সে তো আর শ্রাবণী পাল নয়
সে তো আর শ্রাবণী পাল নয়
হ্যাঁ হ্যাঁ , আমার প্রিয়তমা নাইবা হলো সেই অপরূপা সুন্দরী,
সেই মেঘবালিকার মত পড়ে না তার গালেতে টোল,
কোকিলের মত নয় তার কণ্ঠস্বর।
সেই কলেজে প্রথম দেখা শ্রাবণী পালের মত নেইকো তার ভুবন ভোলানো হাসি ,
যাকে একবার দেখলেই আপনিও যে কিংকক্তব্যবিমূঢ় হয়ে বলে উঠবেন, “ আমি তারে ভালোবাসি।“
তবে আমার প্রিয়তমার চোখে আমি দেখছি , এক চাতকের মত এক বিশাল অপেক্ষা,
যদি আমি তার জীবনে কখনও বৃষ্টি হয়ে নেমে আসি ।
তবু কি হয়েছে, সে তো আর আমার বন্য উদ্দীপনা প্রেমী শ্রাবণী পাল নয়।
আমার উপস্থিতি তার শ্যামলা মুখের মুচকি হাসিতে প্রকাশ পায়।
তার প্রতি পরশে এক নৈসর্গিক মৃত্যু খুঁজে পাই।
তার ক্ষুদ্র বক্ষে মাথা দিয়ে সারাদিনের দুঃখ নিমিষে হারাই।
শিশুসুলভ ঠাট্টায় কোন এক পড়ন্ত বিকেলে বেঁচে ওঠার রসদ খুঁজে পাই ।
দুঃখের সাগরে যখন হতাশা আমার শ্বাসরুদ্ধ করে,
তখন সে বৃথাই শান্তির বাণী হয়ে ঝরে পড়ে আমার শহরে,
তবু কি হয়েছে, সে তো আমার শ্রাবণী পাল নয়।
তার চোখের দিকে তাকালে কোন মাদকতা আমাকে আচ্ছন্ন করে না।
তার ভালোবাসায় কোন পৈশাচিক ক্ষত সৃষ্টি হয় না,
বক্ষে বসে কোন এক পিশাচিনির মত রক্ত চুষে খায় না।
সৃষ্টি হয় না কোন নৈসর্গিক রাতের তিক্ত অনুভূতি।
প্রতিটি দংশনে সৃষ্টি হয় না হৃদমাঝারে কোন সুগভীর ক্ষত।
যদিও তার এক পলক দৃষ্টিতে আমার মনের যৌনতা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
চারদিকে এক কামুক পাগলের মত যোনির সন্ধান বাধাপ্রাপ্ত হয়।
তবু সে তো আমার পৈশাচিক শ্রাবণী পাল নয়।
আমার প্রিয়তমার চোখের জল আমার আন্তরিক খিদের তৃষ্ণা মেটায় ।
কোন অপার্থিব প্রাণীর নৈসর্গিক দংশনে ক্ষত বিক্ষত হয় না আমার হৃদয়,
রক্ত ঝরে পড়ে না কারও নখের কোণ ঘেঁষে,
প্রতি রাতে কাকুতি মিনতি করে বলতে হয় না, নীরবতা রাখো , আমার প্রাণ-ভম্রারে বাঁচতে দাও।
কোন উল্লাসের হাসি আমার শ্বাসরুদ্ধ করে দেয় না।
কোন স্পর্শ আমাকে অমানুষিক অত্যাচার করতে বাধ্য করে না।
আমার প্রিয়তমা কোন এক স্বস্তির নিশ্বাস হোক বা আমার দুঃখের জীবনের উপসংহার।
সে তো ভাগ্যক্রমে পৈশাচিক শ্রাবণী পাল নয়।
হৃদয়ের ক্ষত চিহ্ন আজ নিশ্চিহ্ন হয়, বাঁচার রসদ নিয়ে আবার বলতে পারি,
আমার প্রিয়তমা হল আমার সঠিক পথ প্রদর্শনকারিনী, কোন ঝোড়ো বিপর্যস্ত রাতের হিংস্র শ্রাবণী পাল নয়।
-শুভাশীষ হাজরা