অসুর রূপেণ
অসুর রূপেণ
...যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা
নমস্তস্যই নমস্তস্যই নমস্তস্যই নমো নমঃ।...
- বৌমা ভাতটা নামালে? অরুণ বেরোবে তো... এদ্দিন সংসার করছে, এখনও সময়ের কাজ সময়ে করতে শিখলো না! - গজরাতে থাকেন সুলতা।
এখনও শুয়ে আছে মেয়েটা? ছেলেটা অফিস যাবে, হুঁশই নেই? রেডিওর মহালয়াটা খট করে বন্ধ করে দেন সুলতা। অরুণ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখে মা একেবারে উগ্রচণ্ডী-রূপে দাঁড়িয়ে!
- তোর বুঝি আজ অফিস নেই? সে মহারাণী এখনও বিছানা ছেড়ে ওঠেননি, তাই না?
সুলতা ঘরে ঢুকতে যেতেই বাধা দেয় অরুণ - মা, ওকে বিশ্রাম নিতে দাও। আজ অফিসে খাওয়া দাওয়া আছে, খাবার নিয়ে যাবো না।
- তা তোর খাবার বানানো ছাড়া আর কি সংসারে কাজ নেই? পাঁচটা বাজে, বাড়ির বৌ এখনও শুয়ে থাকবে?
- বাবা তর্পনের জন্য যাত্রা করার পর তো শুয়েছে সে! তাছাড়া, ওর আট মাস ক্রস করে গেছে মা, ডাক্তারের পরামর্শ সত্ত্বেও শুধু তোমার কথা ভেবে বাপের বাড়ি যায়নি, সংসার সামলাচ্ছে আগের মতই। ওর শরীরের খেয়াল রাখাটাও দরকার, মা।
- কি কুক্ষণে যে তোকে বাংলা পড়িয়েছিলাম , আজ বড় প্রফেসর হয়েছিস বলে মাকে নীতি-শিক্ষা দিচ্ছিস? বলি সংসারটা তো তারই, সে কাজ করবে না তো কে করবে শুনি, আমি?
- কাজের দিদি আগের মত কাজ করতে না পারলেও লকডাউনের জন্য তাকে ছাড়াইনি। দিদি ঠিক থাকলে, ওর পরিশ্রমও কম হতো। তবুও তো তোমাকে কাজ করতে কখনও সে বলেনি মা, তুমি...
- খুব হয়েছে, স্ত্রৈণ কোথাকার... সক্রোধে প্রস্থান করেন সুলতা।
ঘরে ঢোকে অরুণ। কাল রাতেই তার ঘরে জন্ম নিয়েছে তার মেয়ে 'মহামায়া'। বাবা আর ডাক্তার রয়েছেন ঘরে। বাবার প্ল্যান মতই মা'কে কিছু বলেনি অরুণ।
রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে না ঘুমালে ঠিক সব টের পেতেন সুলতাও!
