STORYMIRROR

Amitav Ganguly

Romance

4.0  

Amitav Ganguly

Romance

অদৃশ্য চুম্বন { INVISIBLE KISS}

অদৃশ্য চুম্বন { INVISIBLE KISS}

9 mins
542


বেশ কয়েক মাস আগে রূপেশের দাদা প্রমতেশের অনেক পুরানো বান্ধবী – শ্যামলীর- রোড অ্যাক্সিডেন্ট এ হটাত্‍ মৃতূ হয়ে। সে পাটনা এ থাকতো এবং ঘটনা যখন হয়ে ধানবাদ থেকে পাটনা যাচ্ছিল। এরপর দূটো পরিবারে একটা বিষণ্ণ পরিবেশ বিদ্যমান হয়েছিল।

কিন্ত সময়ের সাথে জীবন যাত্রা চলতে থাকে। ইতিমধ্যে রূপেশ ধানবাদ সিটি কলেজ এ BSc. কোর্স এ ভর্তি হয়েছে। শ্যামলীর বোন, রিমলি, একই ক্লাস এ অ্যাডমিশন নিয়েছে। যদিও ওদের আলাপ অনেক মাসের, তবে সেটা কখনো ঘনিষ্ট হয়েনি, ইদানীং অবশ্য রূপেশের অনুভূতির পরিবর্তন হয়েছে রিমলীর প্রতি।         

সেদিন সোমবার ছিল।

রূপেশ যখন কলেজ ক্লাসরুম থেকে বের হলো তখন রিমলি ওর এক বান্ধবীর সাথে অনেকটা এগিয়ে গেছে । সে ভেবেছিল রিমলি কে নিয়ে কলেজ ক্যান্টিন যাবে, ওর নতূণ অনুভূতির কথা বলবে; সোজা কথায়ে প্রেম নিবেদনের সূত্রপাত করবে অথবা চেষ্টা করবে, কিন্তু সে তো তখন গুড়ের বালি। সম্ভব না। রূপেশ জানে রিমলি তার বান্ধবীর সাথে এখন তার বাড়ি যাবে, নিশ্চই গতকাল ক্লাসে পড়ানোর পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন এর কিছু নোটস নেবে। 

একটু চিন্তা করে রূপেশ ঠিক করলো কাল নিশ্চই রিমলির সাথে কথা বলবে, ব্যাপারটা আর পেছানো যাবে না ।

পরের দিন প্রথম ক্লাস থেকেই সে রিমলির সাথে বসলো। বেঞ্চটা ছোট সেইজন্য প্রায় গা ছোঁয়া লেগে যায়। ওর হাল্কা সেন্ট এর ঘ্রাণ রূপেশের মন এ তখন একটা অদ্ভুত অনুভূতি দিয়েছিলো। মেয়েদের নৈকট্য, এসব কোনও বড় ব্যাপার নয়, কিন্তূ রিমলি আজকাল এরকম অনুভূতি আনে রূপেশের মনে ...!

"কি হল রূপেশ? শুরু থেকেই আমার সাথে বসেছো ? এরকম তো কখনো করো না।" রিমলি ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ধীরে ধীরে বললো।  

স্যার তখন এসে গেছেন ও পড়ানো শুরু করবেন।

"খুব দরকারি কথা আছে। বিকেলে বলব, ক্যান্টীন এ গিয়ে " রূপেশ আস্তে উত্তর দিলো।

তখন ওর হৃদয়ে একটা ধুকপুকুনি অনুভব করছিল। এসব তো আর রিমলি বুঝতে পারবে না, একটু হেসে সে স্যার এর পড়ানো শুনতে লাগলো ।

রূপেশ তখন অন্যমনস্ক ... এতদিনের বান্ধবী কে সে মনের কথা কেমন ভাবে বলবে ? যদি সে তাকে প্রত্যাখ্যান করে ... তাহলে তো ওর জীবন ছারখার হয়ে যাবে!

---------------------------

তখন প্রায় সন্ধে ৭.৩০ বেজে গেছে, কলেজ ক্যান্টিন মোটের উপর ফাঁকা । এক কোনে রূপেশ ও রিমলি বসে আছে, টেবিলের উপর দুটো কফি কাপ, প্রায় খালি। অনেক কথা হয়েছে ওদের মাঝে...!

এরমধ্যে রিমলির হাতের উপর রূপেশ আলতো ভাবে নিজের হাত রাখল।  

লক্ষ্য করেছে রিমলির হাত সরিয়ে নেয়নি ।

এখন কিন্তূ রিমলির দৃষ্টি অন্য দিকে, সে দীর্ঘ সময়ের জন্য কিছু যেন ভাবছে। রূপেশের কথা? 

রূপেশ ওর ভালোবাসার নিবেদন করেছে, তবে অত্যন্ত দ্বিধাপূর্ণ ভাবে ... ওর কথা কখনো এরকম আটকে যায়নি ... এটাই বোধ হয়ে প্রেমে পড়লে হয়ে ... কিছু করবার নেই। 

সে কথা না বাড়িয়ে রিমলির দিকে তাকিয়ে ছিল ... যেন আবার নিজের নতুন প্রেমিকা কে চেনবার চেষ্টা করছে I ওর সুন্দৰ ফর্সা মুখশ্রী, টানা ভুরু, মায়াবী চোখ ও গোলাবী ঠোঁট রূপেশ কে মন্ত্রমুদ্ধ করে রেখেছে! এছাড়া একটা সুদৃশ্য সবুজ সালওয়ার কামিজ ওকে আরও মোহনীয় করে দিয়েছে। 

রিমলি চোখ ফেরালো। অধর যেন কিছু বলতে গেলো কিন্তু পারলো না । সে উঠল কিন্তু চলে গেলো না ... রূপেশের দিকে তাকিয়ে রইলো অনেক মুহূর্তে, সব কথা যেন চোখ দিয়ে বলবে, নয়ন চঞ্চল !

তারপর রিমলি প্রস্থান করলো; যেতে যেতে এই বলে গেল যে সে আজ রাতে পাটনা যাচ্ছে by road, কাল সকাল-সকাল পৌঁছানো দরকার। বাড়ি তে গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে ওর দিদি, শ্যামলীর, ব্যাপার নিয়ে। মনে হল রাতে একা যেতে কিছুটা চিন্তিত। রূপেশ এই রাস্তা দিয়ে অনেক বার গিয়েছে, খুঁটিনাটি ভাবে পরিচিত, জানে খূব নিরাপদ, চিন্তা করবার কিছূ নেই। সে রিমলি আশ্বাস দিল। রিমলি বলল দরকার হলে সে রূপেশ কে মোবাইল এ জানাবে।   

এ সবের মধ্যে ও রূপেশের প্রেমের উত্তর কিন্ত দিয়ে গেল না ... কিংবা দিল কী? রিমলি তার উপর নির্ভরশীল হচ্ছে, প্রয়োজন এর সময়, এটা যথেষ্ট নয় কী?   

------------------

সে রাতের শুরুতে রূপেশ ঘুমোতে পারছিল না কেন রিমলির মুখশ্রী ও বিশেষভাবে গোলাপী ঠোঁট এর সৌন্দর্য বার বার মনে পড়ছিলো, ও বুঝতে পারছিলো না এমন নয় যে ও কখনো কোনো মেয়ের ঠোঁট দেখেনি বা চুম্বন করেনি, কিন্তু এখন এরকম কেন মন উতলা হয়ে যাচ্ছে? প্রেমে ও আদরের প্রেমিকা কে চূমূ খাওয়া হয়তো অন্য অভিজ্ঞতা!

অনেকক্ষণ পরে চোখে ঘুম জড়িয়ে এলো, একটা আচ্ছন্ন ঘুম, অঘোর ঘূমে পরিণত হল।

হঠাৎ গভীর রাতে তার মোবাইলটি বেজে উঠে এবং সে কলটি ধরার চেষ্টা করে, কিন্তু তা অবিলম্বে নিঃশব্দ হয়ে গেল।

তারপর কত রাত সে জানে না, রূপেশের ঘুম আবার ভেঙে গেলো । ঘর নিচ্ছিদ্র অন্ধকার, এমনকি স্ট্রিট লাইট জ্বলছিল না, তাই পাতলা বন্ধ পর্দার দিক থেকে কোনও আলো প্রবেশ করতে পারেনি। সুতরাং চোখ খোলার পরেও কিছূ দেখা সম্ভব নয়।   

হটাৎ রূপেশ অনুভব করলো হালকা সুবাস, সেন্ট, এবং খূব চেনা ; সারাদিন রিমলির সাথে যখন ছিল এই ঘ্রাণ ওর মন আচ্ছন্ন করেছিল I কী হচ্ছে বোঝবার আগেই বূঝতে পারলো কেউ ওর পাশে বসে রয়েছে, এবং ওর ঠোঁটে কেউ মৃদুভাবে চূম্বন দিচ্ছে I সে নিশ্চয় কোনও মেয়ে! তার নরম ও ঘন চূলের গোছার স্পর্শ, সেটাই বোঝায়।

তাড়াতাড়ি উঠে পড়বার চেষ্টা করতে পূরো ব্যাপারটা উধাও হয়ে গেল I সাইড টেবল ল্যম্প যখন সুইচ অন করল ও চারিদিকে তাকিয়ে দেখল তখন কিছূ অস্বাভাবিক দেখলো না! আশ্চর্য!

এর পর যখন রূপেশ এর  চোখ নিজের হাতের দিকে পড়ল, তখন আরেকটা বিস্ময় ... ওর ডান হাথ ধূলো কাদা এ ভরা আর রক্তের দাগ এর ছিটে লেগে আছে!ওর কিন্তূ জখম নেই! এর মানে কী? অবাক হয়ে সে চেয়ে থাকে। আধো ঘুমে ওর ভাবনার ক্ষমতা লোপ পেয়েছিল, মনে হল।         

মোবাইলটি তুলে রূপেশ মিসড কলটির দিকে তাকাল যা রাতের শুরুতে এসেছিল। একি ? রিমলি তাকে ফোনে করেছিল? সে তাকে পাল্টা ফোন করল কিন্তু কোনও সাড়া পাওয়া গেল না; আরও কয়েকটি কল নিরর্থক রয়ে গেল। বাকি রাত রূপেশ ঘুমাতে পারলো না । একটা অনিশ্চিত ভাব মনের মধ্যে আনাগোনা করছিল!

--------------

<

p>সকালের সূর্যের আলো তে রূপেশের মনের অবস্থার কোনও উন্নতি হল না । সে আবার রিমলিকে ফোন করল, কিন্ত একই ফল ।

চেয়ারে বসে সে ভাবছিল কী করতে পারে। রাতের অভিজ্ঞতা এমন কিছু ছিল যা তার কল্পনা বাইরে।

এর মধ্যে তার মোবাইল বেজে উঠল। এটা সৌরভ!

"তুমি কি এই খবরটা শুনেছ?" সৌরভের উত্তজিত কণ্ঠ ভেসে এল । "রিমলি গত রাতে গাড়িতে পাটনা যাবার সময়ে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে ... এক যাত্রী তাকে ও আহত ড্রাইভার কে পথ থেকে তূলে নিয়ে নিজের গাড়িতে গয়া হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল । অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল রিমলীর ড্রাইভার এর দোষে, মাঝ পথে একটা "ধাবা" তে রিমলীর অজান্তে প্রচূর মদ্যপান করেছিল, পরে রিমলি আপত্তি করে  ... । তারপর শীঘ্রই অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেল ! ড্রাইভার মারা গেছে... রিমলি এখন গয়া স্থানীয় হাসপাতালে আছে, জ্ঞান ফিরতে পুলিসকে  স্টেটমেন্ট দিয়েছে ... এখনই রওনা হয়ে চলে এস ...!"

এই আকস্মিক দু:খদায়ক ঘটনা শূনে রূপেশ কয়েক মিনিট চুপ করে বসে রইল; স্তম্ভিত, তার ভালোবাসার রিমলির একি হয়েছে? সে বিশ্বাস করতে পারছিল না ... দুশ্চিন্তায় তার শরীর যেন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছিল। বার বার মনে হচ্ছিল রিমলির মোবাইল যদি রিসিভ করত, সে কী করে হেল্প করতো, এত দূর থেকে? তবে কিছূ চেষ্টা তো নিশ্চয় করত।  

"হে ঈশ্বর, রিমলি কে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন ..." এই প্রার্থনায় ও মনে জোর দিয়ে, বাইরে এসে, রূপেশ নিজের মোটর সাইকেলটি নিয়ে দ্রুত গয়া র  দিকে রওনা হল।

ভোরের ট্র্যাফিক খুব কম ছিল, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চয় পৌঁছানো যাবে। তার শেষ রাতের অভিজ্ঞতাটি বার বার মনে ফিরে আসছিল, সে বুঝতে পারছিল যে সেই অচেনা মেয়ের গন্ধ এবং স্পর্শটি কার হতে পারে … তবে কীভাবে এটার সাথে এই দুর্ঘটনা জড়িত?

---------

গয়া হাসপাতালে পৌঁছে; সৌরভ এবং তার আরও দুই বন্ধুকে ICU র বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।

রূপেশের তখন শ্বাস দ্রুত চলছিল - কেবল বলতে পারলো, "রিমলি এখন কেমন আছে...?" 

সাথে সাথে নিজেকে স্থির রাখতে গিয়ে রূপেশ, সৌরভের কাঁধ ধরে সামলাল। বন্ধুরা তাকে পাশের চেয়ারে বসিয়ে দিল, এক গ্লাস জল দিল। 

"রিমলি বিপদ থেকে মুক্ত, সুস্থ হয়ে যাবে ... চিন্তা করো না। " সৌরভের আশ্বাস দেয়! অন্যরা মাথা নাড়ল।

ডাক্তার প্রায় এক ঘন্টা পরে এলেন ও বললেন, "রিমলি ঠীক হয়ে যাবে । খুব ভাগ্যবান যে তার মাথা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি তেমন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েনি । দুর্ঘটনার কারণে পুরোনো ট্যাক্সি গাড়ির দরজা খূলে গিয়ে বাইরের ঝূলে পড়েছিল – এবং কেঊ ওকে তুলে নিয়ে দূরে রাস্তার পাশে শুইয়ে দিয়েছিল। সেটা তার জীবন বাঁচিয়েছে কারণ কিছূ পরে গাড়িতে বিস্ফোটন হয়ে আগূন লেগে গিয়েছিলো। 

"রিমলি এখন সচেতন এবং তোমরা একজন কেউ একটূ পরে তার সাথে দেখা করতে পারো। স্পেশাল কেস! নার্স তোমাদের ডাকবে।"

রূপেশ এবং অন্যান্য বন্ধুরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। রিমলির মা ও বাবা কয়েক ঘণ্টা পর মুম্বাই থেকে পৌঁছে যাবেন। এখন অপেক্ষা নার্স এর যোগাযোগ।

--------------

রূপেশের কিছূ ভাল লাগছিল না । ধীরে ধীরে হেঁটে হাসপাতালের লনের দিকে, একা হেঁটে চলে গেল।

তার মনে তখন তোলপাড় হচ্ছিল। রাতের অদ্ভূত অভিজ্ঞতা এবং রিমলির দুর্ঘটনার সত্য মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করছিল । প্রথমে রিমলি তাকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চেয়েছিল, হয়েত ড্রাইভার কে নিয়ে বিপদের কথা বলতে গিয়েছিলো, পারেনি- তারপর? সে ঘটনার কোনও সুস্থ মস্তিষ্ক এর ব্যাখ্যা নেই। তবে সে এখন প্রায় নিশ্চিত কে তাকে সেই অন্ধকারে চুমু খেয়েছিল! তবে কেন ও কিভাবে ?

রূপেশ তার বন্ধুদের সাথে এই নিয়ে আলোচনা করতে চায়েনি ... তারা বলতে পারে এটি কল্পনা! সত্য একবারে নয়! হয়েত রূপেশ বড্ড বেশি মদ খেয়েছিল, রাতে, কিংবা হ্যালুসিনেশন হয়েছিল ... সে পাগল হয়ে যাচ্ছে। সে এসব কিছূ মানতে রূপেশ প্রস্তুত ছিলেন না।

একটূ পরে রূপেশ ICU তে প্রবেশ করে রিমলির বিছানার কাছে গেল। তার সুন্দর চোখগুলি – তাতে ক্লান্তির রঙ ছিল। ঠোঁট ফ্যাকাশে ও শুকনো ... সারা শরীরে স্ট্র্যাপযুক্ত - নানা চিকিৎসার সরঞ্জাম, অনেকগুলি তার বেরিয়ে এসেছে এবং, বিভিন্ন পরামিতি গুলি র ইঙ্গিত দিচ্ছে কয়েকটা মনিটর থেকে।

রূপেশ  রিমলির হাত ধরে একটূ ম্লান হাসল, "কেমন লাগছে?" 

রিমলি কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর খুব নীচু কণ্ঠে, "তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ... রূপেশ, আমাকে বাঁচানোর জন্য ... এটি ভাল যে তূমি আমার মোবাইলে সাড়া দিয়েছিলে ...।" 

এই শূনে রূপেশের আরো আশ্চর্য হবার বাকি ছিল, " তূমি কী বলছ রিমলি? আমি তোমাকে কীভাবে বাঁচিয়েছি? সকাল পর্যন্ত আমি জানতাম না তোমার দুর্ঘটনা ঘটেছে… সৌরভ আমাকে ডেকেছিল…তারপর এখন এলাম ...!"

রিমলি মাথা নাড়ল। "না ... দুর্ঘটনার সময় ... আমি তোমাকে রাস্তায় দেখেছি ...সামান্য জ্ঞান তখনও ছিল... গাড়ি থামা র সাথে সাথে তূমি ছুটে এসে গাড়ির খোলা দরজা কাছ থেকে আমাকে কোলে তুলে নিলে ও ভীষণ দ্রুত ভাবে দৌড়তে শুরু করলে ... গাড়িতে তখন একটা বিস্ফোরণ হল শুনলাম ... ইতিমধ্যে তূমি আমাকে নিরাপদ দূরত্ব এ নিয়ে গেছ ... আমার জীবন রক্ষা করেছ … আমি যখন তোমার বাহুতে, সেই মুহূর্তে তোমাকে চুমু দিয়েছিলাম, মনে পড়ে? তারপর অজ্ঞান হয়ে যাই ... এতসব ঘটনা তুমি কি মনে করতে পারো না?"

ক্লান্তিতে সে চোখ বন্ধ করল। তারপরে বলল, "তখন তূমি নিজে আমাকে গয়া হাসপাতালে আনলে না কেন? আরেকজন দয়া করে এখানে নিয়ে এল কেন?"

যখন চোখ খুলল, তখন একটূ অভিমানের সামান্য অশ্রুজল...!  

এতক্ষণে রূপেশের ভাবনাগুলো পরিষ্কার হয়ে উঠছিল । সে বুঝতে পারছিল যে কোনও রহস্যজনক ঘটনার দ্বারা সে দুর্ঘটনার জায়গায় এসেছিল, রিমলি কে জলন্ত গাড়ি থেকে উদ্ধার করেছিল এবং তার বদলে রিমলি তাকে কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসায় চুমু দিয়েছিলো; শারীরিকভাবে তাদের কেউই একে অপরের কাছে ছিল না ... তবে দুজনেরই এই শারীরিক অভিজ্ঞতা ছিল! একেই কী বলে "টেলিপোর্টেশন" বা "time travel" যা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর ক্ষেত্রের মধ্যে আসে? অথবা অন্য অলৌকিক উত্তর আছে? এসব রিমলি কে এখন বলা যাবে না .... পরে বলবে!  

সে স্ক্রীন এর আড়ালে, আস্তে রিমলি কে চুমু খেল, রাতের সেই পরিচিত অনুভূতি এখন তাকে অভিভূত করেছিল ! 

---------------

পরে একদিন রিমলি সুস্থ ও দুজনে এ অদ্ভূত ব্যাপার নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করছিল।

হটাত্‍ রিমলি তার দিদি, শ্যামলীর রোড অ্যাক্সিডেন্ট এ মৃতূর কথা তুলল। বেচারী তখন কোন সাহায্য পায়েনি; রাস্তা এ প্রাণ দিয়েছিলো ; সেটা একটি প্রচণ্ড ট্র্যাজেডি ছিল!

এখন এর সাথে কী কোনও সম্পর্ক আছে ? যখন রিমলি একই বিপদে পড়ল, তখন মৃত শ্যামলী কী রূপেশকে পাঠিয়ে, through teleportation, নিজের বোন কে সাহায্য করেছিল? এরপর বেশ কয়েক মিনিটের জন্য রূপেশ ও রিমলি একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকলো! কোনও উত্তর নেই!  

এই পৃথিবীতে কি এসব আজব ঘটনা ঘটে? কে জানে?


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance