উত্তর পেলাম না
উত্তর পেলাম না
আমি সারাজীবন যা কিছুকে
জড়াতে চাইলাম আপন ভেবে ,
সকলেই নিয়েছে মুখ ফিরিয়ে
হয়তো আমার প্রশ্নবানে তারা জর্জরিত -
তাই উত্তর কেনোই বা দেবে ?
আমি ঐ সুদূর গগনপানে তাকিয়ে
আর্ত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেছি -
হে ! নীলিমাময় নীল , তোমার থেকে
শুধু একমুঠো নীল দেবে ধার ?
অমনি গুম হয়ে নিকষ কালো রঙ
ছড়িয়ে পড়লো গগনের গায়ে -
বুঝতে পারলাম , রাগ করেছে
তাইতো অমন কালো সাজে মুখভার ।
আমি ঝরে পড়া অঝোরধারা বৃষ্টির কাছে
করুণ কন্ঠে বলেছি ,
হে ! মুখর বাদল ধারা, আমাকে কি
তোমার থেকে এক আঁচলা
গলিত রৌপ্য ধার দেবে ?
অমনি সাথে সাথে বিকট গর্জন করে
বজ্রপাত করে বিরক্তি প্রকাশ করলো ।
আমি খরস্রোতা তটিনীর তীরে দাঁড়িয়ে
আবেগ জড়ানো কন্ঠে বলেছি ,
হে ! সমুদ্রদয়িতা আমাকে দেবে কি
তোমার কিছু স্রোতধারা ?
সাথে সাথে স্রোতস্বিনী ফুলে ফেঁপে
দুকূল ছাপিয়ে উঠলো ,
বুঝতে পারলাম, আমাকে কিছু দিতে
নির্ঝরিনীর বিশাল আপত্তি ।
আমি সাগর তীরে হাঁটু মুড়ে বসে
প্রার্থনার সুরে বলেছি ,
হে ! বারীন্দ্র , আমাকে কি ভাসিয়ে নেবে
তোমার সুনীল জলধারায় ?
জানি না কি এমন বললাম আমি !
সাথে সাথে বিশাল বিশাল গগনচুম্বী
তরঙ্গলহরী আছড়ে পড়লো কিনারায় ,
আমার বুঝতে বাকি রইলো না
পয়োধির বিরক্তি প্রকাশ ।
আমি সুবিশাল পাহাড়ের কাছে গিয়ে
চীৎকার করে বলেছি ,
হে ! মহীধর , তোমার খানিকটা
নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেবে কি ধার ?
দেখলাম চতুর্দিকে প্রতিধ্বনিত হয়ে
আমার সব প্রশ্নগুলো যেন
আবার আমার কাছেই এলো ফিরে ,
বুঝতে পারলাম , পাষাণ হৃদয় এ পাহাড়
কর্ণকুহর রুদ্ধ তার ।
অবশেষে ঘুমের মাঝে মৃত্যুকেও
করতে চেয়েছি আলিঙ্গন ।
যন্ত্রনার সুরে মৃত্যুকে বলেছি ,
হে ! কালনিদ্রা , আমাকে তুমি
নিজের বুকে দেবে কি স্থান ?
সাথে করে কিছুটা পথ নিয়েও গেলো
কিন্তু কেনো জানি না আবার ফিরিয়ে দিলো ,
বুঝতে পারলাম আমার এখনো
আসেনি সময় , পঞ্চত্বপ্রাপ্তির ।
গগন , তটিনী , সাগর , পাহাড়
এমনকি মৃত্যুও কোনো জবাব দিলো না ,
সবাই ফিরিয়ে দিলো শূন্য হাতে ।
কতো রকম ভাবে আকুতি মিনতি করেও
আজও আমি তাদের থেকে
কোনো উওর পেলাম না ।
