চিঠি
চিঠি
কিছুদিন আগে পড়ার সেই পুরনো ঘরখানি খুলেছিলুম,
পেয়েছিলাম , সেই পুরনো দিনগুলির ঘ্রাণ
সেগুলো যে আমাদের কবে ছেড়ে চলে গেলো,
আমরা তার টেরটিও পেলাম না।
পেয়েছিলেম প্রায় হাজারখানেক চিঠি,
তার অর্ধেকই নষ্ট হয়ে গেছে
কিন্তু আমি তখন নস্টালজিয়ার দেশে,
খেয়াল নেই সেদিক পানে আর!
মনে হচ্ছিল, আবার আমার ষোল বছর বয়স ,
জানলার এপারে বসে আছি আমি
গরমের ছুটির প্রথম চিঠিখানি পেলুম ;
দুপুরবেলায় বসে পড়ছি সেটা তাই ।
বা ঝড় উঠেছে তুমুল বেগে সেদিন,
স্কুলের পর এসে লিখছিলুম তোকে চিঠি,
সেই ঝোড়ো হাওয়ার রাগ হোল ভারী
উড়িয়ে নিয়ে গেলো আমাদের গল্পগুলোকে, অজানার দেশে !
বৃষ্টি হয়েছিল সেদিন বিকেলবেলায়,
ভিজিয়ে গিয়েছিল আমার খাতা-বই ,
হয়তো সেই না পাঠানো চিঠিও ভিজেছিল;
মুছে গেছিল তাতে লেখা সব কথা !
অনেক চিঠিই তো লিখেছিলুম,
পাঠিয়েছিলেম তার মুঠি - ভরা অংশ,
কত ভিজে গেছিল চোখের জলে,
কতগুলো ফেলে দিয়েছিলেম রান্নাঘরের উনুনে,
তারা জ্বলে-পুড়ে হয়ে গেছে ছাই!
সময়ের সাথে চলে এল ফোন,
আমদের চিঠি লেখা হোল বন্ধ,
আমার বাক্স ভর্তি চিঠিগুলো তাই ,
হারিয়ে গেছিল আমাদের সেই স্কুলফেরত অফুরন্ত গল্পের মত !
অনেক বছর বাদে ফিরে পেলেম সেই চিঠি,
সেই স্কুলের দিনগুলির অনুভব -
না জানি আর কত কথা বাকি আছে,
না জানি আর কতগুলি, আজ বলতেই চাই না!
জানলার এপারে বসে আমি চেয়ে দেখি
বাক্স ভর্তি রঙিন কাগজের ভিড়,
যেন আমরা এসে মিশেছি কাগজের উপর কালি হয়ে,
ভাগ করে নিচ্ছি কত কথা, সেই পুরনো সময়গুলির মত !
ধুলো মাখা সেই চিঠিগুলো,
আমদের অসম্পূর্ণ কিছু কথা;
থেকে গেছে শুধু সময়ের ছোয়াখানি;
আর লুকিয়ে থাকা মনের কিছু ব্যথা ।