আমার বিশ্বকর্মা
আমার বিশ্বকর্মা
দেখলাম এক জীর্ন শরীর
বাজার ফিরতি পথে
হাতুরি হাতে দাঁড়িয়ে আছে
মজদুরের সাথে
শুধালুম তাই- "কি ভাই,
কী ব্যাপার?
কাজ নেই কী কলে?"
জবাব এল- "প্রসাদ খাবো,
পুজোটা শেষ হলে"।
আবার ক'লাম- "কাজকম্ম
চলছে কেমন বটে?"
"কাজ নেই আজ"- উঠলো আওয়াজ
"কল বন্ধের জটে"
"গাড়ির কল, কাপড় কল,
চটের কলেও তালা"
শুকনো মুখে লোকটা বলে
"বড্ড পেটের জ্বালা"।
"বাকি লোকের পুজো মানে-
মদ, মাংস, ডিজে
আমার পুজো বউ-বাচ্চার
চোখের জলে ভিজে"।
আমি বললাম - "সরকার নেই?
জানিয়ে দেখ তারে"
তীক্ষ্ম জবাব- "সে তো খোঁজে
বিজয় মালিয়ারে"
"আমার কোনো সরকার নেই
নেই ব্যাঙ্কে টাকা।
ওলা-উবের দায় নিয়েছে
আমার পকেট ফাঁকা"
"কি নাম তোমার?"- প্রশ্ন
আমার-
"কে হে তুমি শর্মা?"
চমকে দিয়ে আর্বিভূত
স্বয়ং বিশ্বকর্মা
ক্ষমা চেয়ে ক'লাম আমি
"এবার নাকি, দুর্গাপুজোয় বোধন"
মুচকি হেসে ঠাকুর বলেন
মা-ও নেবে কী বোধন?"
"বাপের বাড়ির ভাত জোটেনা
নগ্ন দেহ রোগে
এসব দেখেও মা কী আসেন
বারোয়ারির ভোগে?"
পুজো ভ্যানিশ, ঠাকুর ভ্যানিশ
ভ্যানিশ হয় না খিদে
আমার বিশ্বকর্মা দুখী
বন্ধ কলের সিঁদে।