#ডোরে বাঁধা
#ডোরে বাঁধা
সেদিন তুই আমায় চিনতে পারিসনি।
আমি তোর হাতদুটো ছুঁতে পারিনি,
কিন্তু একদিন আমিই, তোকে তোর পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেছিলাম।
অছ্যুৎ হবার ভয়টা ভুলেছিলাম বেমালুম।
তোরা দেদার সিগারেট খেতিস,
আর কাউণ্টার পার্টগুলো
একজনের মুখ থেকে
আরেকজনের মুখে ঘোরাঘুরি করাতিস;
আমি বলতাম, 'ওরে যক্ষ্মা হবে যে!
নিত্যদিন ওভাবে দমবন্ধ করা কাশি,
আমার অন্তরে সংশয়ের বাসা বাঁধতো।
তোদের হারাবার ভয় ছিলো যে বেশি!
সে অবশ্য আজ থেকে
সাঁইত্রিশ বছর আগেকার কথা
যেন পূর্বজন্মের ইতিহাস!
আজ সবই স্মৃতির অতলে
ক্লান্ত চেতনায়, আধোঘুমে আছে মগ্ন
বিশ্রী তার প্রতিচ্ছবি;
ক্যানভাসে যত আঁকি
সব মনে হয়, এক একটা জলছবি।
তোর অবয়ব, তোর ঝাঁক দিয়ে ডাকা,
নিগূঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকা বন্ধুত্ব,
সবই কি হারিয়েছি, সবটাই ফাঁকা? বন্ধুত্বের জেল্লাটায় ধার কমে গেছে বটে
তোকে ছুঁতে গেলে বড় বুক কেঁপে ওঠে।
জানিস সবাই বলছে,
আমি নাকি তোর সেই ভালোবাসা,
যে তোকে ধোঁকা দিয়ে,
তোকে টেনে হিঁচড়ে বার্ধক্যে নামিয়েছে,
তোকে বধির করেছে,
তোর স্মৃতিকে ঝাপসা করে দিয়েছে।
তুই এত্তো বড়ো করে জিভ বার করে
সবার কাছে স্বীকার করলি,
'না,ও সে নয়। আমরা কস্মিনকালেও
কেউ কাউকে প্রেমের ডোরে বাঁধিনি,
ডোরতো ছিলোই। তবে তা বন্ধুত্বের।
সাথে সাথে তুই এটাও বললি,
জানিস, তোর মুখটা স্মৃতির আঁকড় থেকে টেনে আনতে পারছি না রে,
তবে আনবোই।
বেশ জোরের সাথে,আবার তুই বললি,
এই শোন, তোকে আবার আসতে হবে, হবেই।
বন্ধুত্ব কখনো মিথ্যে হতে পারে না।'
অশ্রুসজল চক্ষে আমি বললাম,
'মনের প্রকোষ্ঠে নিশ্চয়ই তুই আছিস।
মল্লি আবার করে আগের মত বাঁচিস।'
‐--------------------