গুহনামা
গুহনামা
আচ্ছা আপনারা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এর বড়দা কে চেনেন তো বড়দা চরণ মিত্র অথবা ধরুন টেনিদা অথবা ঘনাদা এইরকম সব তারা , তাদের নানা রকম গল্প আপনারা পড়েছেন শুনেছেন। সেই রকম এক দাদা আছে আমাদের নাম গুহ দা।আজকে তার গল্প শোনা যাক তিনি ঘনাদার মতো জনপ্রিয় না হলেও আমাদের সবার কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ।তার এহেনো জনপ্রিয়তার কারণ তার অদ্ভুত কিছু গল্প । যা অলৌকিক পর্যায়ে চলে গেছে তাহলে একটু বিস্তারিত বলি আপনাদের ,ভালো লাগলো কিনা লাগলো সেটা আপনারা বলবেন। তো গুহ দার বয়স 65 অথবা তার ধারেকাছে হবে । তথাপি আমাদের থেকে অনেক বয়সে বড় হওয়া সত্ত্বেও উনি আমাদের সবার কাছেই জন়প্রিয় গুহ দা নামেই পরিচিত। তার সম্পূর্ণ নাম হচ্ছে নিরঞ্জন গুহ আমরা বলি লালা দা। পাঠক যারা তারা জানতে চাইবেন যে হঠাৎ গল্প বলার ইচ্ছা হলো কেন? হ্যাঁ সেটাই বলছি আপনাদের।তাঁহার অনেক গুণ আছে ,যার মধ্যে প্রধান গুণ হচ্ছে যে ওনার দাঁত দুটি সামনে বড়ো।বড় দাঁত সত্ত্বেও তার তাতে কিন্তু কোন কিছু অসুবিধা হয় না । উনি বেমালুম সেই দাঁত নিয়ে খাসির বা পাঠার দাবনা অথবা সক্ষম মুরগির মাথা এবং লোহা মোটর বেমালুম চিবোতে সক্ষম। আরো একটি বিশেষত্ব হচ্ছে ওনার পাকস্থলী , এটি অসম্ভব ভালো পেয়েছেন, যাতে যেকোন ধরনের খাওয়ার হজম হয়ে যেতে পারে। ধরুন উনি প্রথমে খেলেন ভাত, তারপরে ইচ্ছে হলো খেলেন ফুচকা, ফুচকা খাওয়ার সাথে সাথে তার পরই তার ইচ্ছা হলো যে মিষ্টি খাবেন,তো মিষ্টি খেয়ে নিতে পারেন এবং মিষ্টি খাওয়ার পরে তার ইচ্ছা হলো দইয়ের ঘোল খাবেন তো উনি তা খেয়ে নিলেন,আবার ইচ্ছা হলো তার সাথে পাকা মর্তমান কলা খাবেন, সেটা উনি খেলেন কিন্তু তাতে কিন্তু তার কোনো অসুবিধা হয় না মানে কোন অম্বলের ওষুধ টষুধ খেতে হয় না যেটা সাধারণ বাঙালি ভাবতেও পারে না।তোএই গুহ দার এরকম একটি মজার ঘটনা আমি আপনাদের বলি ।সেটা হলো এই যে গুহ দাদার তখন বয়স পাঁচ হবে বাচ্চা, বয়স কম তো! সেইপাঁচ বছর বয়সে উনি পুকুরে গেছিলেন চান করতে। তো সেখানে সাতার প্র্যাকটিস করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। একদিন এরকম করতে করতে উনি সবার অলক্ষ্যে জলে ডুবে যান। জলে ডুবে যাওয়ার পরে তাকে বেশ বেশ কিছুক্ষণ পর 10-15 মিনিট বাদে
কারো একজনের নজরে পড়েছিল যে উনি ডুবে জাচ্ছেন, তো কয়েক জন জলের মধ্যে থেকে গুহ কে উদ্ধার করে উনাকে ডাঙ্গায় তোলা হলো। তোলার পরে উনার পেট থেকে জমা জল বের করে নেয়া হলো। কিন্তু তাতে ভদ্রলোকের কিন্তু কোনো অসুবিধা হয়নি, কারণ স্বরূপ তিনি বলেন যে আমি যখন পুকুরে ডুবে গেছিলাম তখন আমার কিছুই মনে ছিল না, চারিদিকে অন্ধকার ছিলো, কিন্তু সে অন্ধকারে উনি নাকি কৃষ্ণ দেখেছেন এবং কৃষ্ণ কালিয় দমন করছেন এই বায়োস্কপে চোখের সামনে ভেসে উঠেছে এবং দীর্ঘ 15 মিনিটের মধ্যে বসে শুয়ে ডিগবাজি খেয়ে বায়োস্কোপ সম্পূর্ণ করার পর উনি মর্তে অবতরণ করার মতন ডাঙায় অবতরণ করেছেন ।এবার বলুন আপনারা উনি ঘনাদা টেনিদা থেকে কি কোন অংশে কম। এহেন গোদার ,থূরি গুহ দা বা লালা দার কিশোর বয়সের একটি অ্যাডভেঞ্চারের গল্প আপনাদের বলি শুনুন।
গুহদা এবং তার বন্ধু এবং সেই বন্ধুর দূর দূর দূর সম্পর্কীয় আত্মীয় লতায়-পাতায় গাছে ডালে শিকড়ে বা কোন এক সম্পর্কিত আত্মীয় তার বাড়ি হচ্ছে বাংলাদেশে ।এখন কিশোর বয়স তাই ইচ্ছা হয়েছে একটু দেশে ভ্রমণে বেরোবেন তো গুহ দা ও তার বন্ধুর সে পয়সা নেই যে বাংলাদেশে যাবেন গাড়ি চড়ে, কিন্তু তাতে কি? তাতে গুহদার কিছু আটকাইনি ।তো উনি বললেন যে চলো দেখা যাক কি হয় ,,, ওনার বন্ধু বলল যে ঠিক আছে আমার কাছে তো কিছু পয়সা আছে সে সেই রকম প্রয়োজন হলে ট্রেনের টিকিট কাটবো না। টিকিট না কেটে যতদূর যাওয়া যাবে ততোদূর যাবে এই ভাবে তারা বেরিয়ে পড়ল ভ্রমণে একটা টিকিট কেটে দুজনে মিলে।ট্রেনে উঠেছে দূজনে, তো ট্রেনে যেতে যেতে কোন একটা স্টেশনে গাড়ি দাঁড়ালে ,তার সেই বিশেষ বন্ধুটি নেমে পড়েলেন ট্রেন থেকে। ইতিমধ্যে ট্রেন বন্ধুকে ছেড়ে চলতে শুরু করে দিতেই গুহদা কি করি কিকরি এই ভেবে পরের স্টেশনে গিয়ে উনিও নেমে পড়লেন। তারপর দেখা গেল অ্যাডভেঞ্চারাস সেই বন্ধুটি ট্রেনলাইন কে অবলম্বন করে ট্রেনের পিছন পিছন দৌড়ে আসতে আসতে সন্ধান পেলেন পরের স্টেশনে তার বন্ধু গুহ দা কে।যাই হোক তারপর তারা যথারীতি বনগাঁ হয়ে বিনা পাসপোর্টে ভিসা ছাড়া উনারা বাংলাদেশে প্রবেশ করলেন । প্রবেশ করে রাস্তা-ঘাট বাতাস আকাশ এইসব দেখতে দেখতে চলেছেন । এদিকে পেটে টান পড়েছে , কি খায় , কি খায় ভাবতে ভাবতে ৎপেট ভরানোর জন্য জল চাইতে গেলে এক মুসলিম ভদ্রলোকের তাদের দেখে মায়া হল এবং তারা সে মুসলিম ভদ্র লোকের বাড়িতে দুপুরের খাবারের নিমন্ত্রণ পেলেন এবং যথারীতি আদর যত্ন সহকারে দুপুরের খাবার খেয়ে বেশ একটু দিবানিদ্রা করে তারা অবশেষে রওনা হয়েছে পরবর্তী গন্তব্যে দিকে সেই কাঙ্খিত লতায় পাতায় জরিবুটি তে যে আত্মীয় সম্পর্ক যে ভাই বা দাদা যেই হোক তাকে পাওয়া গেছিল। এভাবে বাংলাদেশ সফর সম্পন্ন করে ভারতবর্ষে ফিরে এসে ভারতবর্ষের মাটিকে উনি ধন্য করেছিলেন।