Sudeshna Mondal

Drama Inspirational

3  

Sudeshna Mondal

Drama Inspirational

বড়দিন

বড়দিন

2 mins
254



রাধিকা সেনবাড়ির ছোটছেলে সৌজন্যের বউ। দেখতে দেখতে প্রায় ছয়মাস হয়ে গেছে ওদের বিয়ের। এই কমাসে এই বাড়ির সবার সাথেই মিলেমিশে গেছে রাধিকা। বিশেষ করে ওর মামণি, মানে সৌজন্যের মা শোভনাদেবীর খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে রাধিকা। উনি ওকে বউমা নয় নিজের মেয়ের মতোই আগলে রাখেন, ভালোবাসেন। শোভনাদেবীর জন‍্যেই রাধিকা খুব সহজেই এই যৌথপরিবারে নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছে। সারাদিন তেমন কোনো কাজ না থাকায় ও আলমারি থেকে ফোটোর অ্যালবামটা বের করে দেখছিল। মনে মনে ভাবছিল কালকের দিনে প্রতিবছর ওদের ওখানে পিকনিক হতো। কত মজা করত ওরা সবাই মিলে। ব‍্যাডমিন্টন, গানের লড়াই আরও কত মজা হতো। কিন্তু এইবছর ওখানে সব কিছু হলেও ও থাকতে পারবে না। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ওর চোখটা লেগে গিয়েছিল ও বুঝতে পারে নি। ওর ঘুম ভাঙল ওর মামণির ডাকে। পরেরদিন সকালে বাড়ির সবাইকে দেখতে না পেয়ে ও বাগানে এল। ওর বর, ভাশুর, জা, ননদরা মিলে পিকনিকের আয়োজন করছে। ওতো এসব দেখে ভীষণ খুশি হল। কিন্তু হঠাৎ করে এসবের আয়োজন দেখে একটু অবাক হল। কারণ কালকে তো কেউ ওকে বলেনি এই ব‍্যাপারে। এমন সময় পিছন থেকে মামণির গলার আওয়াজ পেয়ে ঘুরে তাকাল।

-কীরে কেমন সারপ্রাইজটা দিলাম?

-মামণি..

-আসলে কালকে তোকে ডাকতে গিয়ে দেখলাম তুই অ্যালবাম দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছিস। অ্যালবামটা বন্ধ করতে গিয়ে দেখলাম ওখানে অনেক পিকনিকের ছবি রয়েছে। প্রতিবছর যদি তুই বড়দিনে পিকনিকের আনন্দ নিস তাহলে এইবছর বাদ যাবে কেন এইভেবে আমিও আজকে আয়োজন করে ফেললাম। অবশ্য সবাই সায় না দিলে আমার একার পক্ষে এতকিছু করা সম্ভব হত না।

ও খুশিতে ওর মামণির গলা জড়িয়ে ধরে।

-আর একটা কথা আজ কিন্তু আমার সাথে ব‍্যাডমিন্টনও খেলতে হবে তোকে। গানের লড়াই তো আছেই।

রাধিকা হাসতে হাসতেই বলল- হুম, খেলব তো। আর তোমাকে হারিয়েও দেব।

-তা তুই কি সবকিছু এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই করবি নাকি ওখানে যাবিও। চল এবার তাড়াতাড়ি। আমার আর তর সইছে না। মনে হচ্ছে যেন নিজের ছোটবেলায় ফিরে গেছি।

ওরা দুজনে মিলে বাকি কাজগুলো চটপট করে সেরে ফেলল। ওদের দেখে মনে হচ্ছে

শাশুড়ি-বউমা নয় ঠিক যেন মা-মেয়ে মিলে কাজ করছে।

বাড়ির সবাই আনন্দে-উল্লাসে মেতে উঠেছে। আজ বহুদিন পর শোভনাদেবীও ব‍্যাডমিন্টন হাতে রাধিকার সাথে জমিয়ে পাল্লা দিচ্ছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর নিজের মাকে অনেকদিন বাদে এমন প্রাণোচ্ছল দেখে সৌজন্যও খুব খুশি। তাই ও মনে মনে প্রার্থনা করে এমন বড়দিন যেন ওদের জীবনে প্রতিবছর আসে। হইহুল্লোড়, হাসি-ঠাট্টা, গানবাজনা, কফি, আর পাম কেকে জমে ওঠে ওদের বড়দিনের সকালটা। নাগরিক মহাজীবনে শীতল বাতাস বইলেও ওদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কের উষ্ণতার ছবিগুলো ধরা থাকে ওদের ক‍্যামেরার সুখী সুখী জলছবিতে।

(সমাপ্ত)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama