STORYMIRROR

Sayanz world

Abstract Romance Others

3  

Sayanz world

Abstract Romance Others

লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট

লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট

9 mins
5

© সা য় ন


"আপনি নিশ্চয় জানেন আমি কেন এসেছি আপনার সাথে এখানে দেখা করতে?" ছেলেটা জিজ্ঞেস করল।

“হ্যাঁ জানি। আমাদের দুজনের পরিবারই চাই আমাদের বিয়েটা হোক। সেইজন্যই আমরা যাতে একটু কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করি তাই আমাদের একসাথে এই ক্যাফেতে পাঠানো হয়েছে।” ঘাড় নাড়লো সুস্মিলি।

“ও।” ছেলেটা আর কিছু না বলে মেন্যুকার্ডটা তুলে নিল।

ক্যাফেতে আজ লোকজন বেশি নেই। কোনের দিকে কয়েকজন কাপল বসে রয়েছে। ওদের চারপাশটা ফাঁকাই।

সুস্মিলি জিজ্ঞেস করল, “আপনি কী চান?”

ছেলেটা একমনে মেন্যুকার্ড দেখছিল। সুস্মিলির কথা শুনে বলল, “কিসের কথা বলছেন?”

“এই যে বিয়ের ব্যাপারটা। আপনি বিদেশফেরৎ ডাক্তার। আর যথেষ্ট হ্যান্ডসমও। আপনি নিশ্চয় বাড়ির লোকেদের কথা শুনেই আমার সাথে এসেছেন দেখা করতে? আপনার নিশ্চয় আসার ইচ্ছে ছিল না?”

ছেলেটা হাসলো। বড়ো স্মিত হাসি ছেলেটার। ছেলেটা বলল, “মিথ্যে বলব না আপনার ছবি দেখার পর থেকেই আপনাকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছে ছিল। মা-বাবার কথাতেই আমি আজ এসেছি ঠিকই কিন্তু আমারও ইচ্ছে ছিল একশো ভাগ। সত্যি বলছি আমার আপনাকে পছন্দ।”

সুস্মিলি কী বলবে বুঝতে পারলো না। এরকম ছেলে ও আগে কখনো দেখেই নি। শিক্ষিত, নম্রভদ্র, সুদর্শন, মার্জিত আরও কত বিশেষণ যোগ করা যায় ছেলেটার নামের সাথে। সুস্মিলির যেটা ভালো লাগলো যে ছেলেটা আজকালকার ছেলেগুলোর মতো ওভারস্মার্ট নয়।

ওকে চুপ করে থাকতে দেখে ছেলেটা বলল, “চিন্তা নেই। আমার আপনাকে পছন্দ মানে এটা নয় যে আমি বাড়িতে যেয়ে বলে দেব বিয়ের তোড়জোড় শুরু করে দিতে। আমার কাছে আপনার মতটাই বেশি ইম্পরট্যান্ট। আপনি হ্যাঁ বললে কথা এগোবে আর না বললে এগোবে না। তবে প্লিজ আপনাকে একটা রিকোয়েস্ট করছি আপনার যাই ডিসিশন হোক না কেন আজ দিনের শেষে জানাবেন আমায়। এখন না।”

সুস্মিলি আবারও মুগ্ধ হল ছেলেটার কথায়। ছেলেটা বিদেশফেরৎ ডাক্তার। বহুবছর বাদে দেশে ফিরছে। এখন যদি ও চাই ওর জন্য মেয়ের অভাব হবে না। কত ভালো ভালো সম্বন্ধ নিশ্চয় এর মধ্যেই এসে গেছে ওর বাড়িতে। সবাইই নিশ্চয় একবারেই বেছে নিয়েছে ওকে। আর শুধু বিদেশফেরৎ ডাক্তার বলেই নয় কিন্তু ছেলেটার পার্সোনালিটিই এমন যে যেকোনো মানুষ ভালোবেসে ফেলবে ওকে। বেছে নিতে চাইবে নিজের জীবনেসঙ্গী হিসেবে।

“আচ্ছা, আপনি তো শিকাগোতে ছিলেন ওখানের কোনো বিদেশিনীকে পছন্দ হয়নি আপনার?” সুস্মিলি হেসে জিজ্ঞেস করল।

“এই প্রশ্নটা দেশে ফিরে আসা থেকেই সবাই আমাকে করছে জানেন।” ছেলেটা বলল, “বিদেশে কাউকে পছন্দ হয়নি আমার। বলতে গেলে কাউকে পছন্দ করার ধৃষ্টতাই করিনি আমি। কারণ আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর আমাদের সবার জন্যই কাউকে না কাউকে ঠিক বানিয়েছেন। আমরা কাউকে পছন্দ করার কেউ নই। সেই মানুষটা যখন আমাদের সামনে আসবে তখন আমরা নিজের থেকেই বুঝে যাবো এটাই সেই মানুষটা যার জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম।”

“তারমানে আপনি এখনো পাননি সেই মানুষটাকে এখনো পর্যন্ত?”

“আজ্ঞে না।” ছেলেটা মাথা নাড়ায়। তারপর বলে, “এসব কথা বাদ দিন। সবাই বলে আমি ভীষণ বোরিং। ভীষণ বাজে বকি। আপনি কী খাবেন বলুন?”

“শুধু কফিই বলুন আপনি।” সুস্মিলি বলে।

“এজ ইউ উইশ।” ছেলেটা ওয়েটারকে ডেকে অর্ডার দিয়ে দেয়। দুটো ক্যাপুচিনো।

তারপর আচমকায় একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসে সুস্মিলিকে, “আপনার কোনো বয়ফ্রেইন্ড নেই?”

প্রশ্নটা শুনে সুস্মিলি স্বাভাবিক ভাবেই বলে, “না। তবে একজন ছিল। এখন নেই।”

“মানে হৃদয়ভঙ্গর ব্যাপার তো? আপনারা যেটাকে ইংলিশ নাম দিয়েছেন ব্রেকআপ।”

“হ্যাঁ। সেরকমই বলতে পারেন। আপনার কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না কখনো?”

“না কোনদিনই হয়নি। হয়ত হতে পারতো। কিন্তু ওই যে আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর রিলেসন তৈরী করেন আমরা নই। তাই তো আমি এগোয়নি কোনো রিলেসনে।”

“আমার বিশ্বাস হয় না। আপনি কত গুডলুকিং একটা ছেলে। আপনার গার্ল হয়নি!”

“এরকম বলবেন না।” ছেলেটা বলে, “আপনি কম সুন্দরী নাকি। এমন করে বলছেন যেন সারা পৃথিবীতে আমিই সবচেয়ে হ্যান্ডসম ছেলেটা আপনার সাথে বসে আছি।”

“সে আপনি নাই মানুন। আপনি সত্যিই খুব হ্যান্ডসম।” সুস্মিলি কথাটা বলল একদম বাচ্চাদের মতো করে।

ওয়েটার কাপদুটো নামিয়ে দিয়ে গেল টেবিলে। সাথে দিয়ে গেল ছোট্টদুটো স্পুন আর টিসু পেপার।

ছেলেটা মৃদু হেসে থ্যাংক ইউ বলল ওয়েটারকে। এটাও একটা বিরল দৃশ্য। আজকাল কেউ আর ওয়েটারদের এসব থ্যাংক ইউ-টিউ বলে না। তারা হয়ত ভাবে এটাই তো ওদের কাজ তার জন্য আবার ধন্যবাদ জানানোর কী আছে। সবকিছুর পরেও যে মানবিকতা বলেউ একটা শব্দ রয়েছে সেটা মানুষ ভুলে যায় মাঝেমাঝে। সুস্মিলির তাই এই ধরণের মানুষদের ভালো লাগে। সুস্মিলি বলল, “বাড়ি থেকে আপনার নামে অনেক ভালো ভালো কথা বলছিল জানেন। আমার মনে হচ্ছিলো আপনি মোটেও অত ভালো না। কিন্তু এখন এসে দেখেছি আমিই ভুল ভাবছিলাম।”

“তাই বুঝি? আপনি কী ভাবছিলেন? আমি ঠিক কিরকম হব?” সুস্মিলির দিকে তাকালো ছেলেটা।

সুস্মিলি কফির ওপরে আঁকা লাভসাইনটা ঘেঁটে দিল ছোট্ট স্পুন দিয়ে। তারপর বলল, “ভেবেছিলাম আপনি অহংকারি হবেন, ভীষণ রাফ এন্ড টাফ হবেন। বদমেজাজি হবেন।”

ছেলেটা একটা চুমুক দিল কাপে। তারপর বলল, “আর এসে কী দেখলেন?”

সুস্মিলিও একটা ছোট্ট চুমুক দিল এবার, “এসে দেখলাম আপনি নম্র স্বভাবের। ভীষণ পোলাইট। কথাবার্তাও খুব ভালো বলেন।”

“তবে আমি কিন্তু আপনার ছবি দেখেয় বুঝে নিয়েছিলাম আপনি কেমন হবেন।”

“তাই বুঝি?” সুস্মিলি ভ্রু কোঁচকাল।

“হ্যাঁ। আমি কিন্তু আপনাকে দেখার আগে থেকেই জানতাম আপনি ভীষণ মিশুকে স্বভাবের। আপনি এখনকার আর পাঁচটা মেয়েদের মতো নন। আপনার আলাদা টার্মস এন্ড কন্ডিশনস রয়েছে। সবাই সেটা বুঝতে পারে না। তাই আপনাকে ভুল বোঝে।”

সুস্মিলি অবাক হল আবার। এই ছেলেটা জানলো কী করে এতকিছু। ওকে যে সবাই কারণে অকারণে ভুল বোঝে, ওর নিজস্ব চাওয়াপাওয়াগুলোর দাম কেউ দেয় না এসব তো ছেলেটার জানার কথা না।

“অবাক হবেন না আপনি।” ছেলেটা বলল, “আমি ডাক্তার তো। সাইকোলজি কিছুটা পড়া আছে আমার। সেখান থেকেইএসব আন্দাজ করতে পেরেছি।”

সুস্মিলি আর কিছু বলল না। ওরা দুজনেই কফি শেষ করে বিল মিটিয়ে বেরিয়ে এল ক্যাফের বাইরে।

“তাহলে এবার?” ছেলেটা জিজ্ঞেস করল, “আপনাকে ড্রপ করে দিচ্ছি?”

সুস্মিলি না করল না। ও বাড়ি থেকে বেরিয়েছে বিকেল চারটে নাগাদ। এখন পাঁচটা দশ বাজে। হিসেবমত ছেলেটাকে প্রায় একঘন্টা হল চিনেছে সুস্মিলি। ওর মনে হচ্ছিলো ছেলেটা হয়ত আরেকটু সময় কাটাবে ওর সাথে। এই ছেলেটার সঙ্গ খারাপ লাগছে না ওর। কিন্তু ওর বোধহয় কাজ রয়েছে কোনো। তাই তাড়াতাড়ি করছে।

সুস্মিলিকে দাঁড় করিয়ে পার্কিং লট থেকে গাড়িটা নিয়ে এল ছেলেটা।

তারপর সুস্মিলির দিকের দরজাটা খুলে বলল, “উঠে পড়ুন।”

গাড়িতে উঠে বসে দরজাটা লক করে দিল সুস্মিলি। ও জিজ্ঞেস করল, “আপনার কী তাড়া আছে?”

অবাক হল ছেলেটা। ভ্রু কুঁচকে বলল, “কেন বলুন তো?”

“না। এই যে আপনি কফি খাওয়ার পরেই চলে যেতে চাইছেন?”

“ও। আসলে আমি আপনার বেশি সময় নিতে চাই না। আপনি হয়ত বিরক্তই হচ্ছিলেন আমার কথা শুনে। তাই ভাবলাম আপনাকে রেহাই দেওয়া যেতে পারে এবার।”

“আপনি আমার ডিসিশন জানতে চাইলেন না তো?”

“ওই যে বললাম আজ দিনের শেষে জানাবেন। আমার নম্বর রয়েছে tতো আপনার কাছে? ওতে জাস্ট একটা মেসেজ করে দিলেই হবে।”

“আচ্ছা যদি ধরুন আমার উত্তর না হয় তাহলে কী করবেন?”

“আগেই বলেছি। আমি আপনার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করব না। আপনি না করলে সত্যিই আমার কষ্ট হবে। কারণ বাবামা আমায় এর আগেও বহু মেয়ের ছবি দেখিয়ে দেখিয়ে রীতিমতো বিরক্ত করে তুলেছিল। আমার তাদের কাউকেই ভালো লাগেনি। ইনফ্যাক্ট আমি বিয়ে করব সেই ইচ্ছেও ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনাকে পছন্দ হয়েছে শুনেই তো বাবামা সেইজন্য এতো জোর করল আমায়।”

সুস্মিলি চুপ করে শুনল কথাগুলো। ওর বিয়ে করার ইচ্ছে বা অনিচ্ছে কোনোটাই নেই। বিয়ে যখন সবাইকে করতেই হয় তখন ওকেউ করতে হবে। বাবা মায়ের বয়স হয়েছে ওদের কথা শুনে এবার বিয়েটা করে ফেলতেই হবে ওকে।

এই ছেলেটা পাত্র হিসেবে সত্যিই দুর্দান্ত। সুস্মিলি হ্যাঁ বলবে না না বলবে সেই নিয়ে ভারী দ্বিধায় পড়ে গেল। যদিও এই ছেলেটাকে না বলার মতো ইচ্ছে বা কারণ কোনোটাই ওর নেই।

গাড়িটা থেমে গেল আচমকা। সুস্মিলির যেন হুঁশ ফিরল।

ও চেয়ে দেখল ছেলেটা হাসছে, “আপনার স্টপেজ এসে গেছে ম্যাডাম।”

সুস্মিলি নামল গাড়ি থেকে। বলল, “আপনি আসুন না ভেতরে? বাবা খুশি হবে।”

“না। আজ হবে না। আমি পরে একদিন আসবো।” ছেলেটা, বাই বলে চলে গেল গাড়ি নিয়ে। সুস্মিলির একটা কথা মনে পড়লো হঠাৎ! আরে ও তো নাম জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গিয়েছে ছেলেটার!

২.

এখন রাত বারোটা বাজে। ইংরেজদের নিয়ম অনুযায়ী একটা নতুন দিনের শুরু হয়ে গেল। মানে আমার বয়স পঁচিশ থেকে ছাব্বিশ বছর হয়ে গেল। কত মেসেজ আসছে আমার ফোনে। বিদেশের বন্ধুরা, এদেশের বন্ধুবান্ধবীরা, আমার আত্মীয়রা সবাই একে একে উইশ করতে শুরু করেছে মেসেজ করে। কিন্তু আমার একটু আনন্দ হচ্ছে না। একটুও মজা লাগছে না। কারণ যে মেসেজটা আসার কথা ছিল বহু আগেই সেটা এখনো আসেনি আমার ফোনে। তারমানে কী আমি যেটা ভাবছিলাম সেটাই? ও কী তবে চাই না আমার সাথে ওর বিয়ে হোক? সেটাই হবে।

আর সত্যিই তো, ওর মতো সুন্দরী আপটুডেট একটা মেয়ে আমাকে ভালোবাসতে যাবে কোন দুঃখে। আমি তো ওর মতো নই। আমি সম্পূর্ণ আলাদা একটা মানুষ। ওর ভালোলাগার মতো আমার একটা গুনও নেই।

আমি ফোনটা নামিয়ে রেখলাম। চার্জ নেই একদম। ফোনটা চার্জে বসিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি। ফোনটা হাতে নিয়ে সেই সাড়ে আটটা থেকে বসে আছি আমি। কোনো নোটিফিকেশন এলেই ভাবছি এই হয়ত এল মেসেজটা ওই নম্বর থেকে। কিন্তু ধূর! কোথায় কী! সুস্মিলি বোধহয় ভুলেই গেছে আমি ওকে বলেছিলাম ওর ডিসিশনটা মেসেজে জানাতে। কিংবা ব্যাপারটা হয়ত ওর মনে আছে, হয়ত ও চাই না আমাকে নিজের মতামত জানাতে।

সবাই বলে আমি নাকি হ্যান্ডসম। আমার কিন্তু মনে হয় না। আমি জীবনে কোনোদিন কোনো মেয়েকে কিস করিনি। হাগ তো করিই নি। সবচাইতে বড়ো কথা আমার গার্লফ্রেইন্ডই ছিল না কোনো। তাই হ্যান্ডসম হওয়ার কোনো সুফল আমি পাইনি কোনোদিন পাইনি। যবে আমার এমবিবিএস কমপ্লিট হয়েছিল তবে থেকেই আমার বাবামায়ের আবেদন ছিল এবারে বিয়ে করে ফেলতে হবে। বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাওয়াটা নাকি অলক্ষনের ব্যাপার। আমার কোনো মেয়েই পছন্দ হচ্ছে না দেখে বাবা শেষপর্যন্ত এতো ডেসপারেট হয়ে গিয়েছিল যে ঠিক করেছিল কোনো বিদেশি মেয়ের সাথেই আমার বিয়ে দেবে। মা তো আবার ডাক্তার দেখাতে ছুটছিল আমায়। শেষ পর্যন্ত একজনকে পছন্দ হয়েছে শুনে বাবামা প্রচন্ড খুশি। ওদের খুশিটা আর হয়ত থাকবে না। জানি না ওরা কিভাবে রিএক্ট করবে এটা শুনে।

“বাবু, তোকে সুস্মিলি ফোন করেছে আমার নম্বরে।” বাবা দরজা খুলে হাসি মুখে তাকালো।

আমি অবাক হলাম। উত্তরটা আমাকে জানালেই পারতো। আমার নম্বর তো ওর কাছে রয়েছে নাকি বাবাকে কেন ও খামোখা টানলো এসবের মধ্যে।

“ও কী বলতে চাই জেনে নাও না। আমার ভালো লাগছে না।” আমি বললাম।

“মারবো এক চড়! মেয়েটা এতো রাতে ফোন করে তোর সাথে কথা বলতে চাইছে। আমি ওকে বলব দেওয়া যাবে না। তুই বড়ো হবি কবেই রে?” বাবা বিরক্ত হল। বলল, “বাজে না বকে ফোনটা ধর। আমি হোল্ড করে রেখেছি।”

আমি আর কিছু না বলে রিসিভ করলাম কলটা। আনহোল্ড করে বললাম, “হ্যালো!”

“নীল? তোমার ফোনটা সুইচড অফ কেন গো?”

“সুইচড অফ!” আমি তাড়াতাড়ি চার্জারের কাছে গেলাম।

“হ্যাঁ। সুইচড অফ। আমি আমার উত্তরটা মেসেজ করে জানিয়ে দিয়েছি আপনার কথামতো। আপনি পড়ে নিন।”

ওহঃ! ফোনটা সত্যিই সুইচড অফ হয়ে গিয়েছে? আমি পাওয়ার বাটানে চাপ দিলাম।

“আর একটা কথা…” সুস্মিলির গলাটা এবার একটু মায়াবী শোনাল।

“কী?” আমি জানতে চাইলাম।

“উইশ ইউ দ্যা হ্যাপিয়েস্ট বার্থডে এভার।” আর কিছু না বলে কেটে গেল ফোনটা।

ফোনটা বাবার হাতে ধরিয়ে আমি তাড়াতাড়ি নীচে পাঠিয়ে দিলাম বাবাকে। বাবা জানতে চাইছিল সুস্মিলি কী বলল না বলল, আমি বললাম না কিছুই।

ফোনটা সুইচ অন হওয়ার পর দেখলাম সত্যিই মেসেজটা এসেছে। দীর্ঘ একটা মেসেজ। আমি মেসেজটা খুললাম। হৃদপিন্ডটা বিদ্যুৎবেগে লাফাতে শুরু করেছে আমার। মনে হচ্ছে যেকোনো মুহূর্তে পাঁজর ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসবে অঙ্গটা উত্তেজনার বসে।

আমি পড়তে শুরু করলাম মেসেজটা।

'নীল, আমি জানি না তুমি নিজেকে নিয়ে কেন এতো খারাপ মনভাব পোষণ কর। তুমি সত্যিই খুব ভালো একটা ছেলে। যাকে যেকেউ ভালোবেসে ফেলবে। সকালের ওই একঘন্টাতেই আমিও হয়ত ভালোবাসতে শুরু করেছি তোমায়। আর আমি চাই আমার বিয়ে হোক তোমার সাথেই। ওই দেখ কেমন আপনির বদলে তুমি করে বলতে শুরু করেছি। তবে এরপর তো এটার অভ্যেস করতেই হবে। তাই কিছু মনে কর না যেন।”

নীল অবাক হল। এটাকেই কী লাভ এট ফার্স্ট সাইট বলে? ক্ষনিকের আলাপে প্রেম?

_____


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract