শিক্ষার সার্কাস
শিক্ষার সার্কাস
মাধ্যমিকে লেটার পেয়ে পাস করেছে,
পাশের পাড়ার রমেন;
তবুও অখুশী তার পরিবার,
কারণ কি তা জানেন?
পাস করেই জেদি ছেলে,
আজব বায়না ধরে,
আর্টস নিয়ে পড়বে সে,
সায়েন্স-কমার্স ছেড়ে।
পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয় -স্বজন,
শুনে মুচকি হাসে;
প্রশ্ন জিগায়, কি আছে ওই;
ভূগোল-ইতিহাসে!
নাম্বার পেয়েছে নেহাত ভাগ্যের জোরে,
স্পষ্ট বুঝেছে তা;
সায়েন্স কমার্স না নিলে যে,
সারা জীবন বৃথা।
একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি,
উচ্চ মাধ্যমিক পাসে;
ছেলের পছন্দ নেবে অনার্স,
পছন্দের ইতিহাসে।
নিন্দুকেরা মুখিয়ে ছিলো,
বললে তারা ছো-ছো;
চাকরিবাকরি হবে না কিছুই,
অন্য ধান্দা খোঁজো।
যদিবা নিতে ইংরেজিটা,
অথবা ধরতে ভূগোল বই;
সুযোগ থাকতো খানিক কতক,
জীবন চলতো চলনসই।
ইতিহাসতো মেয়েদের বিষয়!
খুবই নীচু ক্লাসে,
বস্তাপচা অতীত ঘাঁটায়,
কখনও কারুর আগ্ৰহ আসে!
অঙ্ক-ফিজিক্সের আভিজাত্যের কাছে,
এ নেহাতই খেলো।
যে গাধারা ইতিহাস পড়ে,
তাদের থাকেনা চালচুলো।
প্রেমিকার তার লজ্জা ভীষণ,
পারেনা পরিচয় দিতে;
ইতিহাস পাগল ছেলেকে তার পরিবার,
ঠিক পারবেনা মেনে নিতে।
দীপ্ত কণ্ঠে রমেন বলে,
তাহলে ঠিক করো মিটিং;
দেখবো সকলে কেমন পারো,
রেডিও কার্বন ডেটিং!
বলতো কিভাবে ঘটেছিলো বাবরের হাতে,
লোদীর পরাজয়;
প্রাচীন সৌধ- প্রাসাদ কিভাবে জাগায় এখনো,
লক্ষ লক্ষ মানুষের বিস্ময়!
কিভাবে সভ্যতা সৃষ্টি হয়েছে,
হাজার বছর আগে?
অথবা বলো সংবিধানে মোদের,
ঠিক কতগুলি ধারা থাকে!
আসলে বিষয়ে বিষয়ে ভাগ হয়না,
ভেদ হয়না জ্ঞানে।
এই উপলব্ধি হলেই বদলাবে সমাজ,
উন্নতি ঘটবে শিক্ষার মানে।।
