তোমার পূর্ণচ্ছেদ নাকী ...
তোমার পূর্ণচ্ছেদ নাকী ...
হ্যা, তোমার নাম্বার টা এখনও সেভ আছে।
হ্যা, এখনও তোমায় রাস্তায় দেখলে আগের কথা মনে পড়ে।
প্রথম তোমায় ভালো লেগেছিলো, যখন তুমি বিনুনি করা চুল নিয়ে স্কুল এর তিন তলা থেকে পুকুর এর দিকে তাকিয়ে ছিলে। প্রথম কয়েক দিন কাউকে কিছু বলি নি, শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে তোমায় দেখতাম। তুমি বুঝতে পারো নি ঠিক, কিন্তু তোমার একটা বান্ধবি বুঝতে পেরেছিল। তারপর ভাবলাম না, অনেক হলো এবার আমার বন্ধুদের জানাই, জানিয়েও দিলাম। স্কুল লাইফ এর বন্ধু হারামী তো হবেই। শুরু করে দিলো চেচানো। আরো অনেকে জেনে গেলো। তারপর থাকে আমার স্কুল এ যেতাম যেনো তোমার জন্য। সবার আগে স্কুল গিয়ে গেট এর দিকে তাকিয়ে থাকতাম, এই বুঝি তুমি এলে বলে। তারপর আবার পর্থনা করতে যাবার সময় , তোমার পেছন পেছন যেতাম, বা আগে চলে যেতাম তোমাকে দেখার জন্য। আবার টিফিন হলে তুমি তিন তলায় আর আমি এক তলায়। দেখতাম তোমায়। আবার ছুটি তুমি বাড়ী যাচ্ছে, আর শুক্রবার স্কুল এর পর তোমার পড়া থাকতো আমি যেখানে পড়ি ওখানে, সে দিন টা তো আমার জন্য খুব ভালো তোমার পেছন পেছন যেতাম। একদিন তোমার বান্ধবি তোমায় বললো আমাদের ব্যাপার টা নোটিশ করার জন্য। তুমি তারপর থাকে বুঝতে পারলে।
যখন দেখলাম তুমি বুঝতে পেরে গেছো, আমার বন্ধু গুলো বলে দিতে বললো। আমার তো তখন বলার মতো হিম্মত ছিলই না! কিন্তু বন্ধু দের কথা কে আর ফেলতে পারে। একটা বৃহস্পতিবার, কি মনে হলো যে তোমাকে ওই দিন ই প্রপোজ করবো। একজন বন্ধুকে বললাম লেখ লাভ লেটার। সে লেখা শুরু করলো, ইমপ্রেস জমানোর জন্য ইংলিশ এ লিখেছে। কিন্তু প্রচুর বানান ভুল ছিলো। আমি তো বানান ভুল করার মাস্টার তাই আমি ও বুঝতে পারি নি।
তোমাদের সঙ্গে একটা ছেলে পড়তো তাকে পটিয়ে ছিলাম তোমার খবর দেবার জন্যে। তার হাত দিয়েই ওই লেটার টা তোমার কাছে পাঠিয়ে দিলাম। তারপর, ছুটির সময় দেখলাম তুমি আর তোমার বান্ধবি সবার মুখে একটা রাগ এর আভাস। বুঝেগেলাম গেলো সব। ভাবলাম কাল মনে শুক্রবার, স্কুল আসবো না। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গেলাম সেই দিন।
পরের দিন, মনে শুক্রবার, পড়তে গিয়ে স্যার এর কাছে শুনলাম আমার লেটার টা বর্তমানে স্কুল এর হেড স্যার এর কাছে, কি করে কি ভাবে গেলো জানি না। টিউশন স্যার স্কুল এর স্যার তাই বলতে বললো। আর স্যার আমাকে ভাবে ছিলো আমি দিয়েছি। আমি বুঝে গেছি আমার আজ স্কুল জয়াওয়া যাবে না। শুনেছি আবার তার বাবা ও যাবে স্কুল এ। আমি আমার সব বন্ধু কে স্কুল যেতে না বলে দিলাম। টিউশন থাকে বাড়ি গিয়ে তাড়াতাড়ি খেয়ে স্কুল এর দিকে ঘুরতে গেলাম দেখলাম তার বাবা আরো অনেক গুলো লোক জন আমাকে খুঁজছে, বুঝলাম ধরতে পেলে আমাকে আস্ত রাখবে না। স্কুল গেট এর সামনে দাড়াতেই একটা লোক আমার কাছে এসে বলছে কে তুমি দিয়েছিলে চিঠি। আমি অবাক, কে বললো ভাই একে? কেনো দাড়ালাম এখানে!! তারপর বুঝলাম আমাকে জিজ্ঞেস করছে! আমি একটু অভিনয় করে বললাম কি চিঠি!
তখন বললো পুরো ব্যাপার টা। আমি সব শুনে বললাম, আমি কিছু জানি না, আমি এই স্কুল এ পড়ি না,। বলে আমি আর আমার বন্ধু সোজা গেলাম নদী ধারে। সেখানে তিন জন বন্ধু একসাথে গল্প করছি। হটাৎ একটা বন্ধু বললো ওর দাদা তার এক বন্ধু এর বন্ধু। তাই ওর দাদা কে ডাকলো সব ঝামেলা মেটানোর জন্য। ওর দাদা কে ফোন করতে ওর দাদা কিছু সময় এর মধ্যে চলে এলো। এমন ভাবে আসছিল মনে হচ্ছে এসেই আগে গুতোবে। যা হোক কিছু তেমন কিছু বললো না। আমি সরি বলে নিলাম। তার বোন তার তো রাগ হওয়া স্বাভাবিক। ওই দিন ওটা হবার পর একটু শান্তি হলো মনে। তারপর বাড়ি এসে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরের দিন মনে শনিবার, স্কুল গেলাম হেড স্যার ডেকে পাঠালো, প্রথম বারে বন্ধুরা বললে দিলো সে স্কুল এ আসে নি। টিফিন এ বারান্দায় দাড়িয়ে আছি হঠাৎ হেড স্যার দেখে ফেলেছে। তারপর ডাকলো আমাকে। অনেক ভয়ে গেলাম, যেতে প্রথমে একটু বোকা বকি করলো। তারপর বুঝিয়ে গার্ডিয়ান কাল করে দিলো। আবার ঝামেলা বাড়িতে তো জানানো যাবে না। জানতে পারলে, আমি শেষ। বাড়িতে কিছুই বলি নি। একদম স্কুল গেলাম মঙ্গলবার। হেড স্যার এর ক্লাস গুলো করতাম না। তাই স্যার ভাবত আমি স্কুল আসছি না।
অন্য দিকে ওকেও দেখতে পেতাম না। বাইরে বেরাতাম ও না। এই ভাবে একটা সপ্তাহ চললো। কিন্তু আমি দেখা বন্ধ করে নি। কিছু দিন পর ডাক এলো ওর দিকে থেকে। বললো কথা বলবে। আমি তো খুব খুশি, শেষ ক্লাস পিটি ছিলো ওকে ওখানে ডেকেছি। ও আস্তে অনেক টা সহস যোগিয়ে গেলাম ওর কাছে, বললাম ভালোবাসি বলে, ও বললো পরে ভেবে জানাবে। আমার মন শুকনো করে বাড়ি গেলাম, কারণ আমার মনে হচ্ছিলো ও, না বলবে। তারপর দিন ওর এক বান্ধবী বললো ও হ্যা বলেছে।
তারপর খুব খুশি, বন্ধুদের পার্টি, খুব খুশি, স্কুল এর সরস্বতী পূজা, অনুষ্ঠান হচ্ছে আমরা গেলাম তিন তলায় কথা বলার জন্য। আমার এক বন্ধু গিয়ে কয়াকটা ছবি তুলে দিলো। এখনও রয়েছে ছবি গুলো আমার কাছে। ডিলিট করার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু ডিলিট করতে পারি নি এখনও। তার টিউশন এর ওখানে পুজোতে তুমি বসেছিলে তোমাকে না জানিয়ে কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম সব আছে এখনও। ইচ্ছে হলেই দেখে নেই। তারপর ফোনে কথা আস্তে আস্তে সম্পর্ক একটু গভীরে গেলো। কিন্তুু অতটা গভীরে না। একদিন ইউটিউব এ একটা ভিডিও দেখলাম। ওখানে বলা ছিলো যাকে ভালোবাসো তাকে একবার ছেড়ে দেখো যদি ফিরে না আসে ভাববে তোমাকে সে মন থাকে থাকে ভালোবেসে না। কি মনে হলো জানি না তোমাকে না বলে দিলাম। নিজে থেকে বলি নি তোমর সেই বান্ধবি এর হাত দিয়ে বলিয়েছি। তারপর থেকে তোমাকে ফোনে পাইনি। কথা বলার অনেক চেষ্টা করেছিলাম তুমি বললে না। আমার মনে হলো এতো দিন তাহলে তুমি বাধ্য হতে ছিলে। স্কুল এর টেস্ট পরীক্ষা হয়েগেছে। আর স্কুল যেতে পারবো না। অনেক চেষ্টা করে তোমার সাথে আর কথা বলা হলো না। শুনেছি তুমি নাকি আমার উপর রেগে আছো। কিন্তুু কেনো জানি না। স্কুল লাইফ এর সাথে সাথে তোমাকে ও হারালাম।
তারপর , এখানে পড়ার ইচ্ছে আর হলো না। কারণ তোমায় যতো দেখবো তত কষ্ট হবে। তাই চলে গেলাম কিছুটা দূরে। নতুন বন্ধু। প্রচুর ভিড়, প্রচুর চাপ, প্রচুর বন্ধু, কিন্তু তোমাকে ভুলতে পারলাম না। " তু পেহেলা পেহেল পেয়েয়ার হে মেরা"
তোমার সঙ্গে যা কথা হয়েছিলো সমস্ত কাল রেকর্ড আছে এখনও, অনেক ছবি, আর ফোন নম্বর সে তো এখনও মুখস্ত।
দুটো প্রশ্ন এখনও আমার কাছে অজানা থাকলো।
১. তুমি কেনো কথা বলতে চাইছো না?
২. শুনেছি তুমি নাকি রেগে আছো আমার উপর, কিন্তু কেনো?