বিদ্যা রূপ কুশ
বিদ্যা রূপ কুশ
"নদীর তীরে বাস, ভাবনা বারো মাস।"
অথচ এই নদীর ধারে, ধারেই, সভ্যতার হয় বিকাশ।
জনবসতি গড়ে ওঠে এই নদীর তীরে তীরে,
জীবনভর পলি মাটির মাঠে, চাষি যে চাষ করে।
জাল ফেলে জেলে মাছ ধ'রে , তার সংসার চালায়।
পেটটা কোনোমতো ঠিকঠাক চললে পরেই,
ভ্রমণের নেশা যে মানুষের মন মাতায়।
আমাদের জীবন বয়ে চলে এই ভবনদীর তীরে,
পথে আছে নানা বাঁধা, আঁকা বাঁকা চড়াই উৎরাই। তবু সেসব পেরিয়ে, নদী যে সাগরেই যেতে চায়।
সারা পৃথিবী ভ্রমণের ইচ্ছে মানুষের মনে জাগে!
কিছু তীর্থ ভ্রমন করে, মানস ভ্রমণ করতে নারে,
শুধু ভাবে কোথায় ছেড়ে এই মন যাবে যে কোথায় !
আছাড়ি পিছাড়ি কেঁদে চোখের জলে বুক ভাসায়।
ভাঙন রোধ করা যায় নদীতীরে কুশ ঘাস লাগালেই।
মনের লাগামটা যে সকলেরই শক্ত হাতে ধরা চাই,
নইলে মন যেদিকে যখন, খুশীমত ছুটে যেতেই চায়।
ঠিকঠাক যদি হয় কোনো মানুষের চরিত্র নির্মাণ,
জীবনে চলার পথে কিছুতেই ঘটবেনা পদস্খলন।
মানুষের মনের চলন অনেকটাই যে নদীর মতন,
নিয়ন্ত্রণ না করলে কুল ভেঙে বন্যায় ভাসায় জীবন।
পৃথিবী নামের এই বাড়ি, আছে এতে নানা কুঠুরি,
মনে মনে বাসনা করে, সব দেখি সারাক্ষণ ঘুরি ঘুরি।
যতো আছে লোকজন, সকলে তার আত্মীয় স্বজন,
কার ঘরে যাবে কখন, ভরে কি তাতে মানুষের মন !
নদীর তীরে পাথর ফেলে ফেলে বাঁধতে হয় এই মন,
যত্ন করে করতে হয় তাতে বিদ্যা-কুশের বীজ বপন।
মাঝে মধ্যে পাকা ঘাট বানিয়ে, জল নিতে হয় দিতে!
তবেই সে ঘাটে ভিড়ে তরী,স্টিমার,জাহাজ, পানসি,
গুণী মানুষ করেন সেথায় গমনাগমন, হন খুশী।
অতি ধীরে মনের অগোচরে, হয় সেথা নগর পত্তন,
যেতে হবেনা কোথাও ওরে, উঁকি দিতে ঘরে ঘরে,
কাঁচা মাটির ঘরে, ভগবান বাস করেন এই শরীরে,
পবিত্র ভাবের চিন্তায় ডুবে মন্দির হয়ে যায় এই মন।
বিদ্যা-কুশের শেকড় খুব সহজে যায় মাটির গভীরে,
জলের স্রোত প্রবল হলেও, হঠাৎ করে বন্যা এলেও, সহজে প্রভাব পড়েনা এই জীবন নদীর তীরে।
কৃষিকাজ যে তখন চলে, হাল-বলদ ছাড়াই অন্তরে।
আপন মনেই ফসল ফলে, বিকোয়না তা দান করে, সুগন্ধি ফুলের সুগন্ধেতে বাতাস ভরে,
সবার মন কেমন ক'রে যেন আকুল করে।
লেনা দেনা সেরে নেয়, পৃথিবীর এই হাটে-বাজারে।
যখন খুশি যেতে পারে এই দুচোখ বন্ধ করে,
ভগবান এভাবেই, সহজেই পৌঁছে যান ভক্তের ঘরে।