STORYMIRROR

Nityananda Banerjee

Romance Classics Fantasy

4  

Nityananda Banerjee

Romance Classics Fantasy

জ্বলদর্চি ( তৃতীয় ভাগ )

জ্বলদর্চি ( তৃতীয় ভাগ )

3 mins
306


সৃজার জীবন যেন পাল তোলা নৌকোর মত। স্রোতের অনুকূলে বয়ে যায়। বিপরীত দিক থেকে বায়ু বইলে তখনই যত আপদ এসে জড়ো হয় ।

কোন কারণে মি: ভার্মার মনে হয় সৃজা যেরূপ চরিত্রের মেয়ে তাতে তার পক্ষে সবকিছুই সম্ভব। নয়া সি জি এমও বেশ ধুরন্ধর। যে কোন সময় সৃজাকে হাত করে ভেতরের কথা জেনে যেতে পারে। তাই কালবিলম্ব না করে সৃজাকে পুনরায় নিজের পি এ হিসেবে বহাল করলেন। 

সৃজার এতে ভালো হল। আসল তথ্যগুলো হাতিয়ে সব ইউনিয়নের নেতাদের পাচার করতে লাগল। আবার নয়া সি জি এমের ভালো লাগাকে অস্ত্র রূপে ব্যবহার করল।

এক সময় নতুন সি জি এম মি: রক্ষিত সৃজার অনুরক্ত হয়ে পড়লেন। তিনি বললেন - মিস সৃজা, আই লাভ ইউ এণ্ড আই ওয়ান্ট টু মেরি ইউ।

- বাট মি: রক্ষিত ,

সৃজা বলল - বিয়ে বলতে যে শারীরিক ঘনিষ্ঠতার কথা বোঝায় ; তা কিন্তু ইতিমধ্যে আমার কয়েক ডজন লোকের সাথে হয়ে গেছে । তারপরও কি আপনি আমাকে বিয়ে করতে চাইবেন ?

মি: রক্ষিত দমলেন না । বললেন - ইয়েস, অফ কোর্স !

কারণ এই প্রথম আমি কোন মেয়ের প্রেমে পড়েছি। তোমাকে আমার আরও ভালো লাগল তোমার এই অকপট স্বীকারোক্তির জন্য ।

- আপনি কি ভেবে বলছেন স্যার ?

- দেখ, এই স্যার কথাটা এখন আমার বড় অসহ্য লাগছে। তুমি আমার নাম ধরেই ডেকো অত:পর।

- কিন্তু স্যার, অফিসে তো গুজব ছড়িয়ে যাবে !

- তো ? আমি তোমাকে বিয়ে করব বলেছি তখন আর ওসব গুজবে কি আসে যায় ?

সৃজা সাবধানী মন্তব্য করল - ভেবে দেখি।

এরপর আর কথা চলে না। মি: রক্ষিত বললেন - অবশ্যই ভেবে দেখবে। আমি কিন্তু সব দিক ভেবেই বলেছি।

- পরে আফশোষ করবেন না তো ?

রক্ষিত সাহেব হেসে বললেন - যাকে জীবনসঙ্গিনী রূপে দেখছি তাকে নতুন করে ভাবার কি আছে ? তুমি ভাবো, ভেবে আমায় বল কিন্তু !

অতুলদা এতক্ষণ দরজার আড়ালে থেকে সব শুনছিলেন। গলা খাকারি দিয়ে বললেন - মে আই কাম ইন স্যার !

সৃজা বলল - ওহ্ ইয়েস, প্লীজ কাম ইন।

অতুলদা ঢুকে বলতে শুরু করলেন - স্যার ইউনিয়ন নেতারা আমাকে পাঠিয়েছে আলোচনার দিন ও ভেন্যু ঠিক করবার জন্য। সি এম ডি সাহেব এই দায়িত্ব আপনাকে দিয়েছেন। এখন যদি একটা উপযুক্ত সময় দেন আমি নোটিশ তৈরি করতে পারি।

মি: রক্ষিত সৃজার মুখের দিকে চাইলেন। সৃজা বেরিয়ে গেল তার নিজের টেবিলের দিকে। 

মি; ভার্মা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে ছিলেন। সৃজা ঢুকতেই একটা অশ্রাব্য গালি দিয়ে বললেন - ওখানে কি করছিলে ? অফিসে এসে এই টেবিল ছেড়ে কোথাও যাওয়া চলবে না। এমনকি আমি অফিসে না থাকলেও নয়।

- স্যার আমি আপনার অধীনস্থ ঠিকই; কিন্তু আমার একটা ব্যক্তিসত্তা আছে যা আপনি অস্বীকার করছেন ?

- হোয়াট ডু ইউ মিন ?

- আপনি এভাবে আমাকে ইনসাল্ট করতে পারেন না।

 এণ্ড ডোন্ট আণ্ডারএস্টিমেট এনিওয়ান।

- তুমি কি জানো - এই মুহুর্তে আমি তোমাকে স্যাক করে দিতে পারি ?

- দিস ইজ মাই রেজিগ্নেশন লেটার। বলে একটা কাগজে খসখস করে লিখে ফেলল-

মোস্ট রেসপেক্টফুলি আই বেগ টু টেণ্ডার মাই রেজিগনেশন.......

মি: ভার্মা হতবাক হয়ে গেলেন । কিন্তু সামান্য একজন কোম্পানী সেক্রেটারির সঙ্গে কোন কথা বলার তাগিদ অনুভব করলেন না। 

সৃজা রেজিগনেশন দিয়ে গটগট করে বেরিয়ে গেল। লিফ্ট দিয়ে গ্রাউণ্ড ফ্লোরে নামতেই মুখোমুখি পড়ল মি: রক্ষিতের ।

এমন অসময়ে অফিস ছেড়ে চলে যাবার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই সৃজা অগ্নিদীপ্ত রক্তচক্ষু তুলে রক্ষিতের দিকে চাইল।

- কি হয়েছে সৃজা ? চোখমুখ লাল হয়ে গেছে কেন ?

- আমি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে চলে যাচ্ছি।

পথ আগলে দাঁড়ালেন মি: রক্ষিত। একজন মাস্টার স্তরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মী হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে - এটা ভাবতেও অবাক হতে হয়। 

বললেন - শোন সৃজা, তুমি আমার সাথে উপরে চল। কথা আছে।

- আমার কোন কথা নেই। সৃজা বলল - যা বলার আপনার চেয়ারম্যানকে বলুন। 

- শোন শোন ! সৃজা আমার কিছু পার্সোনাল কথা আছে।

- পরে শুনব। এখন আমার মাথার ঠিক নেই। আমি আসি।

বলে একটা ট্যাক্সি নিয়ে সৃজা চলে গেল।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance