Krishna Banerjee

Romance Classics

4  

Krishna Banerjee

Romance Classics

আর কত নিচে ?

আর কত নিচে ?

5 mins
9


                           আর কত নিচে ?

                  18 ( প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে )

                      কলমে - কৃষ্ণ ব্যানার্জী

                              ( পর্ব - ৭ )

 সময়টা নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি । এখন তেমন ঠান্ডা পড়েনি । বাইরে রোদের ভালোই তেজ, আমি ঘরে ঢুকতেই ভদ্রলোক আমাকে বসতে বলে A.C টা চালিয়ে দিলেন । তারপর আমার সামনে এসে বসে জানতে চাইলেন ঠান্ডা না গরম কোনটা চলবে ? মুখ থেকে কমন যেনো বেরিয়ে এলো একটু ঠান্ডা হলে ভালো হয়। ভিতরের ঘরের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয় , উনি ফনকরে বললেন ঠান্ডা নিয়ে আসো । আমি বুঝলাম উনি ওনার স্ত্রী কেই কথাটা বললেন । তার পরের প্রশ্নটা ছিলো কি ভাবলে তোমার স্যালারি ঠিক কত হওয়া উচিত ? আমি একটু থট মত খেয়েই বললাম , ঠিক করে উঠতে পারিনি , আসলে কাজটা কি না জেনে কিকরে বলি বলুনতো ? ইতি মধ্যে অনার স্ত্রী একটা ট্রেতে 2 গ্লাস থানসাপ অথবা কোক নিয়ে হাজির হলেন । ওনার স্ত্রীর রূপে আমি আগাগোড়াই মুগ্ধ ছিলাম , আজ তাকে যে রূপে দেখলাম তাতে যেকোন মানুষ উন্মাদ হয়ে যেতেই পারে । পরনে একটা ফিন ফিনে নাইট গ্রাউন্ড । গ্রাউন্ড ভেদকরে অন্তর্বাস ফুটে উঠেছে । একেবারে পেটায় করা চেহারা । দেহে এক বিন্দু অতিরিক্ত মেদ নেই , বক্ষ যুগল সুঠাম , কোমরে একটা হালকা ভাঁজ পড়ছে তবে সেটা মেদ বিহীন । মহিলা যথারীতি শরীর চর্চা করেন । কয়েক মুহূর্তের জন্যে আমার চোখ অনার দিকে আটকে গিয়েছিল , আমি কমন যেনো দিসে হারা হয়ে গিয়েছিলাম । টেবিলে ট্রেটা নামিয়ে রেখে বললেন নিন খেয়েনিন । আমি সম্বিদ ফিরে পেয়ে বললাম ধন্যবাদ । তিনি আবার বললেন টিফিনে লুচি তরকারি চলবে তো? আমি বোকার মত বললাম হ্যাঁ। ভদ্র মহিলা সেখান থেকে চলে গেলেন ।

                               আমাদের দুজনার হতে দুটো গ্লাস । লোকটি গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে বললেন , তাহলে আপনি কিছুই ঠিক করে উঠতে পারেননি । আমি জানলাম না । ভদ্রলোক বললেন তাহলে আমি আপনার সাথে এক বছরের একটা ডিল করতে চাই , আমি বললাম বলুন । উনি যে টাকাটা অফার করলেন সেটা আমি সারা জীবনে উপার্জন করতে পারবোনা । উনি বললেন কলকাতার সুপার সিটিতে একটা থ্রি B.H.K flat সাথে এক কোটি টাকা । ফিফটি পার্সেন্ট চুক্তি পত্রে সই করলেই দিয়ে দেবেন বাকিটা কাজের শেষে । আমি মনে মনে ভাবলাম কি এমন কাজ যে উনি এতগুলো টাকা আমাকে একবছরে দিতে চান ? উনি হয়তো আমার মনের ভিতরটা পড়তে পারছিলেন , বললেন “ কি ভাবছেন এতগুলো টাকা আপনাকে কি এমন কাজের জন্যে দেবো তাইতো ……….? এবার একটু থেমে বললেন সেদিন আপনাকে একটা কথা বলেছিলাম হয়তো আপনার মনে আছে । আমি জানতে চাইলাম কোন কথাটা বলুনতো ? উনি একটু হেঁসে বললেন টাকা থাকলেই সব হয় । কথাটা সম্পূর্ন ভুল নাহলেও কিছু অংশে ভুল বটে । আমি বললাম কেমন? উনি বললেন আপনিকি জানেন আজকের ডেটে আমি প্রতিদিন কতটাকা কমই । আমি জানলাম না । উনি আবার বললেন 50 লাখ মিনিমাম । আপনাকে যেটা দেবো ওটা আমার দুদিনের ইনকাম, এই জায়গাতে পৌঁছাতে আমি আমার জীবনের 35 বছর নষ্ট করেছি । আজ টাকার বিনিময়ে সব কিছু কিনতে পারি , কিন্তু একটা জিনিষ পারলামনা যেটা আপনাকে করতে হবে । আমি একটু অবাক হয়েছিলাম ওনার কথা শুনে , আমি জানতে চাইলাম আমাকে কি করতে হবে ? আমার ভদ্র লোক একটু মুসরে পড়লেন , রাশভারী গলাটা কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো , খুব পোলাইটলি বললেন আমাকে একটা বাচ্চা দেবেন ? আমি আকাশ থেকে পড়লাম , এটা কি বলছেন উনি , আমি কিছু বলি তার আগেই উনি বললেন আপনার যদি আরো বেশি টাকা লাগে আমি দিতে রাজি আছি । আমার স্ত্রীর আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে , তাই আপনাকে ডেকে বিষয়টা জানলাম , দেখুন স্পাম ডোনার অনেক আছে কিন্তু আমি চাইনা বিষয়টা বাইরে যাক । আর ওকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি তাই ওর ভালো লাগাকে প্রাধান্যে দিতে চাই । ডাক্তার বলে দিয়েছেন আমি আর বাবা হতে পারবোনা , প্রথমে ভেবেছিলাম টেস্টটিউব বেবি নেবো , তারপর ভাবলাম ওর দেহের একটা চাহিদা আছে যেটা আমি টাকা দিয়ে মেটাতে পারবোনা । এবার বাচ্চাদের মত কাকুতি মিনতি করতে লাগলেন আমি যেনো ওনাকে নিরাশ না করি । কয়েক মুহূর্তের জন্যে আমি বুঝতে পারছিলাম না ঠিক কি বলা উচিৎ আমার , আমি একটু শান্ত হয়ে উনাকে বললাম “ আপনি একটু শান্ত হোন , আমাকে দুটো দিন একটু ভাবতে দিন ? উনি বললেন দু দিন কোনো তুমি দুই সপ্তাহ সময় নাও কিন্তু আমাকে নিরাশ করনা, কি হবে আমার এই অর্থের , কে সামলাবে আমার এই ব্যাবসা । আমি আবারও বললাম দুটো দিন সময় আমার লাগবে ।

                             ইতি মধ্যে ভদ্র মহিলা লুচি তরকারি নিয়ে হাজির হলেন , টেবিলে রেখে বললে , বহুদিন পর নিজের হাতে রান্না করলাম জানিনা কেমন হয়েছে ? আমি কিছু বললাম না । আমার সামনে একটা প্লেট দিয়ে তাতে গরম গরম লুচি আর তরকারি সাজিয়ে দিলেন তিনি । আমি ওনার রূপে বারে বারে হারিয়ে যাচ্ছিলাম , উনি বললেন কি ভাবছেন খাবারগুলো খেয়ে নিন । আমি বললাম এইতো খাচ্ছি। আমার মুখমুখী একটা চেয়ার নিয়ে বসলেন , সকলে মিলেই আমরা জলযোগ সারলাম । ওনাকে এতটা সামনে দিয়ে দেখতে পারছিলাম তথাপি আমার কমন যেনো অসস্থি হচ্ছিল , এরপর দুপুর তিনটে নাগাদ লাঞ্চ সেরে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিলাম । ভদ্রলোক বাইরে বেরিয়ে এসে ওনার ড্রাইভারকে বললেন বাবুকো ছরকে আও , আমি না করছিলাম কিন্তু উনি কিছুতেই শুনলেন না । আমি গাড়ির পিছনের সিটে বসেছি , ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিলো, উনি কাঁচের বাইরে থেকে বললেন আমার দিকটা একটু ভাববেন প্লিজ। গাড়ি রওনা হলো , পথে যাম থাকার কারণে অনেকটা সময় লেগে গেলো , আমি সারাটা রাস্তা চিন্তা করতে করতে এলাম , আমার ঠিক কি করা উচিৎ?

                                         …………………..


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance