Juthika Saha

Abstract

2  

Juthika Saha

Abstract

গল্প --বাঁচার স্বাধীনতা

গল্প --বাঁচার স্বাধীনতা

3 mins
643



প্রতিমা এই ই প্রতিমা কোথায় যে যায় ,এইযে ,ভর দুপুরে কোথায় গেছিলে শুনি ?মাথা নীচু করে বললে ,তুমি তো সবই জানো ---জানি মানে !!ঐ হারান কবরেজের কাচে ---হ্যাঁ তোমার সাহস তো দেখছি অনেক বেশী ।কি দোষ হয়েচে------আমি বলেছি না কোন ওষুধ খাওয়া চলবেনা ,তো চলবেনা ।তা শোন, আমি আজ বড় মেয়ের বিঁয়ে পাকা করে ফেলেছি । কি কাইচো ?এতটুকুন মেয়ে সবে নেকাপড়া শিখচে---হু লেখাপড়া ওসব দিয়ে কি হবে শুনি ! মেয়ে মানুষের আবার লেখা.....বলি একখানা তো ছেলে জম্ম দিতে পারলেনা ঐ তিনখানাই মেয়ে বিঁয়োলে,এতেও আমার দোষ ? বড় বড় কথা বলবেনা ওসব মেয়ে মানুষের মুখে মানায়না বুঝলে,সংসারে হেঁসেল ঠেলা ,স্বামীর সেবা করা, সংসার আঁকড়ে বাঁচাই মেয়ে মানুষের কাজ ।আমি যা ভালো বুঝেছি করেছি ব্যাস।বড় মেয়ে সবে চোদ্দ আর মেজ দশ এর মধ্যে দু তিনটে পেটেই নষ্ট হয়েছে এখন যেটা সেটার বয়স দুই ,আবার যেন প্রতিমার শরীরের মধ্যে কেমন করে গা গোলায় বমি ভাব ।তাই নিয়েই সব কাজ করতে হয়।মনের কথা কাকে বলবে, কেইবা শুনবে !

মেয়ে দুটো ইস্কুলে গেছিলো,একটু বাদে এলো বললো মা কি হয়েছে ? বাবা বলল কিস্যু হয়নি কাল থেকে তোমাদের ইস্কুলে যাওয়া চলবেনা। সুধা বড় মেয়ে ,বললো তোর বে দেবো এই মাসেই ,ভালো পাত্র পেয়েছি ।ছেলের মা অসুস্থ তাই সংসারে একখানা মেয়েমানুষ চাই তাই ছেলের বে দেবে,হ্যাঁ ওরাই সব খরচা দিয়ে নিয়ে যাবে ,বড় ভরা সংসার ছেলে মন্দ নয় ,জমিজমা আছে অভাব নেই। 

প্রতিমা বলল ,ছেলে কত বড় হবে সুধার চেয়ে ?

কত আর হবে বাড়ির বড় ছেলে এর আগে বে হয়েছিল সাত বছর , সে মারা গেছে ।

ওই পক্ষের একটা ছেলে আছে ,সে আবার হাঁটতে চলতে পারে না ,সমস্যা ওখানেই ,ওরা তাই ছেলের বে দেবে যাতে করে কোলে সুস্থ ছেলেপুলে হয় আর সংসার সামলায় ।

প্রতিমা ---কি কইচো দোজ বর !সে তো অনেক বয়েস ।

কেন তোমার বে হয়নি ,এই বয়সে? আর আমি মরদ কোন অংশে কম শুনি এখনো শরীর জোয়ান।তোমার ঘাটতি পড়েছে কিছুতে!ওসব দেখে লাভ নেই গাঁটের খরচ নেই কোনো এমন পাত্র হাতছাড়া করে কেউ ,আমার কিএমন রোজগার আছে,বলি মুখেতো বলছো তোমার বাপের ঘর থেকে কি পয়সাকড়ি দিয়ে সাহায্য করবে ?সে ক্ষমতাও তো নেই ,নেহাত আমি বলেই তোমাকে বিনা পয়সায় উদ্ধার করেছিলাম। বাপের ঘরের ভাঁড়েতো কানাকড়িও ছিলোনা।তা বলি খালি হাতে কোন রাজপুত্তর তোমাকে এসে নিয়ে যেতো শুনি!!প্রতিমা --মুখে কোনো কথা নেই ,আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে ঘরের দিকে যেতেই --স্বোয়ামী বললো ,

 আমি এখন বেরোবো কি আছে দাও দুটো মুখে দিয়ে যাই,পুরুত মশায়ের কাছে গিয়ে দিনক্ষন ঠিক করে আসতে হবে । 


রাতের বেলা মশারির নীচে দুই মেয়ে নিয়ে ঘুমোচ্ছে প্রতিমা,বিছানায় ক্লান্ত শরীরটা নিয়েই কোলের মেয়েকে বুকের দুধ দিচ্ছে ,প্রতিমারও কেমন চোখ লেগে গেছে ,বুকের একপাশের কাপড়খানা সরে গেছে ,পুরো যৌবন ফুটে উঠেছে বয়সতো বেশী নয় ,তাই শরীরের বাঁধনখানা হাজার কাজেও ঠিক আছে ,তা পুরুষ মানুষের চোখে পড়ে যায়।ওই দেখে 

তার স্বোয়ামী তাকে টান মারলো বললো, মেয়েতো দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে গেছে এবার আমার যে বড় খিদে এই জোয়ান শরীরে--প্রতিমা কাপড় খানা ঢাকা দিতে গেলেই ,আমার কাছে লজ্জা! ও ঢাকা দিয়ে কি লাভ ,এই বলে তাকে বুকে টেনে নিতেই ,প্রতিমা আজ ছেড়ে দাও না ,শরীরের মধ্যি কেমন করতিছে মনে হয় ---.কি আবার পোয়াতি !ভালো তো ,না না ছাড়ো, ছাড়বো কি বলছিস আমি জোয়ান মরদ আমার শরীরে খিদে মেটা আগে ,মেয়েমানুষ ঘরে এনেছি কেন ?আমি কি বাইরে যাবো শালী --এখন আমার সোহাগ ভালো লাগছেনা বুঝি ,দেখ আজ তোকে সোহাগ কেমন দেখাচ্ছি,প্রতিমার শরীরটা যেন নিংরে খেলো,ওর মুখ থেকে কেমন গোঁ গোঁ শব্দ,প্রতিমার শরীটা অসার-- মনে মনে ভাবতে লাগলো,কেন এই মেয়ে মানুষের ঘেন্নার জেবন রোজ রোজ শরীরের জ্বালা মেটানো,মেয়েমানুষ বলে কি সাধ আহ্লাদ থাকতি নেই !তার ইচ্ছে নেই ,শুধু অন্যের ইচ্ছেয় এই বেঁচে থাকা ,তার ইচ্ছে পূরন করা ,আমি কি একটু নিজের ইচ্ছেয় বাঁচতে পারি নে,তার অধিকার নেই ,চোখের জল ফেলতে ফেলতে কখন দুচোখের পাতা একহয়ে বুজে গেছে,নিজেরই অজান্তে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract