A Tale of Hell
A Tale of Hell
(গল্পটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য| সমস্ত ঘটনাবলী কাল্পনিক ও আবহ তৈরির খাতিরে নির্মিত|)
ব্যাঙ্গালোরের এই বাড়িটায় পেইং গেস্ট হয়ে আসার পর থেকেই আমার প্রতিদিন রাত্রে অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয়| অনুভূতিটা ঠিক বলে বোঝাবার মতন নয়| আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে গত একমাস ধরে প্রত্যেক রাত্রে ঠিক ১২ টার সময় আমার স্লিপ প্যারালিসিসের মত একটা কিছু হয়| আমি জেগে থাকি, তবু কোনভাবে হাত পা নড়াতে পারি না| মনে হয় অদৃশ্য কোন একটা শক্তি আমার সারা শরীরটার উপর চেপে বসেছে| আমি সবকিছু অনুভব করেও কিছু সুরাহা করে উঠতে পারছি না| ডাক্তার দেখানোর কথা ভেবেও আমার কেন জানি মনে হচ্ছে যে বিষয়টার উপর কোন একটা অতিলৌকিক ব্যাপার রয়েছে| এমন বিশ্বাস আমার আসতো না কখনই যদি না আমি সেদিনের...........
(তিনদিন আগে)
রাত্রি ১২ টা ৫|
আই কান্ট ফিল মাই হোল বডি| শুধু বুকের কাছটায় একটা ভারী কিছু চেপে বসেছে বলে মনে হচ্ছে, আর গোটা শরীরের মধ্যে কোন নড়নচড়ন নেই| আমার গলার কাছটায় কিছু একটা পাকিয়ে পাকিয়ে উঠছে, আর আমি যা চোখে দেখছি সেটা অবিশ্বাস্য|
আমি এখানে একাই থাকি| ছাদের উপর একটা পেন্টহাউস, সেটাই এখানে আমার থাকার জায়গা| একটাই বেডরুম, যেখানে আমার বিছানা সেটার মাথার কাছে জানালাটা খোলা, আমার এইটা একটা সমস্যা| জানালা বন্ধ রেখে একেবারেই ঘুমাতে পারি না| মশার জন্য একটা নেট লাগানো আছে মাত্র| আমি অমাবস্যা পূর্ণিমার দিনক্ষণ বিশেষ মাথায় রাখি না, রাখার প্রয়োজনও বোধ করি না, তাই সেদিনও কি তিথিনক্ষত্র ছিলো আমার মনে নেই| আপনারা কখনও লাল আকাশ দেখেছেন? রাত্রে? সেদিনের রাতের আকাশটা ছিলো আমার কাছে সর্বসাকুল্যে লাল| আমি মাথা ঘুরিয়ে আকাশের দিকে চেয়ে থাকার মতো অবস্থায় ছিলাম না| আমার উপর তখন সেই নাম না জানা অদৃশ্য শক্তি ভর করেছে| কিছুক্ষণ অবশ অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও আমি যেন বুঝতে পারছিলাম যে আকাশটা আস্তে আস্তে লালে লাল হয়ে উঠছে|
আকাশে হয়তো সেদিন চাঁদ ছিলো, আর তাইজন্যই আমি দেখতে পেয়েছিলাম সেই ভয়ানক জিনিসটা......
জানালা দিয়ে চাঁদের (লাল) আলোটা এসে পড়েছে আমার পায়ের কাছে দেওয়ালটার উপর, আর সেই দেওয়ালে আস্তে আস্তে উঠে আসছে একটা ছায়ামূর্তি| নীচ থেকে দুটো হাত উঠে কোনভাবে বোধ হচ্ছে যে জানলার উপরে লাগানো নেট টা আঁকড়ে অনায়াসে উঠে যাচ্ছে উপরের দিকে| এটি একটি নারীমূর্তি, ছায়া দেখেও অনায়াসে আমি আন্দাজ করতে পারলাম| কিন্তু সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় যেটা সেটা হল যে এই নারীমূর্তি যা আমার জানলা বেয়ে উঠছে সে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র| এই অদ্ভুত প্যারালাইসিসের মত অনুভূতি সত্ত্বেও ওই নারীর ছায়া শরীরটার দিকে তাকিয়ে আমার বুকটা কেমন জানি কেঁপে উঠলো প্রবল ভয়ে| বিবস্ত্রা ছায়ামূর্তি আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠে গেলো| ব্যাস সেদিনের মতো এটুকুই|
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলাম| সেদিনের পর থেকে আর কোন দৃশ্যত অলৌকিক বিষয়বস্তু আমার চোখে পড়েনি| চারতলার ছাদে এক অদৃশ্য নারীমূর্তির আরোহণ মোটেই ইগনোর করার মত কোন বিষয়বস্তু নয়|
(আজ) রাত্রি ১ টা|
আপনারা সাক্কুবাসের নাম শুনেছেন? সঙ্গমপিপাসী নারীপ্রেতমূর্তি| সঙ্গমের নেশায় কোন এক পুরুষকে নিজের নেশায় আবদ্ধ করে তার সাথে সঙ্গমের মাধ্যমে নিজের অতৃপ্ত বাসনাকে পরিপূরণ করে এরা| বদলে শক্তিশালী হয়ে ওঠে সাক্কুবাস, আর মৃত্যু অনিবার্য হয় ঐ পুরুষটির|
সাক্কুবাস এসেছে| আজ|
সেই ছায়া নারীমূর্তি আর কেউ নয়, স্বয়ং সাক্কুবাস| আজ সে ফের এসেছে, দেওয়াল বেয়ে জানালা ভেদ করে আমার ঘরে ঢুকে এসেছে| আমি স্থির হয়ে তাকিয়ে আছি সিলিং এর দিকে, আমার সেই প্যারালিসিস ভাবটা আবার ফিরে এসেছে| আস্তে আস্তে সিলিং বেয়ে নীচে নামছে সে এবার| দৃষ্টি সটান আমার দিকে, কেবলই এক ছায়ামূর্তি, যার চোখ বলে কিছু নেই, চোখের জায়গায় আছে আছে শুধু দুটো লাল উজ্জ্বল বিন্দু| সাক্কুবাস আসছে, আরো এগিয়ে আসছে| আমার বুকটা যেনো আরো...আরো ভারী হয়ে আসছে.....আজ আবার আমার সাথে সেইই একই জিনিস হবে যেটা আজ থেকে দেড়বছর আগে........আঁ আঁ..........সাক্কুবাস আমায়................
ব্যাঙ্গালোরের এক বাড়িতে পেইং গেস্ট হয়ে আসা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ| জানা যায় যে যুবক একাই থাকতো, একেবারেই সোশ্যালাইজিং করতো না| সারাদিনই প্রায় ঘরের মধ্যে বসেই তার যাবতীয় কাজ বা অজানা কিছু চলতো| তার মৃত্যুর কারণ হিসাবে রিজনাল ডাক্তার শর্মা আন্দাজ করেছেন সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক ডিউ টু মেন্টাল ট্রমা| তার কিছু যাবতীয় মেডিক্যাল হিস্ট্রি রয়েছে, যার সম্পর্কে খোঁজখবর করে জানা যায় যে যুবকটির বছর দেড়েক আগে ধর্ষণ হয়েছিলো| সেইটার ট্রমা সে কাটিয়ে উঠতে পারেনি ঠিকমতো| ধীরে ধীরে সেই ট্রমা বেড়ে একরকমের মেন্টাল ডিসঅর্ডার হয়ে দাঁড়িয়েছিলো| ফলস্বরূপ মাঝে মাঝেই তার হ্যালুসিনেশন হতো| সবটা মিলিয়ে ভীষণ খারাপ মানসিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়| হয়তো হ্যালুসিনেশনের দ্বারা সে নিজের একটা অন্য জগত তৈরি করে নিয়েছিল| হতে পারে এটাই তার মৃত্যুর মূল কারণ|
বিছানার পাশে একটা ছোট টেবিলের উপর রাখা একটা বইয়ের উপর চোখ পড়লো ডাঃ শর্মার| বইটার পাতাটা খোলা| পুলিশের বোধহয় আগেই চোখ পড়েছে|
ডাঃ শর্মা এগিয়ে গেলেন বইটার দিকে| যে পাতাটা খোলা, সেটার দিকে চোখ পড়তে চমকে উঠলেন তিনি| পাতাটায় লেখা-' সাক্কুবাস- এ টেল অফ হেল'|