জ্বলদর্চি ( সপ্তম ভাগ )
জ্বলদর্চি ( সপ্তম ভাগ )
প্রোজেক্টের অগ্রগতিতে ক্লায়েন্ট ভীষণ খুশি। পরের প্রোজেক্টটাও এই কোম্পানীর জন্য নির্দিষ্ট করে রাখলেন। ফোনে কথা হল কিশোর ভার্মার সঙ্গে। শর্তটাও জুড়ে দিলেন সৃজাকেই চাই।
কিশোর ভার্মা এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না - তা' তো জানা কথাই। এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা পড়বে। প্রথম তো পরিকল্পনা মাফিক কাজটা করে দিতে পারলে প্রোজেক্ট পাওয়া যাবে। মালিকপক্ষ খুশি হলে পুনরায় চেয়ারম্যান হবার নিশ্চয়তাও রইল। আর সৃজা !
হ্যাঁ, সৃজার জীবনটাকে সোনাগাছির অন্ধকারে ছেয়ে দেওয়া যাবে। তখন দেখব মি. রক্ষিতের দৌড় কতদূর !
- পেয়ে যাবেন স্যার ।
ভার্মা সাহেব বললেন ।
- আমিতো সৃজাকে বিয়ে করেছি কন্ট্রাক্ট বিশেষে এবং এই কারণেই । আপনি পেয়ে যাবেন। আমার কাজই তো হল আপনাকে সন্তুষ্ট করা।
- কিন্তু এতদিনে সে তো ছেলেপুলের মা হয়ে গেছে ?
- একদম না স্যার । কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের শর্ত অনুযায়ী সে প্রেগন্যান্ট হতে পারবে না । আপনি সিওর থাকুন - ও আগে যেমন তরতাজা ছিল এখনও একই আছে ।
- দ্যাটস গুড। দ্য গার্ল নোজ হাউ টু রি-অ্যাক্ট হোয়াইল অন সেক্সুয়াল ভেমনস্ট্রেশন ।
কিশোর ভার্মা ক্রুর হাসি হেসে উঠলেন ।
- আপনার সন্দেহ থাকলে আপনি এসে দেখে যেতে পারেন। ফিগারে কোন পরিবর্তন হয়নি এখনও পর্য্যন্ত।
যথাসময়ে মালিকপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হল পরবর্তী প্রোজেক্টের কথা।
ক্লায়েন্ট মালিকপক্ষকে বললেন - আই ওয়ান্ট মি. কিশোর ভার্মা এজ এ পার্টি।
মালিক রাজী হয়ে কিশোর ভার্মাকে দায়িত্ব দিলেন। বোর্ডে তা পাশ হয়ে গেল ।
কিন্তু সৃজা ! লাস্যময়ী সেই যুবতী তখন মি. রক্ষিতের রক্ষিতা। রক্ষিত সাহেব সৃজার শর্ত মত তাকে দু'বছরের চুক্তিতে বিয়ে করেছে। কিশোর ভার্মার প্ররোচনায় সে আর পা দিতে রাজী নয়।
ভার্মা সাহেব বললেন - সৃজা , একদিন তুমি আমার সাথে ছিলে । তোমারই কথায় আমি তোমাকে চুক্তিতে বিয়ে করতে রাজীও হয়েছিলাম ।
- কিন্তু আপনি চুক্তির শর্ত মানেননি ! আমাকে স্যাক করে দেবেন বলেছিলেন ; মনে আছে ?
- সে তো রাগের মাথায় হয়ে গেছে !
- রাগ ? কিসের রাগ ? আমার দোষ কোথায় ছিল ? প্রোজেক্ট তো আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তথাপি আমাকে ...
- আমার বাগদত্তা হয়ে তুমি ক্লায়েন্টের সাথে .... ছি: ছি: একি কাজ করেছিলে তুমি ?
- আমি অসতর্ক মুহুর্তেও কোন অপকাজ করি না ; এক্ষেত্রেও করিনি।
- আমি নিজের চোখকে অবিশ্বাস করি কি করে ? নিজের চোখে স্পষ্ট দেখেছি তুমি ...
- বাজে কথা বলবেন না।
- কি? আমি বাজে কথা বলছি ? তুমি চাও তো ফুটেজ দেখিয়ে দিতে পারি ।
- কোন ফুটেজ ? আনুন, আর আপনি নিজে দেখুন ভালো করে।
- ছি: এ দৃশ্যও কি পুনরায় দেখার মত ?
- ঠিক আছে, ফুটেজটা না হয় আমিই দেখিয়ে দিচ্ছি। চলুন কম্প্যুটারে দেখিয়ে দিই।
- কোন প্রয়োজন নেই। অমন ন্যাক্কারজনক ছবি দেখে ।
- তাহলে আমারও আর কিছু বলার নেই। আপনি আসতে পারেন।
- একটা বেশ্যা মেয়েছেলে ! তার আবার কত দেমাক ! যাও যাও, টাকা কামাও; শেষ জীবনে কাজে লাগবে।
তবু বলছি যদি নতুন প্রোজেক্টটা এনে দিতে পারো; এক কোটি টাকা ইনাম দেব।
সৃজা এবার উৎসুক হয়ে বলল - কি প্রোজেক্ট ?
কিশোর ভার্মা তাকে সে বিষয়ে বলার পর সৃজা বলল - আমি পারব না। আর মিছিমিছি আপনার উপকার করতে যাব কেন ?
সৃজার তখন রক্ষিতের কথা মনে পড়ল । এই প্রোজেক্ট তাকেই দিতে হবে। কিশোর ভার্মাকে নিরাশ করে সৃজা চলে গেল। আর ভার্মা সাহেব নিজের কপালে আঘাত করে বলে উঠলেন - ইস্ কি বোকামিটাই না করে দিলাম। কেন যে প্রোজেক্ট ডিটেইলস দিতে গেলাম !
সৃজা নাচতে নাচতে চলে গেল রক্ষিতের কাছে। বলল
- ডার্লিং! একটা দুর্দান্ত খবর আছে ।
মি. রক্ষিত উচ্ছসিত হয়ে বললেন - কি খবর ?
- সে আছে। তার আগে বলি, তূমি কি কোম্পানীর চেয়ারম্যান হতে আগ্রহী ?
মি. রক্ষিত যেন দিবাস্বপ্ন দেখছেন । এও কি সম্ভব !
কি যে আবোলতাবোল বলে মেয়েটা !
কিন্তু রক্ষিত এও জানে সৃজা এমন একটি মেয়ে যে অসাধ্যসাধন করতে পারে। হাঁ করে চেয়ে থাকলেন সৃজার কথা শোনার জন্য ।
সৃজা বলল - পরের চেয়ারম্যান তুমিই হচ্ছ ডার্লিং! এটা কিন্তু তোমার বউয়ের কথা নয় ; একজন চুক্তিভিত্তিক বিয়ের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাশী মেয়ের কথা। বল তুমি রাজী ?
( চলবে )

