অসহায় প্ৰেম
অসহায় প্ৰেম
নিলয় মানে নীলু আর রঞ্জনা মানে রঞ্জু - দুজনে একে অন্যকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। নীলু M. A.পাস করে রেজিস্টার্ড বেকার - সম্বল দুইটি টিউশন। রঞ্জু এবার স্কুল ফাইনাল পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে।আমাদের বাংলা দেশে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়া মানে বিবাহযোগ্য হয়ে যাওয়া, আর তাই রঞ্জুর জন্য পাত্র দেখা শুরু হয়েছে।
রঞ্জু কঠিন মুখ করে বলল, কাল আমাকে দেখতে আসবে। নীলু রঞ্জুর কথা শুনল বলে মনে হল না। দমকা বাতাস দিচ্ছিল। খুব কায়দা করে তাকে সিগারেট ধরাতে হচ্ছে। কথা শুনবার সময় নেই। রঞ্জু আবার বলল, আগামী কাল সন্ধ্যায় আমাকে দেখতে আসবে। কে আসবে? মাঝে-মাঝে নীলুর বোকামিতে রঞ্জুর গা জ্বালা করে। এখনো তাই করছে। নীলু আবার বলল, কে আসবে সন্ধ্যাবেলা? রঞ্জু থেমে থেমে বলল, আমার বিয়ের কথা হচ্ছে।
পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। নীলুকে এ খবরে বিশেষ উদ্বিগ্ন মনে হল না। সে সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, আসুক না। রঞ্জু বলল,আসুক না মানে? যদি আমাকে পছন্দ করে ফেলে? নীলু গম্ভীর হয়ে বলল, পছন্দ করবে না, তোমাকে যেই দেখবে সেই ট্যারা হয়ে যাবে। রঞ্জু রেগে গিয়ে বলল, তোমার মতো যারা গাধা শুধু তাদের চোখই ট্যারা হবে। নীলু রাস্তার লোকজনদের সচকিত করে হেসে উঠল।
রঞ্জু বলল, আস্তে হাঁটো না, দৌড়াচ্ছ কেন? নীলু এ-কথাতেও হেসে উঠল। কী কারণে জানি তার আজ খুব ফুর্তির মুড দেখা যাচ্ছে। গুনগুন করে গানের কী একটা সুর ভাজল। সচরাচর এরকম দেখা যায় না। রাস্তায় সে ভারিক্কি চালে হাঁটে। রঞ্জু সিনেমা দেখবে নাকি একটা? না। চল না যাই। রঞ্জু চুপচাপ হাঁটতে লাগল। কথা বলছ না যে? দেখবে? উহুঁ। বাড়িতে বকবে। কেউ বকবে না। মেয়েদের বিয়ের কথাবার্তা যখন হয় তখন মায়েরা তাদের কিছু বলে না। কে বলেছে তোমাকে? আমি জানি। তখন মায়েদের মন খুব খারাপ থাকে। মেয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে। এইসব সেন্টিমেন্টের ব্যাপার তুমি বুঝবে না। চল একটা সিনেমা দেখি। না। বেশ তাহলে চল কোনো ভালো রেস্টুরেন্টে বসে চা খাওয়া যাক। রঞ্জু আড়চোখে খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, খুব পয়সা হয়েছে দেখি। নীলু আবার হেসে উঠল, পরক্ষণেই গম্ভীর হয়ে বলল, কী ভেবেছ তুমি? রোজ তোমার পয়সায় চা খাব? এই দেখ।
দুটি পঞ্চাশ টাকার নোট বের করল। রঞ্জু কোনো কথা বলল না। তুমি এত গম্ভীর কেন রঞ্জু ? তোমার মতো শুধু-শুধু হাসতে পারি না। বাসায় যাব, এখন চা-টা খাব না। প্লিজ রঞ্জু , এরকম কর কেন তুমি? রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই বড়-বড় ফোটায় বৃষ্টি পড়তে লাগল। নীলু ছেলেমানুষের মতো খুশি হয়ে বলল, বেশ হয়েছে। যতক্ষণ বৃষ্টি না থামবে ততক্ষণ বন্দী । সে এবার আরাম করে আরেকটি সিগারেট ধরাল।
রঞ্জু বলল, এই নিয়ে কটি সিগারেট খেলে? এটা হচ্ছে ফিফথ। সত্যি? হুঁ। গা ছুঁয়ে বল। আহ কী সব মেয়েলি ব্যাপার। গা ছুঁয়ে বললে কী হয়? হোক না হোক তুমি বল। নীলু ইতস্তত করে বলল, আর সিগারেট খাব না। ওয়ার্ড অব অনার। মরদক বাত হাতি কা দাঁত। তারা রেস্টুরেন্ট থেকে বেরুল সন্ধ্যার ঠিক আগে-আগে। বৃষ্টি নেই। নিয়ন আলোয় ভেজা রাস্তা চিকমিক করছে। নীলু বলল, রিকশা করে একটু ঘুরবে রঞ্জু ? উঁহু। বেশ। চল রিকশা করে তোমাকে বাড়ীর মোড় পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।
হ্যাঁ, পরে কেউ দেখুক। সন্ধ্যাবেলা কে আর দেখবে? একটা রিকশা ডাকি? আচ্ছা ডাকো। রিকশায় উঠতে গিয়ে নীলু দেখল রঞ্জুর চোখ দিয়ে জল পড়ছে। সে দারুণ অবাক হয়ে গেল। কী ব্যাপার রঞ্জু ? খুব খারাপ লাগছে। কাল যদি ওরা আমাকে পছন্দ করে ফেলে? নীলু দরাজ গলায় হেসে উঠল— করুক না পছন্দ, আমরা কোর্টে বিয়ে করে ফেলব। তারপর আমাকে তুলবে কোথায়, খাওয়াবে কী? দুটি টিউশনি ছাড়া আর কী আছে তোমার?
এম.এ. ডিগ্রিটা আছে। সাহস আছে। আর … আর কী? আর আছে ভালোবাসা। নীলু এবং রঞ্জু দুজনেই এবার একত্রে হেসে উঠল। নীলু অত্যন্ত উৎফুল্ল ভঙ্গিতে আরেকটি সিগারেট ধরাল। রঞ্জু মৃদুস্বরে বলল, এই তোমার সিগারেট ছেড়ে দেয়া? ফেল এক্ষুনি। এটাই লাস্ট ওয়ান। উহুঁ। নীলু সিগারেট ছুড়ে ফেলল রাস্তায়। পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে সন্ধ্যাবেলা কিন্তু তোড়জোড় শুরু হল সকাল থেকে।
রঞ্জুর বড়ভাই এই উপলক্ষে অফিসে গেলেন না। রঞ্জুর ছোটবোন অঞ্জুও স্কুলে গেল না। এই বিয়ের যিনি উদ্যোক্তা— রঞ্জুর বড়মামা, তিনিও সাতসকালে এসে হাজির। রঞ্জু তার এই মামাকে খুব পছন্দ করে কিন্তু আজ যখন তিনি হাসিমুখে বললেন, কী রে রঞ্জু সোনা , কী খবর? তখন রঞ্জু শুকনো মুখে বলল, ভালো। মুখটা এমন হাঁড়ির মতো করে রেখেছিস কেন? তোর জন্যে একটা শাড়ি এনেছি। দেখতে পছন্দ হয় কি না।
শাড়ি কীজন্যে মামা? আনলাম একটা ভালো শাড়ি। এই শাড়ি পরে সন্ধ্যাবেলা যখন যাবি ওদের সামনে। রঞ্জু নিঃশব্দে ঘর ছেড়ে এল। রান্নাঘরে রঞ্জুর বৌদি রীনা মাছ কুটছিল। কলেজ যেদিন ছুটি থাকে সেদিন রঞ্জু রান্নায় সাহায্য করার নামে বসে-বসে গল্প করে। আজ রঞ্জু দেখল রীনা বৌদির মুখ গম্ভীর। রঞ্জু পাশে এসে বসতেই সে বলল, তোমার ভাই কাল রাতে আমাকে একটা চড় মেরেছে।
তোমার বিশ্বাস হয় রঞ্জু ? রঞ্জু স্তম্ভিত হয়ে গেল। রীনা বলল, তুমি বিয়ে হয়ে চলে গেলে আমার কেমন করে যে দিন কাটবে। রঞ্জু বলল, দাদাটা একটা অমানুষ। অভাবে-অভাবে এরকম হয়েছে বৌদি । তুমি কিছু মনে করো না। না, মনে করব কী? আমার এত রাগটাগ নেই। দুজনে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। রীনা একসময় বলল, তোমার দাদা পাঁচ টাকা মানত করেছে। তোমাকে যদি ওদের পছন্দ হয় তবে পাঁচ টাকা ভগবানকে দেবে।
রঞ্জু কিছু বলল না। রীনা বলল, পছন্দ তো হবেই। তোমাকে পছন্দ না করলে কাকে করবে? তুমি কি আর আমার মতো? কত মানুষ যে আমাকে দেখল রঞ্জু , কেউ পছন্দ করে না। শেষকালে তোমার ভাই পছন্দ করল। সুন্দরটুন্দর তো সে বোঝে না। রঞ্জু হেসে উঠল। রীনা বলল, চা খাবে? রঞ্জু জবাব দিল না। তোমাকে চা খাওয়াবার সুযোগ কি আর হবে? বড়লোকের বউ হবে। মামা বলেছিলেন ওদের নাকি দুটি গাড়ি। একটা ছেলেরা ব্যবহার করে, একটা বাড়ির মেয়েরা। রঞ্জু চুপ করে রইল।
রীনা বলল, ছেলের এক কাকা হাইকোর্টের জজ। হাইকোর্টের জজ দিয়ে আমি কী করব বৌদি ? তুমি যে কী কথা বল রঞ্জু , হাসি আসে । দুপুর থেকে রঞ্জুর দাদা গম্ভীর হয়ে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। তাঁকে খুব উদ্বিগ্ন মনে হল। রঞ্জু ভেবে পেল না এই সামান্য ব্যাপারে দাদা এত চিন্তিত হয়ে পড়েছে কেন। একটি ছেলে মোটা মাইনের একটা চাকরি করলে এবং কলকাতা শহরে তার ঘরবাড়ি থাকলেই এরকম করতে হয় নাকি? অকারণে রীনা রঞ্জুর দাদার কাছে ধমক খেতে লাগল।
বললাম একটা ফুলদানিতে ফুল এনে রাখতে। এই বুঝি ঘর পরিষ্কারের নমুনা? টেবিলক্লথটাও ইস্ত্রি করিয়ে রাখতে পার নি? রঞ্জুর বড়মামা অনেকবার তাকে বুঝালেন কী করে প্রণাম জানিয়ে ঘরে ঢুকতে হবে। নম্র ভঙ্গিতে চা এগিয়ে দিতে হবে। কিছু জিজ্ঞেস করলে খুব কম কথায় উত্তর দিতে হবে। রঞ্জুর রীতিমতো কান্না পেতে লাগল। সাজগোজ করাবার জন্যে মামী এলেন বিকেলবেলা। সন্ধ্যা হবার আগেই রঞ্জু সেজেগুজে বসে রইল। সমস্ত ব্যাপারটি যেরকম ভয়াবহ মনে হয়েছিল সেরকম কিছুই হল না। ছেলের বাবা খুব নরম গলায় বললেন, কী নাম মা তোমার? রঞ্জনা।
খুব কাব্যিক নাম। কে রেখেছে? বাবা। তিনি আর কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না। দেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে রঞ্জুর মামার সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন। ছেলে নিজেও এসেছিল। রঞ্জু তার দিকে চোখ তুলে তাকাতেও পারল না। চা-পর্ব শেষ হবার পর রঞ্জু যখন চলে আসছে তখন শুনল একজন ভদ্রমহিলা বলছেন, খুব পছন্দ হয়েছে আমাদের। আগস্ট মাসে বিয়ে দিতে আপনাদের কোনো অসুবিধা আছে? রঞ্জুর কান ঝাঁ ঝাঁ করতে লাগল।
রীনা রান্নাঘরে বসে ছিল। রঞ্জুকে দেখেই বলল, টিপটা ভেঙে দু-টুকরা হয়েছে। তোমার ভাই শুনলে কী করবে ভেবে আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। কী দুর্লক্ষণ । ওমা কাঁদছ কেন, কী হয়েছে? রঞ্জু প্রায় দৌড়ে এসে তার বৌদিকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠল— বৌদি আমি নীলুকে বিয়ে করব। আমার মরে যেতে ইচ্ছে হয়। তুমি দাদাকে বল বৌদি। আমি? আমার সাহস হয় না। হায় রে কী করি। চুপ রঞ্জু চুপ। ভালো করে সব ভাব।
এক্ষুনি জানাজানির কী দরকার। আমি ভাবতে পারি না বৌদি। রঞ্জু এ কয়দিন কলেজে যায় নি। দিন সাতেক পর যখন প্রথম গেল, ক্লাসের মেয়েরা অবাক হয় বলল, বড় রোগা হয়ে গেছিস তুই। অসুখবিসুখ নাকি? সে চুপ করে রইল। কেমন গোলগাল মুখ ছিল তোর, এখন কীরকম লম্বাটে হয়ে গেছে। কিন্তু বেশ লাগছে তোকে ভাই। ক্লাসে মন টিকল না রঞ্জুর। ইতিহাসের অমল স্যার ঘুমপড়ানো সুরে যখন পাল ডায়ানিস্টি পড়াতে লাগলেন তখন ছাত্রীদের স্তম্ভিত করে রঞ্জু উঠে দাঁড়াল। স্যার আমার শরীর খুব খারাপ লাগছে।
বাসায় যাব। অমল স্যার অতিরিক্ত রকম ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। বেশি খারাপ? সঙ্গে কোনো বন্ধুকে নিয়ে যাবে? না স্যার, একাই যাব। রঞ্জু ক্লান্ত পায়ে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে কলেজ গেটের সামনে নীলু দাঁড়িয়ে আছে। শুকনো মুখ। হাতে একটা কাগজের ঠোঙা। গত তিনদিন ধরে আমি রোজ একবার করে আসি তোমাদের কলেজে। রঞ্জু বলল, এই কদিন আসি নি, শরীর ভালো না। দুজন পাশাপাশি কিছুক্ষণ নিঃশব্দে হাঁটল । তারপর নীলু হঠাৎ দাঁড়িয়ে থেমে বলল, আগস্ট মাসের ৯ তারিখে তোমার বিয়ে? কে বলল? কার্ড ছাপিয়েছ তোমরা।
রেখার কাছে তোমার বিয়ের কার্ড দেখেছি। রঞ্জু চুপ করে রইল। নীলু এত বেশি উত্তেজিত ছিল যে, সহজভাবে কোনো কথা বলতে পারছিল না। কোনোমতে বলল, কার্ড দেখেও আমার বিশ্বাস হয় নি। তুমি নিজের মুখে বল। রঞ্জু মৃদুস্বরে বলল, না সত্যি না। তোমাকেই বিয়ে করব আমি। কবে? আজই। নীলু স্তম্ভিত হয়ে বলল, তোমার মাথা ঠিক নেই রঞ্জু । মাথা ঠিক আছে। কোর্টে মানুষ কীভাবে বিয়ে করে আমি জানি না। নীলু বলল, চল আমার মেসে। কী হয়েছে সবকিছু শুনি।
সে রঞ্জুর হাত ধরল। নীলুর নুতন শিয়ালদহের মেসে রঞ্জু আগে অনেকবার এসেছে। দুপুরের গরমে বসে অনেক সময় গল্প করে কাটিয়েছে কিন্তু আজকের মতো কুলকুল করে ঘামে নি কখনো। নীলু বলল, তোমার শরীর খারাপ হয়েছে রঞ্জু , বড় ঘামছ। আমার কিছু হয় নি। চা খাবে? চা দিতে বলব? উহুঁ। জল খাব। নীলু পানির গ্লাস নিয়ে এসে দেখে রঞ্জু হাত-পা এলিয়ে বসে আছে। চোখ ঈষৎ রক্তাভ। জলের গ্লাস হাতে নিয়ে সে ভাঙা গলায় বলল, রেখা তোমাকে আমার বিয়ের কার্ড দেখিয়েছে? হুঁ।
আর কী বলেছে সে? বলেছে, তোমাকে নাকি ফরসা মতন রোগা একটি ছেলের সঙ্গে দেখেছে। রঞ্জু বলল, ওর নাম জীবন । ওর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার। নীলু কিছু বলল না। রঞ্জু বলল, ঐ ছেলেটির সঙ্গে আমার বিয়ে হলে তুমি কী করবে? কী করব মানে? রঞ্জু ভীষণ অবাক হয়ে বলল, কিছু করবে না তুমি? তোমার শরীর সত্যি খারাপ রঞ্জু তুমি বাসায় যাও। বিশ্রাম কর। রঞ্জু রিকশায় উঠে ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। আমি তোমার সঙ্গে আসব? বাসায় পৌঁছে দেব? উহুঁ।
রঞ্জু বাসায় পৌঁছে দেখে অনেক লোকজন। মেদিনীপুর থেকে পিসির বাড়ীর লোকেরা এসেছেন। বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে তুমুল হইচই। রঞ্জু আলগাভাবে ঘুরে বেড়াতে লাগল। সন্ধ্যায় চা খেতে বসে সেজো পিসির হাসির গল্প শুনে উঁচু গলায় হাসল। কিন্তু রাতের বেলা অন্যরকম হল। সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রঞ্জু গিয়ে তার দাদার ঘরে ধাক্কা দিল।
রীনা বেরিয়ে এসে অবাক হয়ে বলল, কী হয়েছে রঞ্জু ? রঞ্জু ধরা গলায় বলল, বড় কষ্ট হচ্ছে বৌদি । রীনা রঞ্জুর হাত ধরল। কোমল স্বরে বলল, ডাকব তোমার দাদাকে? কথা বলবে তার সাথে? ডাকো। রঞ্জুর দাদা সঙ্গে-সঙ্গে ঘুম থেকে উঠে এলেন। অবাক হয়ে বললেন, কী রে রঞ্জু কিছু হয়েছে? রঞ্জু বলল, কিছু হয় নি দাদা। তুমি ঘুমাও। তার চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল।
একটা অসহায় ভালোবাসার মৃত্যুর দুঃখে চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কী সে করতে পারে - যাকে বিশ্বাস করে হাত ধরেছিল সেই যদি ভালোবাসার সন্মান রক্ষা করতে রাজী না হয়, তাহলে এত বড় পরাজয় মেনে নিতে কী কষ্টে বুক ফেটে যায় না?
