SHUBHAMOY MONDAL

Drama Horror Thriller

3  

SHUBHAMOY MONDAL

Drama Horror Thriller

কাপালিকের কবলে -২

কাপালিকের কবলে -২

3 mins
208



এইসব ভাবনায় ডুবে আছি এমন সময় কোথা থেকে একটা মিশকালো কুকুর এসে উদয় হলো আমাদের সামনে। দু' তিনবার ওর দেহটাকে চক্কর কেটে, হঠাৎ লাফিয়ে পড়ে ওর একটা কান কামড়ে ছিঁড়ে নিলো!


আমি তো রে রে করে তেড়ে গেলাম আর কুকুরটাও ভয় পেয়ে দৌড় দিল। কাকু শবদেহ ছেড়ে উঠতে পারলেন না। বাকিরাও কাছাকাছি কেউ ছিল না। তাই আমিই তাড়া করলাম ঐ কুকুরটাকে।


কখনও কখনও এমন হয় না - কোনো কারণে হঠাৎ চমকে গিয়ে, অযথাই দৌড়ে পালাই আমরা? আর কিছু দূর দৌড়ে পালানোর পর, আমাদের মনে হয় - আরে অকারণে আমি দৌড়াচ্ছি কেন? তখন আমরা যেভাবে নিজের থেকেই থমকে দাঁড়াই, সেই কুকুরটাও ঠিক সেভাবেই অনেকটা দৌড়ে গিয়ে, হঠাৎ থমকে সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে পড়লো!


আমিও একটু অবাক হয়ে, ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে গেলাম। সে চুপ করে দাঁড়িয়েই রইলো। আমি তার কাছে যেতেই, সে মাথাটা নামিয়ে তার মুখ থেকে কিছু বের করে রাখলো আমার পায়ে!


দেখি - একটা জেন্টস কানের দুল! মানে আমার বন্ধুর কান থেকে তাহলে এটাই ছিঁড়ে এনেছিল কুকুরটা? কিন্তু সে তো কখনও কানে দুল জাতীয় কিছু পড়তো না, তাহলে? 


ভালো করে পরীক্ষা করে দেখি - ওটায় একটা মাইক্রো এস ডি কার্ড সেট করে রাখা আছে! আমার বুঝতে আর বাকি রইলো না - আমার বন্ধু, তার উদ্ধার করা সব তথ্য সবার নজর এড়িয়ে, কোথায় আর কিভাবে লুকিয়ে রেখে গেছে। 


এত দুঃখের মধ্যেও এমন অনাকাঙ্খিত সাহায্য পেয়ে, আমি খুশী হয়ে কুকুরটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম - আজ তুমি শুধু আমার বা আমার ঐ বন্ধুর জন্য নয়, সারা দেশের খুব মঙ্গল করলে বন্ধু।


আমার মুখের কথা শেষ হলো কি হলো না, দেখি কুকুরটার চেহারা ধীরে ধীরে বদলে গিয়ে, সে একটা বছর ত্রিশের যুবক হয়ে উঠলো! 


আমায় স্বভাবতই ভীত এবং অবাক হয়ে যেতে দেখে, সে বললো - আপনি আমায় বন্ধু বলেছেন আর আমি মঙ্গল করেছিও বলেছেন। এ'তে আমার, প্রায় সতেরো বছর আগে পাওয়া শাপ নষ্ট হয়ে, আমি আবার মানব রূপ ফিরে পেলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।


আমি বললাম - মানুষের এরকম শাপগ্রস্থ হয়ে পশু হয়ে যাবার কথা শুধু রূপকথার গল্পেই পড়েছি, এমন তো আর বাস্তবে হয়না। তুমি কি কোন জাদুকর নাকি? তা সে যাই হও, তোমার এই মজাটা অন্যসময় করলে মোটেই ভালো ভাবে নিতাম না। 


শুধু এখনই বিরাট একটা উপকার করেছো বলেই তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি, এখান থেকে চলে যাও। আমার প্রাণের বন্ধুকে আজ অকালে হারিয়েছি, এসব আজগুবি গাল গল্প শুনতে এখন আমার একটুও ইচ্ছে করছে না।


সে বললো - আপনি তো আমাকেও এই একটু আগেই বন্ধু বলেছেন। আপনার বিশ্বাস না হলে মানবেন না, তাতে আমার কি যায় আসে? আজ এত দিন পর, যে মাকে বাঁচাতে গিয়ে শাপিত হয়েছিলাম, তার কাছেই আবার ফিরে যাবার সুযোগ এলো আমার। সেটাও শুধু আপনারই জন্য, তাই আপনাকে ধন্যবাদ জানালাম। 


আমার নাম বিশ্বজিত, এই পাশের গ্রামেই বাড়ি। ওখানে খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন - আমি সতেরো বছর ধরে নিখোঁজ। ঠিক আছে তবে, আমি আসি - বলে সে চলে যেতে উদ্যত হল।


আমি বুঝতে পারলাম, ছেলেটা মিথ্যা কথা বলছে না। তার নাম ও হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাবার কথা আমিও শুনেছিলাম আগে। তাই শুনতে যতই অলৌকিক লাগুক, মনে হলো তার কাহিনীটা একবার শোনাই যেতে পারে। 


ওদিকে, সবে তখন দ্বিতীয় শবদাহ শুরু হতে যাচ্ছিলো। মানে হাতেও অনেকটা সময় ছিলো, তাই বললাম - যদি রাগ না করো, তবে শুনতে চাইবো কি করে নিজের মাকে বাঁচাতে গিয়ে তুমি কৈশোরেই শাপিত হয়েছিলে। বলবে সব ঘটনা খুলে আমায়?


সে বললো - শুনবেন? বিশ্বাস হবে তো আপনার? আমি বললাম - হ্যাঁ, হবে। তুমি বলো। 

ছেলেটা তার কাহিনী যা বললো, সেটা তার কথনেই দিলাম -


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama