প্রত্নজন্ম
প্রত্নজন্ম
আমরা হয়ত সেদিন কোথাও মিলিত হয়েছিলাম
আমরা হয়ত সেদিন কাছাকাছি এসেও
মিলনের থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে দাঁড়িয়েছিলাম
আমরা হয়ত কুয়াশার মত আশাচ্ছন্ন হয়ে
আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে ভেবে চলেছিলাম
আমরা কোথাও ঠিক মিলিত হবোই.....
আমরা ; আমরা......
নাহ! আর ভাবতে পারছিনা জানো?
সতীর দেহের মত ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে ছড়িয়ে পড়ছি
আমার নামেও কি এক একটা সতী পীঠ হবে, গো?
সতী হবার লোভ আমার কোনোদিন ছিলনা,
তুমি জানো ---
সতীত্বে আমার রুচি নেই!
ঈশ্বর যে নাভী মুলে দীঘির অতল দিয়েছেন
সে নাভীর স্রোত কুলকুল করে বয়ে চলে
সমুদ্র পানে........
তাই, একদিন তুই, হে নবীন কিশোর,
তুই বললি, তোমাতেই প্রেম গো আমার
কোথায় কোন জন্মে, হ্যাঁ, তোমার নাভী মুলেই
সেই যে ভেসে গেছিলাম,
আজ ও তার তল অপার.......!
তুমি বললে, হ্যাঁ হে নবীন যুবক, তুমি বললে,
বুঝলেন, এই আপনাকে আমি চেয়েছি বছর বছর ধরে
বিশ্বাস করুন, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখুন
স্বপ্নের ডিঙি ভাসিয়ে ছিলাম....
ওই নাভীর ছমছমে জল তলে.....
>তারপর, আর দিশা পায়নি
ডিঙিটি আমার!
আপনি বলেছিলেন, হে প্রবীণ কিশোর, আপনিই,
কেন যেন বুক কাঁপে আমার, বলো তো?
কেন অস্থির হয়ে যাই! বেচ্যয়ন বোঝো?
সমুদ্রের বুকে ডানা গজায়
আর আকাশের বুক ভরে জলাধার
কে যে উড়ে যায়, কে যে ভাঙে জলস্তম্ভ.....
আমার আমি আর আমাতে নেই মেয়ে
তুমি বলো, বলো, একবার বলো
তুমি কে? তুমি কে?
কুয়াশায় পাকদণ্ডী কাটি আমি
ক্রমশ নিজেই কুয়াশা হয়ে যাই
কত কত জন্মে
আমি তোমাদের কার কে ছিলাম
কোন প্রভাতে কার ঘরে আলপনা এঁকেছি
কার ঘরে দিয়েছি শঙ্খে ফুঁ
নমাজে নত মস্তক কোথাও
ঘাগড়ায় ঘূর্ণি তুলেছি কার আঙ্গিনায়
কার সঙ্গে বসে তুমুল কাব্যনাট্য আলোচনায়.....
আরো কত কী হতে পারে.......!
নাহলে এত গুলো অস্থির দৃষ্টি........
আমি যে কার কেবা কী ছিলাম!
ক্রমশ নিজেই নিজের নাভী কুন্ডে বিলীন হতে চাইছি
ভেসে যেতে চাইছি সেই সমুদ্রে
যেখানে তোমরা ভেসে গিয়ে ফিরে আসতে পারনি আর
আমরা প্রত্ন জন্ম
আমরা জাতিস্মর !