরি করে লুকিয়ে দিতে হবে। এ কি সম্ভব আপনারাই বলুন। তিতাস হুমকি ও দিয়েছে ' তোমার কাছে কে দামি শরৎচন্দ্র না আমি। আমাকে রাখতে চাইলে শরৎচন্দ্রকে হাটতে হবে। নয়লে আমাকে ভুলে যেও।' ভেবেছিলাম লিখব না ব্যাপার টা। কিন্তু যখন প্রেম টলমল। প্রেমিকা হাতছাড়া হতে চলেছে তখন সেই ভয়ে আরও বেশি করে লিখতে হল। মাত্র আর চারদিন সময় আছে আমার হাতে। জানাবেন কি করব আমি। তবে এখনো মনে হচ্ছে লেখাটা কি ঠিক হল!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy