ভালোবাসার বন্ধন
ভালোবাসার বন্ধন


ছোট্ট একটি গ্রাম আবন্তীপুর। সেই গ্রামের একটি কৃষক পরিবারের মেয়ে অবন্তিকা। অবন্তিকার বন্ধু নীহারিকা । নীহারিকা ওই গ্রামেরই সরপঞ্চের মেয়ে। দুজনে ছেলেবেলা থেকে একসঙ্গে মানুষ হয়েছে। ওরা একে অপরকে ছেড়ে এক মুহূর্তও থাকতে পারে না। ধীরে ধীরে ওরা বড় হল। ওদের বাবা-মা ওদের বিয়ের জন্য পাত্র স্থির করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। এই খবরটি শুনে ওদের মন খারাপ হয়ে গেল।
ওরা ভাবলো ওদের বিয়ে হলে তো ওদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাবে। কে কোথায় থাকবে কিছুই জানা নেই। তাই ওরা একটি উপায় চিন্তা করল। সেদিন গ্রামে যাত্রা চলছিল। গ্রাম শুদ্ধ লোক যাত্রা দেখতে মসগুল। এর সুযোগ নিয়ে ওরা দুজনে ওদের বিয়ের জন্য রাখা কিছুগয়না সাথে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে দিল ।
সারারাত অনিদ্রা থাকার কারণে ওদের বাড়ির লোকেরা দিনের বেলায় উঠতে দেরি করল। ওরা উঠে জল খাবারের টেবিলে ওদের না দেখতে পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করল ।
ওরা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে পৌঁছল
কো লকাতায় ।
ওদের হাতে পয়সাপত্র কিছুই ছিল না । তাই ওরা একটি স্যাকরার দোকানে গিয়ে পৌঁছলো ,ওদের গয়নাগাটি বন্ধক রেখে কিছু টাকা নেওয়ার জন্য । স্যাকরা ওদের বলল
গয়নাগুলো এমন কিছু খাঁটি সোনার তৈরি নয়, তাই তোমাদের আমি খুব একটা বেশি কিছু টাকা দিতে পারব না। নীহারিকা বলল তুমি আমাদের ঠকাতে চাইছো। আমরা অন্য দোকান দেখবো । আমাদের গযনা ফিরিয়ে দাও । ওদের হাত ভাব দেখে দোকানদারের সন্দেহ হলো।সে এ সম্পর্কে থানায় খবর দিতে গেল।
দোকানদার মোবাইলে ওদের ফটো তুলে নিয়েছিল আর ওদের ভয়েস রেকর্ডিং করে নিয়েছিল। থানার ইনচার্জ এসব জানার পর খবর কাগজে ওদের ফটো ছাপিয়ে একটা ফোন নম্বর দিল এদের খোঁজ পেলে সেই নাম্বারে যোগযোগ করার জন্য। সরপঞ্চের হাতে সে খবার কাগজ পড়লো । সে ফোন করে থানায় জানিয়ে দিল ওরা আমাদের গ্রামের মেয়ে এবং তার মধ্যে একটি মেয়ে আমার । থানা ইনচার্জ
ও দের কোলকাতার অফিসে আসতে বলল । দুই পরিবারের লোক একসাথে গিয়ে থানায় হাজির হলো। পুলিশ চারদিকে লোক পাঠিয়ে
ওদের থানায় ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল । এই সময় পরিবারের লোকেরা এসে ওখানে পৌঁছল। ওরা মেয়েদের ফিরে পেয়ে খুব খুশি হল । ওদের মুখ থেকে ওদের বাবা মারা সব কথা শুনে ওদের বলল ঠিক আছে তোমরা যা চাইছো তাই হবে। সরপঞ্চ ওদের জন্য একটি সুন্দর বাড়ি বানিয়ে দিল ।ওরা দুজনে গ্রামের সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করল । সেদিন থেকে খুশি খুশি ওরা সারা জীবন একসাথে রইল।