দাদুভাই
দাদুভাই


"হ্যাঁ ফুলগুলো ভালো করে লাগিয়ে এমনভাবে টুনি গুলো লাগাবেন সারা বাড়িটা যেন আলোয় ঝলমল করে"।
বলেই তিতলি ছুটলো প্যান্ডেল তত্ত্বাবধানে।আজ দত্ত বাড়িতে খুশির জোয়ার।
কি ভাবছেন বিয়ে,পৈতের মতো শুভ অনুষ্ঠানের বাড়ি?আজ্ঞে না! এ অনুষ্ঠানটি শুভ, তবে অন্যদিকে!দত্ত বাড়ির ৭৫ বছরের কর্তা এককালের সব্জী বিক্রেতা আজ মাধ্যমিকের গণ্ডী পেরোলেন।ডাক্তার ছেলের বাবা হিসেবে বড় হীনমন্যতায় ভুগতেন, অভাবের জন্য আট পাশ করে আর পড়া হয়নি বলে।কালির ছোঁয়া ওঁর জীবনে এতটুকুই! হাতের লেখাটা এখনও ভালোই আছে।হিসেব নিকেষেও পাকা।নাতনীও তাঁর ডাক্তারীর ছাত্রী।একদিন নাতনীকে মনের কথা জানিয়েছিলেন।বিদ্যার পাহাড়ের স্তুপের মাঝে নিজের উত্তরণ দেখতে চেয়েছিলেন।তবে অভাবের তাড়নায় তা আর হয়ে ওঠেনি।স্বপ্ন বাস্তব হলো নাতনী তিতলির তত্ত্বাবধানে। আজকে বাড়ির হিরো তিতলির দাদু।কলমের ছোঁয়ায় তাঁর জীবন আজ সার্থক।সব আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা তিতলি।যেসব সমবয়সী বুড়ো থেকে পাড়ার ছোকরারা টিটকিরি মারতো 'বুড়ো বয়সে ধেড়ের নাচন' বলে,তাদের মুখে ঝামা ঘষে,লেখা-পড়ার কোনো বয়স হয়না সেটা বোঝাতে ফোকলা দাঁতের হাসি দিয়ে তাদের আরো জ্বালাতে আজকের অনুষ্ঠানে আসার নেমতন্নটাও তাদের করে এসেছেন একটু আগে।।
সমাপ্ত
*****