দামিনী
দামিনী
উপরে নীল আকাশ। নিচে বিস্তৃত সবুজ ঘাসের মাঠ। চারিদিকে ঘন বনানি । ছোট্ট একটি পুকুর পারে চাঁপা ফুলের গাছ। গাছে ঠেস দিয়ে বসে আছি একটি সুন্দরী মেয়ে। নাম তার দামিনী। কালো মুচমুচে চেহারা । হাঁটু উপরে পড়া একটি মাত্র শাড়ি । কিছুটা খোলা গায়ে নব যৌবনের পরশ। কালো মেঘের মতো চুল ছড়িয়ে পড়েছে। চোখে বল হরিণের চমক। এলোমেলো বাতাসে চুল উড়ছে। একটি ঘাস তুলে নিয়ে দাঁতে চিবাতে লাগলো। কি যেন একটা গান গুনগুন করছে। মাঝে মাঝে মুখে মৃদু হাসি।
এমন সময় লুঙ্গি ভাঁজ করে হাঁটুর উপরে তোলা, উন্মুক্ত শরীর, হাতে লাঠি একটি মরদ এসে ওখানে পৌঁছল।সে তার ছাগলকে ডাকতে লাগল।ছাগলটিকে সে ওই চাঁপা গাছে বেঁধে রাখল। হঠাৎ একে অপরকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকলো। মেয়েটি ওকে কি যেন ইশারা করলো। ছেলেটি এসে ওর গা ঘেঁষে বসলো। ওদের মধ্যে কত টুপটাপ কথা, কত হাসি ঠাট্টা, কত ছোঁয়াছুঁয় িি, কত কিছু চলল। একটু একটু জলের ছিটে ওদের গায়ে লাগলো। ওদের মেলামেশা যেন আরো বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠলো।
দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটি তাড়াতাড়ি দৌড়ে দৌড়ে বাড়ি পালালো। এরপরে একদিন ওদের গ্রামে টুসু পরব পালন হচ্ছিল। হালকা ফুলকা সরাব গিলে।ওদের মাছ গানের আসর বেশ জমছিল। নাচতে নাচতে হঠাৎ দামিনী মাথা ঘুরে পড়ে গেল। সবাই ধরাধরি করে ওকে একটা ছোট্ট শুইয়ে দিল। দাই যখন ওকে দেখতে এলো সে মাথায় হাত দিয়ে বসলো। বলল এ যে তিন মাসের গর্ভবতী গো। দামিনী এ কথা শুনে লজ্জায় জড় সর হয়ে গেল। সে পাগলের মত সেই সেদিনের ছেলেটিকে খুঁজতে লাগলো।
কিন্তু সেই ঘন বানানির মধ্যে কোথায় যেন সে হারিয়ে গেছিল। সে খুঁজতে খুঁজতে জঙ্গলের মধ্যে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। কিন্তু ওর দেখা পেল না। তারপর থেকে গ্রামে আর দামিনীর দেখা পাওয়া যায় না ।
কেউ বলে ওকে শেয়াল নিয়ে গেছে আবার কেউ বলে ওকে পিশাচ নিয়ে গেছে।

