Debashis Roy

Tragedy

2  

Debashis Roy

Tragedy

অনিমেষ দৃষ্টি

অনিমেষ দৃষ্টি

7 mins
934


  মানুষের সফলতার পিছনে বুদ্ধি (IQ) যতো না প্রয়োজন, তার থেকে অধিক প্রয়োজন 'আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা' (EQ)। মনোবিজ্ঞানী গবেষকদের দীর্ঘ গবেষণার ফলপ্রসূ অনুযায়ী বলা যায় যে, মানুষের সফলতার জন্য বুদ্ধি (IQ) যদি ২০ শতাংশ প্রয়োজন হয়, তাহলে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন ৮০ শতাংশ! গবেষণায় আরো বলা হয়েছে যে, যেসব মানুষের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা কম তাদের মধ্যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটার হার অনেক বেশী। অন্যদিকে যেসব মানুষের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা অনেক বেশী তাদের মধ্যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুব কম। সুতরাং মানুষের 'আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা' হচ্ছে এমন এক অদম্য শক্তি, যে শক্তির মাধ্যমে মানুষ তার নিজের ও চারপাশের মানুষের আবেগকে অতি সহজেই অনুধাবন করতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী নিজের ও অন্যের কল্যাণে নেতিবাচক প্রভাবকে দূরিভূত করে ইতিবাচক প্রভাবের দিকে অগ্রসর হতে পারে। যে প্রভাব শুধু নিজের নয়, নিজের ও সমাজের মানুষের কল্যাণে প্রভূত উন্নতিসাধন করতে পারে। একটি বাস্তব ট্রাজেডি ঘটনা বিবরণের মাধ্যমে অতি সহজেই পাঠক বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবেন।


        আমরা জানি, ত্রিকোণ প্রেম কারো জীবনে কখনো সুখকর বয়ে আনেনি! তবুও সেই করুণ প্রেমের এক অমর প্রেমকাহিনী----


        রঞ্জন স্থির, ভাবগম্ভীর! চিরদিন সে কবিতাপ্রেমী। আবেগীয় মন কখনো সখনো ডুব দেয় কবিতার ভুবনে! যে মন কিনা মনের অজান্তে ডুব দিয়েছিলো অঞ্জনার মন গহীনে; যে অঞ্জনা সাদামাটা, সহজ- সরল এক মেধাবিনী মেয়ে; যে কিনা মনের অজান্তে মন দিয়েছিলো চঞ্চল, অস্থির, বাগ্মী অঞ্জনের মনে; যে অঞ্জন ছিলো রঞ্জনেরই অন্তরঙ্গ বন্ধু; যে বন্ধু চেয়েছিল রঞ্জন যেন সর্বক্ষণ তাদের আশেপাশে থেকে উন্নতিসাধন ও মঙ্গল কামনা করে! রঞ্জন চিরদিন পরোপকারী, ত্যাগে তার অসীম ধর্ম। শরীরস্থ ষড়রিপু অর্থাৎ- কাম ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। মনের বিনিময় মন পেতে হবে, দানের বিনিময় দান পেতে হবে, একথা সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেনি কোনদিন। সে সর্বদাই চেয়েছিলো দু'জনার আশেপাশে চিরদিন থাকতে। দু'জনার প্রেমকে অমর প্রেমে পরিণত করতে, কিন্তু, দিন যতো এগিয়ে চলতে লাগলো, মানুষিকভাবে নানাদিক হতে নানাভাবে তাকে উৎপীড়নে উৎপীড়িত হতে হলো, এমন একটা সময় উপস্থিত হল, নীরবে নিঃশব্দে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ রইলো না সম্মুখে। আবেগীয় মন, আবেগীয় তাড়নায় ডুব দিলো কবিতার ভুবনে। প্রতিটা দিনের, প্রতিটা ঘটনার, প্রতিদিনের মুখের ঝরেপড়া প্রতিটা শব্দের সমন্বয় সৃষ্টি হল অসংখ্য বাস্তবোচিত সব কবিতা! একদিন সেই কবিতাও খুঁজে নিলো সাহিত্যের আঙিনা, যা ভালো মনে নিতে পারেনি অঞ্জন আর অঞ্জনা। কি করে নেবে? তাঁদের কথাই তো নয়া ফুল হয়ে ফুটে উঠেছে কাব্য কাননের প্রতিটা শাখাপ্রশাখায়, প্রতিটা ফুলে ফলে! কিন্তু, তাঁরা আদৌ কোনদিন জানতে পারেনি, কাব্য কাননে ফুল হয়ে ফোঁটা কতটা সৌভাগ্যের, কতটা পুণ্যের! এই পুণ্য সভার ভাগ্যে জোটে না, যাঁদের ভাগ্যে জোটে তাঁরাই একমাত্র সৌভাগ্যবান, তাঁরাই একমাত্র সৌভাগ্যবতী! কারণ, কাব্য কানন যে স্বয়ং বিদ্যাদেবী সরস্বতীর! যিনি কিনা সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার আদেশে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল খুঁজে এই ধরাধামে বাল্মীকির (রত্নাকর দস্যু) মুখে তুলেছিলেন কাব্যকলার প্রথম সৌন্দর্য! সেই হতে সেই কাব্য সৌন্দর্যের ধারা আজও খরস্রোতা নদীর মতো প্রবাহিতা!


কবিতা হল---

মানুষের অন্তঃ হতে সৃষ্টি হওয়া 

স্বাধীনতম এক সত্তা,

যেখানে নেই কারো কোনো অধিকার।


কবিতার বিষয় হবে কী

কবি তা কিছুই জানেনা,

ঐশ্বরিক শক্তি আছে যার শিরে

তাঁরই তীরকলমের ঝর্ণায়

কবিতা ঝরে পড়ে।


নিঃস্বার্থ কবির, কবিতা দানে

স্বার্থ মনে করে কেউ যদি তা

ফিরিয়ে দেয় প্রত্যাঘাতে,

সে কবির ভীষণ লজ্জা

বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়!


কবিদের কখনো কিছু ফিরে পেতে নেই

যে কবি বিনিময় কিছু ফিরে পেতে চায়

সেই কবির কবিতা চিরতরে হারিয়ে যায়,

এখানেই কবিতা চিরকাল শাশ্বত।


        সৃষ্টির উল্লাসে উল্লাসিত না হয়ে সৃষ্টির বেদনায় বেদনাহত হয়ে রঞ্জন এবার অঞ্জন ও অঞ্জনার ভুবন হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে চাইলো। দূরে সরিয়ে নিতে চাইলে কি আর দূরে সরিয়ে নেওয়া যায়? যতবার দূরে সরে যায়, ততবার দু'জনে সামনে দাঁড়ায়! এমনি করে হঠাৎ একদিন রঞ্জনের মোবাইলে অঞ্জনার নাম্বার ভেসে উঠলো! কয়েকবার রিং হয়ে কেটে যাবার পর কোনো এক অজানা বিপদের আশঙ্কায় রঞ্জন এবার ফোনটা রিসিভ করলো। রিসিভ করা মাত্রই অনুরোধের সুরে কান্নাভেজা গলায় অঞ্জনা বললে----

       'রঞ্জনদা, দেখনা অঞ্জন সন্দেহবশে আমাকে কিসব আবল-তাবল বলছে! কিসব পাগলামি করতে চাইছে! নিজেকে নিঃশেষ করে দিতে চাইছে!...


        অগত্যা সবকাজ ফেলে রঞ্জন ছুটলো অঞ্জনের উদ্দেশে। যেতে-যেতে রঞ্জন ভাবলো, এভাবে আর কিছুদিন চললে বড় কোনো বিপদ ঘটে যেতে পারে! রঞ্জন তাই অঞ্জনের অভিভাবকদের নিকট বিষয়টি উত্থাপন করলো এবং কিভাবে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যায় সে পথ খুঁজার চেষ্টা করলো। কিন্তু, রঞ্জন কিছুতেই সে পথ খুঁজে পেলো না। অঞ্জন সে যে বড় একগুঁয়েমি, কারো কোনো কথা শোনে না, কারো কোনো বাঁধা মানে না, নিজেই নিজের মরজিমতো চলে, তার কোনো ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকেরা কেউ হস্তক্ষেপ করতে চান না। আশার সব পথ হারিয়ে নিরাশায় রঞ্জন এবার নিজের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার কথা অঞ্জনাকে ফোনে জানালো। অঞ্জনা রঞ্জনের সেই আবেগীয় সত্তায় কিছুতেই সাড়া দিলো না, নানা রকমের যুক্তি এনে সামনে দাঁড় করিয়ে দিলো। অবশেষে অঞ্জনার প্রতি অঞ্জনের সমস্ত অভিযোগ শুনে সান্ত্বনা বাক্যে সময়ের হাতে শপে রঞ্জন ফিরে এলো সদ্য পাঠরত স্যারের বাড়িতে, যে স্যার সবারই হিতাকাঙ্ক্ষী। রঞ্জন নিজে যখন দিশেহারা, তখন সেই শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে অসহায়ের মতো পরামর্শ চাইলো। তিনিও সঠিক পথের দিশা দেখালেন... তানারই পরামর্শে আগামীদিনের পথ চলবে বলে রঞ্জন সেদিন ঘরে ফিরলো। ঘরে ফিরেও রঞ্জন সারারাত ঘুমাতে পারেনি। কি করে ঘুমাবে! ফোনে অঞ্জনার করুণ আর্তি---

        'অঞ্জন আমায় খুন করতে আসছে! সেই নিরিহ লোকটিকেও খুন করতে যাচ্ছে!... 

আবারও করুণ আর্তি---              

        'অঞ্জন ভিডিও কলে গলায় দড়ি দিচ্ছে! তুমি ওকে বাঁচাও...


        রঞ্জন, অঞ্জনের ঘনিষ্ঠ মহলে ফোন করে তাদের মাধ্যমে অঞ্জনকে সারারাত নজরে রাখার ব্যবস্থা করলো। সকালে রক্তিম আভায় সূর্য উদিত হওয়ার আগেই অঞ্জনা রঞ্জনকে ফোন করে বললো---

       'রঞ্জনদা, আমি চললাম অঞ্জনের নিকট, নাহলে এ সমস্যা কিছুতেই মেটবার নয়।'

এমন সিদ্ধান্তের কথা তো রঞ্জন আগেই বলেছিলো অবেগীয় সত্তায়, এতো নতুন কোনো কথা নয়!


        রঞ্জন তো দেবতা নয়, সেতো রক্তমাংসের গড়া এক অতি সাধারণ মানুষ। তারও তো চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রেম-ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনা আছে! সেই চিরন্তন সত্তাকে অন্তঃ গহীনে চেপে রঞ্জন ডুব দিলো কবিতার প্রেম গহীনে! কবিতা তাকে আঁকড়ে ধরে প্রেম দিলো অন্তেঃ, যে প্রেম ফুল হয়ে ফুটে উঠলো কাব্য কাননের প্রতিটি শাখাপ্রশাখায়----


     যে বাজিয়েছিল কাব্যের বীণা

   যে তুলেছিল কবিতায় সংগীতের সুর

      যে ছিল কবিতার প্রণোদনা,

   যে মুখের প্রতিটি শব্দই ছিলো কবিতা 

     বিনাদোষে সে মম ছেড়ে গেছে

        দূর, অতি সে দূর!


      নিভে গেছে জীবনের দীপ

     ঠিকানা বিহীন জীবনের পথ

    কবিতা আর ঝরে না কলমে

     নিঃস্ব, একেবারেই নিঃস্ব!


        রঞ্জন কাব্য কাননে কবিতার গভীর প্রেমে মগ্ন হলো। এমনি করে কখন যে দিন পেরিয়ে মাস এলো, মাস পেরিয়ে বছর এলো, রঞ্জন তার কিছুই জানলো না! প্রখর গ্রীষ্মের কোনো এক দিবসের শেষ গোধূলি আলোয় রঞ্জনের সেই প্রেম কাননে দমকা হাওয়ায় গ্রীষ্মের কালো মেঘের মতো ঢুকে পড়লো অঞ্জন আর অঞ্জনা! অঞ্জনার চোখেমুখে ঝড়ো বেদনার ছাপ! অঞ্জন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো ঝলসে উঠে নানারকম প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করলো রঞ্জনকে?... রঞ্জন সান্ত্বনা বাক্যে অঞ্জনকে নিরত করার আপ্রাণ চেষ্টা করলো, কিন্তু কোনোকথা শুনতে চাইলো না। ভাষা জগতের যতরকমের অশ্লীল শব্দ আছে, বাক্য জগতের যতরকমের নিকৃত্তর বাক্যে আছে, সেইসব শব্দ ও বাক্যবাণে রঞ্জনকে রক্তাক্ত করে তুললো। রঞ্জন সমাজের বুকে যথেষ্ট ক্ষমতাবান, যথেষ্ট প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও অঞ্জকে কোনোরকম কাঁটায় বিদ্ধ করিনি, কোনরকম অশ্লীল বাক্যবাণে আহত করেনি। রঞ্জন শুধু দেখতে চাইলো, মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে, কতটা নীচেয় নামতে পারে! যে রঞ্জন রাতের পর রাত যাকে আশ্রয় দিলো, যে রঞ্জন রাতের পর রাত যাকে দুর্যোগে ছুটে গিয়ে চিকিৎসার পরিসেবা দিলো, যে রঞ্জন আপদে-বিপদে যার সর্বক্ষণ সঙ্গী হলো, যে রঞ্জন প্রাণ উজাড় করে যাকে অকাতরে ভালোবাসলো, সেই অঞ্জনের এ কোন রুদ্রমূর্তি! রঞ্জন সময়ের হাতে শপে দিলো বিচার। রঞ্জনের অন্তেঃ আছে অনন্ত প্রেম, যে প্রেম বন্যায় রঞ্জন রঞ্জিত করবে অঞ্জন ও অঞ্জনাকে! যে প্রেম বন্যায় ভাসিয়ে দেবে অঞ্জন আর অঞ্জনাকে!


        এই ঘটনার পরদিন রঞ্জনের মোবাইলে অঞ্জনের একটি মেসেজ ভেসে উঠলো। তাতে অঞ্জন লিখলো--- 

        'কাল ওর সব জিনিস ফিরিয়ে দিবি।'

        অঞ্জনা দিয়েছিলো তো মহামূল্যবান সাতটি উপঢৌকন, যার সঙ্গে জড়িত ছিলো অঞ্জন। জীবনের সেই মহামূল্যবান দান কি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব! তাতো রঞ্জনের পক্ষে কোনদিন দেওয়া সম্ভব নয়। ওগুলোই তো রঞ্জনের জীবনে একমাত্র সম্বল, ভালোবাসার অমূল্য সম্পদ, আগামী দিনের পথ চলার অলংকার, পথের দিক নিদর্শন... 


        রঞ্জন অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, মহাবিপদ ঘটার আগেই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অঞ্জনার মাকে অবগত করানো, যা রঞ্জন আগেই করেছিলো অঞ্জনের ক্ষেত্রে। অঞ্জনার হাজার নিষেধ উপেক্ষা করেও রঞ্জন পরদিন অঞ্জনাকে সামনে রেখে গোটা বিষয়টি অঞ্জনার মাকে অবগত করলো। এই না জানা তথ্য মাকে জানানোর জন্য সেদিনও অঞ্জনার কাছে রঞ্জনের কম অপমানিত হতে হয়নি! সব অপমান নীরবে মাথায় তুলে রঞ্জন ঘরে ফিরলো। পরদিন বিকালে রঞ্জনের মোবাইলে অঞ্জনার নাম্বার ভেসে উঠলো। রিসিভ করা মাত্রই রুদ্রকণ্ঠে অঞ্জনা বলে উঠলো--- 

        'তোমার দেওয়া সব জিনিস এখনি ফিরিয়ে নেবে! আর কোনদিন কোনো অবস্থাতেই আমাদের বাড়ি আসবে না...


        রঞ্জন কতো অনুরোধ করলো, কতো অনুনয় বিনয় করলো, কতো হাতে-পায়ে ধরলো, কিন্তু অঞ্জনা কিছুতেই কোনো কথা শুনলে না, কোনো বুঝ নিলে না। রঞ্জন রাত্রে ফোন খুলে দেখলো অঞ্জনার শেষ লেখা----

        'নেকামো পেয়েছ, লজ্জা করে না তোমার, আমার বাড়িতে আর কোনদিন আসবে না। স্কুল থেকে ফিরে এসে তোমার জিনিস যেন দেখতে না পাই; যদি দেখি, তার পরিণাম কি হয় দেখো। আমি সব এক জায়গায় রেখে এসেছি, ভদ্র ছেলের মতো এসে নিয়ে যাবে, নাহলে এবার আমার অভদ্রতা দেখবে।'


        রঞ্জন পরদিন অঞ্জনার শেষ ভালোবাসা রঞ্জে-রঞ্জে রাঙিয়ে নিলো অন্তেঃ। বস্তাবন্দী প্রতিটা জিনিস কাঁধেচেপে দ্বার হতে ফিরলো সত্যের বুকে এঁকে দিয়ে 'পদচিহ্ন'----

    

নিঃস্বার্থ দানে সর্বস্ব উজাড় 

বিপদে আপদে সর্বদা পাশে 

সেই দানের প্রতিফলন বস্তাভরা অপমান

কাঁধেচেপে ভিখিরি প্রত্যাবর্তন!


যে কখনো ঈশ্বরে বিশ্বাস করেনি

যে কখনো মন্দিরে প্রবেশ করেনি,

শত অপবাদে যে কখনো ভেঙে পড়েনি  

শত অপমানে যে কখনো কাঁদেনি

আজ এই বস্তাভরা অপমান কাঁধেচেপে 

হাউ-মাউ করে পাগলের মতো মন্দিরে!


বায়ু, বহিছ এখনো নীরবে-নিঃশব্দে 

তথাপি বিশুদ্ধ সমীরণ নিশ্বাসে-প্রশ্বাসে!

সূর্য, উদিত এখনো রক্তিম আভায়

তথাপি বিশুদ্ধ আলো দেহস্থে!

বৃষ্টি, পড়ছ এখনো ধরণীতলে

তথাপি বিশুদ্ধ ধারা অঙ্গে!

পৃথিবী, ঘুরছ এখনো অবিরত

তথাপি এখনো আমি জীবিত! 


পবন, রুদ্ধ কর বায়ু

অগ্নি, রুদ্ধ কর আলো

বরুণ, রুদ্ধ কর ধারা 

ধরিত্রী, স্তব্ধ কর ঘূর্ণায়ন

নতুবা সত্যের বুকে এঁকে দিলাম 

ভিখিরি বস্তাকাঁধে প্রত্যাবর্তনের পদচিহ্ন !


        জানেন কি সেদিনের সেই বস্তাবন্দী কি ছিলো? বেশীরভাগ সবই জ্ঞানের আলো-'পুস্তক'। সেই হতে রঞ্জন বাকরুদ্ধ, দু'চোখে 'অনিমেষ দৃষ্টি'।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy