স্কুল জীবন
স্কুল জীবন


মনের ক্যানভাসে দিচ্ছে উঁকি হারিয়ে যাওয়া দিন,
বাবার হাত ধরে স্কুলে ভর্তি হওয়ার স্মৃতি অমলিন;
মা'কে ছেড়ে ইস্কুলে না যেতে চেয়ে কত কান্নাকাটি!
ক্রমশ এই শিক্ষাঙ্গন হল প্রিয়, আনন্দ জমজমাটি;
সঙ্ঘের আশ্রমে ঠাকুর-মা-স্বামীজি ও তাঁদের বাণী,
অলক্ষ্যে অনুপ্রেরণা আর এগিয়ে চলার সঞ্জীবনী;
সেই চক-ডাস্টার, বেঞ্চে-বোর্ডে অবাধ আঁকিবুকি,
বন্ধুত্ব গুলো আড়ি আর ভাবেই ছিল ভীষণ সুখী;
মনে পড়ে সেই টিফিনের মাঝে বেঞ্চ বাজিয়ে গান,
খুনসুটি আর হাসিঠাট্টা, পাশাপাশি মান-অভিমান;
জল থইথই বর্ষার দিনে কাগজের নৌকো বানানো,
'রেনি ডে'র মুখরতায় ভেসে বন্ধুদেরকে ভাসানো;
স্বপ্নসন্ধানী চোখে কল্পনার মায়াজাল একান্ত গহনে,
মানুষ হয়ে আগামীর পথ চলার ইচ্ছেটা ছিল মননে;
খোলা জানালায় চোখ রেখেই প্রথম কবিতা লেখা,
সততা, নিয়মানুবর্তিতার সহজপাঠ এখানেই শেখা;
স্কুল ম্যাগাজিন, অনুষ্ঠানের মহড়ায় কত কলরব!
একাধারে পড়াশোনা, খেলাধুলা, ধ্যান, স্তোত্র, স্তব;
প্রতি বছর লেখাপড়ায় প্রথম স্থানেই ছিলাম অগ্রণী,
শিক্ষিকাদের স্নেহসান্নিধ্যে পেয়েছিলাম আশীর্বাণী;
রামকৃষ্ণ মিশন আয়োজিত প্রতিযোগিতায় হইচই,
সাফল্যের সাক্ষী আজ ঘরভর্তি মেডেল-স্মারক-বই;
মা-বাবার পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারাই শিক্ষাগুরু,
তাঁদের আঙুল ধরেই হয়েছিল জীবনপথ চলা শুরু;
বিদায়বেলায় প্রিয় বিদ্যালয় ছেড়ে আসার হাহাকার,
স্কুল জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি সেই 'সেরা ছাত্রী' পুরস্কার;
মাধ্যমিকের গন্ডি শেষে এলাম উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে,
সেখানেও স্নেহ-ভালোবাসা, নস্টালজিয়া মুহূর্ত ছুঁলে;
ব্যস্ত জীবনে আজকাল 'লাঞ্চ' করার সময় পাই না,
টিফিন বক্সগুলোর 'টিফিন টাইম' এখন আর হয় না;
ফিরে পেতে চাই শৈশবের সেই অনাবিল স্কুল জীবন,
বড় হয়ে জটিলতার বেড়াজালে বাস্তব কঠিন ভীষণ।