স্বাদ-হীনতা
স্বাদ-হীনতা
বুড়ো মানুষটা এখনো ভ্যান টানছে !
বুড়ো চাষী টা এখনও ফসল বুনছে।
বাড়ির দু জোড়া পেটকে ভরাবে বলে।
এই কী তবে স্বাধীনতা ?
না স্বাধীনতায় পরাধীনতা !
হে বিপ্লব-
তুমি ফিরে এস একবার আমার ভারতবর্ষে
নেতাজি আজও নিখোঁজ,
আজও চোদ্দটি লোকসভা নির্বাচন,
স্বাধীনতার ৭৪ টি বছর পরেও
সে রয়ে গেছে অপ্রান্তে।
সত্তর হাজার পৃষ্ঠায় আজও সে চিরন্তন রহস্যময়
দেশের মঙ্গলে, না যানি কত নায়ক খলনায়ক হবে
যদি রহস্য উন্মোচিত হয়।
ভগৎ সিং, ক্ষুদিরাম ফাঁসির মঞ্চ থেকে হাসছে।
আমার দেশ স্বাধীন তো আজও হয়নি,
শুধু পাল্টে গেছে রাজার মূর্তিটা
পাল্টেছে কিছু ভাবভঙ্গির চিত্র
আর মানচিত্রের ওপর থেকে - ব্রিটিশের পতাকা।
আজও রক্ত ঝড়ে প্রতিবাদে।
বুলেটের গুলিতে ঝাঁঝড়া হওয়া দেশ
এখনও ক্ষত-বিক্ষত
রাঙানো হোলি, দূর্গাপূজো, পবিত্র ঈদ, দীপাবলী
ঘটা করে পালন করি।
১৫ আগস্ট নিয়ম করে পতাকা তোলা
আর 'তোলা' না দেওয়ায় ভেঙে দেওয়া হয়
ফুটপাথের চায়ের দোকান।
মন্ত্রির অট্টালিকা বুক চিঁড়িয়ে হাসে।
আর পায়ের কাছে বস্তির শিশু
না খেতে পেয়ে কাঁদে-
প্রায়ই দেখি শ্রমিকশিশু, পাথর কাঁধে-
কিংবা পথশিশু, ভিক্ষের থালি হাতে-
ভিক্ষে করছে কিংবা হোটেলে-
এঁটো থালা-গ্লাস-বাটি ধুচ্ছে।
এই
আমাদের স্বাধীনতা ?
না স্বাধীনতাতেই পরাধীনতা !
আশি বছর বয়সের বৃদ্ধার হয় ধর্ষন
তিন বছরের শিশু হয় যৌনতার শিকার
যৌনকর্মীকে বলা হয় বেশ্যা
আর পরকীয়া পায় স্বীকৃতি।
এটাই কী স্বাধীনতা ?
বুকের মধ্যে ঘুমন্ত বারুদের স্তূপ নিয়ে
আর কতদিন বাঁচবে ?
আর কতদিন মুখ বুঁজে সহ্য করবে তুমি
মিথ্যে তেরঙ্গা পতাকা নীল আকাশে উড়িয়ে !
ছোট্ট শিশুটি এখনও যানেনা
ও হিন্দু কী মুসলিম ?
ইহুদি না খ্রীস্টান ?
যে রক্তের পথ মারিয়ে-
স্বাধীনতা তুমি এসেছিলে
সেই পথে আজও রক্ত ঝড়ে
আজও কান্নায় বুক ফাঁটে কত মায়ের।
হে স্বাধীনতা-
পরাধীনতার মুখোশ পড়ে
আর কতদিন চুপ থাকবে ?
উচিত কথা বলা মানা,
ঘুষ ছাড়া চাকরি মানা,
ধর্না ছাড়া অধিকার মানা,
আর তাবেদারী ছাড়া বাঁচায় মানা।
মানা না মানায়,
কিছুই যাই আসেনা-
আমরা তো স্বাধীন দেশের বাসীন্দা।
এটাই কী স্বাধীনতা ?
আমার দেশ তো তখনই স্বাধীন হবে,
যে দিন সকলে তাদের প্রত্যেকের নায্য অধিকার পাবে,
যেদিন হাভাতে মানুষের ভালোভাবে-
খাবার জুটবে।
সেদিনের মেয়েটিকে রাস্তা দিয়ে ভয়ার্ত ভাবে হাঁটতে হবে না।
শিশুগুলি ব্যাগ কাঁধে স্কুলে যাবে।
আমার দেশ সেদিনেতে-
পরাধীনতা কাটিয়ে পাবে স্বাধীনতা।