Krishna Banerjee

Romance Classics

3  

Krishna Banerjee

Romance Classics

আর কত নিচে ? (18+)

আর কত নিচে ? (18+)

7 mins
16


                          আর কত নিচে ?

                   (18 ) প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য

                     কলমে - কৃষ্ণ ব্যানার্জী

                                  ( 1 )

                শিব পুরানে বর্ণিত হয়েছে যে কলি যুগের নারীরা পর পুরুষে আসক্ত থাকবে , এটাই নাকি ভবিতব্ব । কিন্তু পুরানে এমনটা কোথাও লেখানেই যে , রুজির জন্য এই কলি যুগে পুরুষদের নারীর দৈহিক চাহিদা মিটিয়েও জীবিকা নির্বাহ করতে হবে । এমনটাই ঘটেগেলো দেবদত্তের জীবনে । আপনাদের মনে হতেই পারে এই দেবদত্ত আবার কোন মহাপুরুষ ? না কোনো মহাপুরুষ নন নিছকই একজন সুদর্শন পুরুষ । নিয়মের ঘেরাটপে আবদ্ধ এমন এক পুরুষ জার জীবনের গল্পটা গ্রাম থেকে শাহরে আসার পর 360 ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে । সম্ভ্রান্ত মানিক লাল দত্তের একমাত্র পুত্র এই দেবদত্ত , সম্পূর্ন নাম দেবব্রত দত্ত । দেবব্রত দেবদত্ত হয়ে উঠল শহরে আসার বছর খানেক পর থেকে । 

                  গ্রামের আধা জামিদার হলেও মানিক বাবুর মুল উপার্জন কৃষি থেকেই । গ্রামের প্রাই অর্ধেকের অধিক চাষের জমি দেবদত্ত দের অর্থাৎ মানিক বাবুর । পিতা যে সম্পত্তি রেখে গিয়েছিলেন সেটাকে বাড়িয়ে তিনগুন করেছেন মানিক বাবু , লোকটি নিখাদ ভালো মানুষ , আজ তিনি না থাকলেও কেউ আঙ্গুল তুলে বলতে পারবেনা লোকটা কাউকে ঠকিয়েছে । বুদ্ধি আর গ্রামের মানুষের ভালোবাসা তাকে পৌঁছে দিয়েছিল উন্নতির চরম শিখড়ে। ছেলে দেবদত্ত সরি দেবব্রত পড়াশুনাতে ভালো হওয়ার দরুন বাবা কারী কারী টাকা খরচ করে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষিত করে তোলেন তিনি । এই পড়াশুনাই শেষ মেস বাপের সাথে মোটবিভেদ তৈরী করে দিল । লেখাপড়া শেষ করে দেবব্রত নাছোড় বান্দা সে শহরে চাকরি করে অনেক টাকা কামাবে চাষ তরদারা হবেনা । মানিক বাবু অনেক চেষ্টা করেছিলেন চাষ তো লোকে করবে তাকে শুধু তদরকির কাজ করতে হবে , হিসাব নিকাশ রাখতে হবে । আর মানিক বাবু যা রেখে যাবেন অর্থের জন্য তাকে কোনদিন চিন্তাই করতে হবেনা । মানিক বাবুর কাছে ঐ জমি ছিলো মাতৃ স্বরূপ । মা যেমন ভাবে সন্তানকে পরম যত্নে বুকে ধরে রাখেন ঠিক তেমন ভাবেই ঐ চাষের জমি গুলোর সাথেও তার জানো নারীর সম্পর্ক কিন্তু ছেলে সাফ জানিয়ে দিলো পড়াশুনা শিখে সে গ্রামের মাটি আগের পরে থাকতে পারবেনা তার সামনে একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যত । শহরের

নামি কোম্পানিতে একটা বিরাট পোস্টে জয়েন্ট করে বাড়ি - গাড়ি সবটাই খুব কম সময়েই করতে পারব । প্রথমে বাবা আপত্তি করলেও একমাত্র ছেলের অনুরোধে অধিক পিরাপীড়ি করলেন না । অবশেষে ঠিক হোল তার শহরে যাওয়া । ওদের গ্রাম থেকে শহরে যেতে সারাটা দিন চলে যায়, তাই অনলাইনে একটা পিজি ব্যাবস্থা করেনিল দেবব্রত । অবশেষে আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পূর্বে শহরের মাটিতে পা রেখেছিলো সে । রাজার হাটের বহুতল ফ্ল্যাটের ফোর্থ ফ্লোরের উত্তরের ব্যালকনীতে একা একা বসে ফেলে আসা দিনগুল আজ খুব মনে পরেযাচ্ছে তার । ছেলেবলার গ্রামের মেঠ পথ বাবার হাত ধরে চাষের মাঠে চাষ দেখতে যাওয়া , পাঠশালার মাটিতে পাটিপেটে বসে গুরু মহাশয়ের নিকট প্রথম শিক্ষা গ্রহণ , আজ সেগুলকে খুব মিস করছে সে । আবার অনুশোচনা করছে বাবার কথা না শুনে শহরে পরিদেবার কথা ভেবে । এখন প্রশ্নটা হলো শহরে আসে দেবদত্ত কোটিপতি হয়েছে আর এটাই ছিল তার লক্ষ , তাহলে অনুশোচনা কানো ? তাহলে এবার আসল গল্পে আসাযাক ।

                          শহরে এসে খুব বেশিদিন চাকরি খুঁজতে হলনা তাকে , ডিগ্রীর ভারে একটা নামি বার কাম রেস্টুরেন্টের এসিস্টেন ম্যানেজার পদে চাকরি জুটে গেলো তার , শুরুতেই ত্রিশ মন্দ নয় কারণ , প্যাট্রিকেল অভিজ্ঞতা তার নেই বললেই চলে । মাস ছয়েকের মধ্যে প্রমোশন পেয়ে ম্যানেজার । স্যালারি একলাফে সত্তর কিন্তু তাকাজে মায়াবিনী । বছর দেড়েক সবকিছু বেশ ঠিক ঠাক চলছিলো , একদিন ঐ বারে এলো শহরের নামজাদা শিল্পপতির স্ত্রী । সাথে আরো জনা পাঁচেক সুন্দরী মহিলা । সেদিন এসিস্টেন্ড ম্যানেজার না আসতেপাড়ার কারণে দেবব্রত কে মাঝে মধ্যেই ফ্লোরে এসে কাস্টমারদের ওপেনিওন নিতে হচ্ছিল । বারের মালিক আগেই তাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন শিল্পপতির স্ত্রীর কথা । দেবদ্রত একটু বেশিই খেয়াল রাখছিল তাদের । মহিলাকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেনা তার বয়স কত ? আদেওকি সে বিবাহিত বুঝে ওঠা দায় । তার পাশাপাশি মহিলার রূপের প্রশংসা না করলে বিষয়টা অসম্পূর্ন থেকে যাবে । দেবব্রতর মনে মনে বাসনা জন্মালো যদি তার কপালে এমন সুন্দরী একটা নারী জুটতো । কয়েক মুহূর্তে সে অলীক কল্পনা থেকে নিজেকে টেনে এনে বাস্তবের মাটিতে ফেলে মনে মনে বলল আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছে বোধহয় । প্রতিদিন কত সুন্দরীদের আনাগোনা এই বারে তবে এই মহিলা সকলের থেকে অনেকটাই আলাদা , তাকে দেখলে মনেহয় দেখতেই থাকি , প্রচন্ড নিখুদ ভাবে কেউ জানো তার দেহের প্রতিটা অঙ্গ চিত্রাইত করেছেন , তার তুলি চালাবার দক্ষতা একেবারেই আলাদা সবকিছুর মাঝখানে ছেদ পড়ল ঐ মহিলার মাথার চুলের মাঝখানের একটা ছোট্ট লাল সিঁদুরের আভা । খুব ভালো ভাবে না দেখলে বোঝবার উপায় কারো নেই , হালকা বাদামি একরাশ চুলের ভিতরে ঐ সামান্য লাল অভেটুকু দেখা যায়না বললেই চলে । দেবব্রত তাকে খুব মণযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষন করছিলো বলেই হয়ত ওটা ওর চোখে পড়েছে । সেদিনের ডিউটি শেষ করে রাত দুটোর সময় সে বাড়িতে ফিরলো । তারপড় ফ্রেশ হয়ে নিজেকে বিছানাতে এলিয়ে দিলো সে । রাতের রান্না এখানে হয়না , রেস্টুরেন্ট থেকেই খেয়ে ফেরে সে । তাই খাওয়া দাওয়ার চাপ বাড়ি ফিরে নিতে হয়না তাকে । বিছানাতে নিজেকে এলিয়ে দিলেও চোখের পতাকে কিছুতেই এক করতে পারছেনা সে , চোখ বুঝলেই সেই মহিলার মুখটা ফুটে উঠছে তারচোখে। মন বলছে একটিবার যদি তার মাখনের মত দেহটাকে ছুঁয়ে দেখা যেতো , যদি উপলব্ধী করা যেতো তার দেহের সুগঠিত পরিকাঠামো , যদি উপলব্ধী করা যেতো তার দেহের মিষ্টি গান্ধটুকু , এই সকল কথা ভাবতে ভাবতে মনে মনে একটু লজ্জা পায় সে , নিজেকে সামলে নিয়ে বলে মাথাটা খারাপ হলনাকি তোর —---- ওজে আন্নের স্ত্রী , আর পরের স্ত্রীর সম্বন্ধে এসব ভাবাও পাপ । নিজের মনের সাথে লড়াই করতে করতে ঠিক কটার সময় সে ঘুমিয়ে পড়েছিল সেটা সে নিজেও জানেনা ।

                             পরেরদিন সকালে বারের মালিকের ফোনে ঘুম ভাঙ্গলো দেবব্রতর , সেদিন দেবব্রত বিষয়টা ঠিক ঠাক বুঝতে পারেনি । মালিকের কথাতে বেশ উৎসাহীত হয়েছিল সে । তারসাথে দেখা করতে চেয়েছিল কোলকাতার টপ বিজনেসম্যান । কাল রাতে জার স্ত্রীকে দেখেছিলো সে , হয়তো কিছুক্ষনের জন্য তার মোহে পরে গিয়েছিল সে । একটা ক্ষীণ আসা দেখা দিয়েছিল তার মধ্যে যে আজ হয়তো আবার তার সাথে দেখহবে ঐ অপূর্ব সুন্দরী মহিলার । কথা না বাড়িয়ে সে জানতে চাইলো কটার সময় কোথায় দেখা করতে হবে ? বারের মালিক জানালেন ঘন্টা খানেকের মধ্যে তার বাড়িতে দেখা করতে হবে তাকে , সে আরো বলল যেকোন অফারে যেনো সে রাজি হয়ে যায় । এতে তার লাইফ বদলে যেতে পারে ।

                             সেদিনের পর দেবব্রতোর জীবনে একটা বৃহৎ পরিবর্তন এসেছিলো , হয়তো এমন পরিবর্তন দেবব্রত কোনদিন হয়তো আসাই করেনি । দেবব্রতর পিজি রুম থেকে ওনার বাড়ির দূরত্ত আধাঘন্টার রাস্তা , ফোনটা রেখে সে দেখলো ঘড়িতে তখন সারে আটটা বাজে । নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে কিছুটা সময় হাতেনিয়েই বেরিয়ে পরে সে । কোলকাতার পথঘাট সকালের দিকে মাঝে মধ্যেই জাম জট হয়েই থাকে । আজও সে জামের মুখোমুখি হয়েছিল বটে তবে হাতে কিছুটা সময় অধিক থাকার ফলে মিনিট সাতেক আগেই সেখানে পৌঁছে গেলো সে । বিশাল আকারের গেটে একটা ছোট্ট জানালা নির্মাণ করা রয়েছে সেখান থেকে ওয়াচমেন কে জানালো সাহেব দেখেছেন আমাকে । ভিতর থেকে সোনাগালো আপকা নাম ? মেরা নাম দেবব্রত আছে । আবার দরজাটা খুলেদিয়ে নেপালি গোছের কাউকে আমাকে সামনের একটা কাঁচের রুম দেখিয়ে বলল সাহেব ওখানে আপনার ইন্তেজার করছেন । সে কোনো কথা না বাড়িয়ে ঐ রুমের দরজার সামনে পৌছিয়ে নক করতে যাবে এমন সময় ভিতর তাকে একটা ভারি কন্ঠ ভেসে আসলো —---- দরজা খোলা আছে চলে আসুন । সে যখন ভিতরে প্রবেশ করলো তখন দেখলো একজন ইজি চেয়ারে পিছন ঘুরে বসে রয়েছেন । টেবিলের উল্ট দিকের চেয়ারের সামনে পৌঁছাতেই তিনি তাকে বসতে বললেন । দেবব্রত একটা চেয়ার নিয়ে বসতেই লোকটা সামনের দিকে ঘুরলেন । লোকটাকে দেখে বেশকিছুটা অবাক হলো সে । তার সামনে যে মানুষটা বসে রয়েছেন তার বয়স নেই নেই করে সত্তর ।

দেবব্রত ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলনা বিষয়টা ঠিক কি ঘাটতে চলেছে । ঐ মহিলা এই সত্তর বছর বয়সি মানুষটার স্ত্রী , আর সেটা মেনে নিতে হবে কিন্তু এটা কি করে সম্ভব । লোকটি ততক্ষনে দেবব্রত কে পরেফেলেছেন , তিনি বললেন কি ভাবছেন কাল বারে যাকে দেখেছেন সে আমার স্ত্রী হয় কি করে ? একটু হেঁসে আবার বললেন আজকের পৃথিবীতে সবটাই সম্ভব শুধু অর্থ থাকতে হবে । দেবব্রত একটু অবাক হয়েই লোকটির দিকে তাকিয়ে রইল নির্বাক ভাবে । লোকটি আবার বললেন  ইয়ং ম্যান এই পৃথিবী শুধু টাকা চেনে তাই টাকা থাকলেই অনেক অসম্ভবকেই খুব সহজেই সম্ভব করে তলা যায়…………. ।

                                     চলতে থাকবে …………


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance