Baiduryya Sarkar

Romance

2  

Baiduryya Sarkar

Romance

রঙ

রঙ

8 mins
825



শুভ্রর আজকাল মনে হয় জীবনের মানে অনুসরণ । গ্রীষ্ম থেকে বসন্ত তারপর আবার গ্রীষ্ম, একটা অনন্ত রিপিটেশান । সকালে সাড়ে সাতটা থেকে পৌনে আটটার বাস ধরে ন’টার মধ্যে অফিস ঢোকা, সারাদিনের শেষে রাত সাড়ে আটটায় বাড়ি ফেরা । প্রায় একবছর এই অফিসে চাকরি করার সুবাদে সবকিছুই খুব পরিচিত, জানাশোনা এবং অবশেষে একঘেয়ে হয়ে গেছে । সকালের বাসের ড্রাইভার কন্ডাক্টর চেনা, সহযাত্রীরা মুখচেনা । আলতো হাসি যা একান্তই পরিচয়সূচক কিংবা দশটাকার নোটের থেকে ঠিক ন’টাকা কেটে বাকী এক টাকা আর টিকিট দিয়ে কন্ডাক্টরের গন্তব্য জানা আছে মার্কা হাসি অথবা কোনও কাজ উতরে দিলে কারোর সৌজন্যমূলক হাসি। এসব দেখতে দেখতে শুভ্র ক্লান্ত হয়ে পড়েছে । এক বছর খুব দীর্ঘ সময় না হলেও গোটা ঋতুচক্রটা ঘুরে নেবার সুবাদে মোটামুটি চেনা হয়ে গেছে সুর্যের তাপ, বৃষ্টির ছাট বা বসন্তের একমাত্র নিদর্শন রঙিন ফুল ফুটে থাকা । জানা হয়ে গেছে, যতই যাই হোক এসব নিয়েই বয়ে যেতে হবে আজীবন ।

শুভ্র শহরের যে অংশটায় থাকে সেখানে এখনও ঝালমুড়িওলা বেলুনওলা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেরায়, গভীর রাত পর্যন্ত শোনা যায় মালাইবরফের ডাক । ছুটির দিনে কচুরির দোকানে লম্বা লাইন পড়ে । কেউ অ্যাসিডিটি বা ডায়েটের দোহাই যে দেয় না তা নয় । তবু রসগোল্লা বা পাঁঠার মাংসপ্রীতি কমেনি । শুভ্র কলেজের বন্ধুবান্ধবের সাথে চাইনিজ রেস্টোরেন্টে মমো মিক্সড চাউমিন বা পিৎজাহাটে যাওয়ার পরেও গোলবাড়ির কষা মাংস যেন ডার্বিতে সবুজ মেরুনের জেতার স্বাদের মতোই অকৃত্রিম । গলদা চিংড়ির ঘিয়ের স্বাদের মতো বছরে একবার করে বন্ধুবান্ধবরা দল বেঁধে বেড়াতে যাওয়া, সাত থেকে দশ পারসেন্ট ডিএ বাড়া নিয়ে শুভ্র দিব্যি আলগোছে বেঁচে ছিল। নিশ্চিন্ত অথবা নতুন কিছু না ঘটবার সম্ভাবনায় উইকএণ্ডে আড্ডা নেশা, এমনি দিনগুলোয় কাজ- বাড়ি ফেরা খেয়ে দেয়ে ঘুমের পর আবার আবার পরেরদিন সকালের বাস ধরে অফিস যাওয়া... রুটিনে অভ্যস্ত শুভ্র যেন বুঝতে পারলো কোথায় যেন একটা কিছু অমিল লাগছে । শহরটাকে যেন একটু বেশী আপন মনে হচ্ছে, সন্ধের হাওয়ায় যেন বাড়তি ভাললাগা, বাইপাসের ধারে নাম না জানা গাছের লাল ফুলগুলো যেন ওকে চঞ্চল করে দিচ্ছে, উদাস উদাস লাগছে রবীন্দ্রসঙ্গীতের লাইন শুনে ।

শুভ্র গত একবছরের এই ব্রাঞ্চটায় কাজ করছে । নতুন ব্রাঞ্চে প্রথম থেকেই ও আছে, আগে হাওড়ার একটা ব্রাঞ্চে ছিল । এখানকার ব্রাঞ্চে তুলনায় লোকজন কম, ফলে চাপ একটু বেশী । সেসব নিয়ে শুভ্র ভয় পায় না, বিশেষত লাস্ট কোয়ার্টারে কারোরই দম ফেলার সময় থাকে না । হাজার একটা টার্গেট ব্যালান্স অডিটের চাপে সবাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে । তাই বসেরা একটু চেঁচামেচি করে আর শুভ্ররা সেটা নিজেদের মতো করে পরবর্তী পর্যায়ে পাঠিয়ে দেয় । এভাবেই চলছিল এতদিন । কিন্তু এবারের ফেব্রুয়ারিতে মহা মুশকিলে পড়ল শুভ্র ।

সেদিন অফিসে পৌঁছে একপ্রস্ত কনকলের পর যথারীতি নিজের টিমের ওপর সেই ঝাড়টা ব্লো করিয়ে দেবার সময় বিভ্রান্ত শুভ্র লক্ষ্য করলো তার ক্তহার তোড়ে একজনের চোখের জলের ধারাও ফ্লো করছে টুপটাপ । ঘাবড়ে তাকিয়ে থাকা শুভ্রকে লক্ষ্য করে তার ফোঁপানো যেন আরও বেড়ে গেল । খুব স্বাভাবিকভাবেই এর পর আর কোনও কথা চলে না । অন্য একজনকে দিয়ে ওকে ডেস্কে পাঠানোর পরে শুভ্রকেও উঠে যেতে হল ।

মেয়েটার নাম তানিয়া । মাসচারেক আগে জয়েন করেছে, একটু বাচ্চামার্কা হওয়ায় শুভ্র টিমে নিতে চায়নি । কিন্তু ফ্লোর ম্যানেজার ওর ঘাড়েই চাপিয়েছে । ফলে যেটুকু কাজকর্ম শিখেছে, তাই দিয়ে এই কোয়ার্টারে বিশেষ কিছু হবে না সেটা শুভ্র জানে । তবু ও নিয়মমাফিক একটা টার্গেট দিয়ে রেখেছিল আর তানিয়া যথারীতি সেটার কিছু করে উঠতে পারেনি ।

শুভ্র ভেবে পায় না এর’ম মেয়েরা কেন যে সাধ করে চাকরি করতে আসে ! বাইরে থেকে লোকে ভাবে যেন খুব আনন্দের এই কর্পোরেটের বোঝা ঠেলা । আর মেয়েটাকে দেখে তো পরিষ্কার মনে হয়েছিল সদ্য কলেজ পাশ করার পুলক এখনও যায়নি । এখানকার এই চাপ না নিতে পারাই স্বাভাবিক । ওকে দেখে একটা রঙের কথাই মাথা আসে শুভ্রর – পিঙ্ক । নিজের কিউবিকলে বসে গোলাপি রঙের মেয়েটার ফুঁপিয়ে ওঠা দেখতে ভাল লাগছিল না শুভ্রর ।

তখনও লাঞ্চটাইম শুরু হয়নি। শুভ্র কিছু না ভেবে তানিয়াকে ওর সাথে বাইরে যেতে বলল । দু’জন কোনও কথা না বলে যখন রাস্তায় নামলো, তখন আশপাশ বেশ ফাঁকা । সময়টা ফেব্রুয়ারি হলেও বেশ রোদ উঠেছে, তানিয়া সেই রোদ মেখে লালচে হয়ে উঠেছে । কিছু একটা বলার জন্যই শুভ্র বলল, সামান্য একটা কথায় এতো কান্নাকাটির কি আছে ! আমার খুব খারাপ লাগছে... আর তুমি তো এটুকু অন্তত বুঝে গেছ এখানে এসব রোজই হয় ।

এতটা বলে শুভ্র তানিয়াকে লক্ষ্য করছিল মুখের রেখায় কোনওরকম পরিবর্তন হচ্ছে কিনা । যেটুকু বুঝল, তাতে কিছুটা খুশি খুশি ভাব । শুভ্র ঝুঁকি নিয়ে বলল, চলো... । ওদের ব্রাঞ্চের কাছেই একটা আইসক্রিম পার্লার আছে, শুভ্র আগে দু’একবার এসেছে । সেটাতে নিয়ে গিয়ে ঠোঁটের কোণে একটা কৌতুকের ভঙ্গি করে বলল – বলো কি খাবে । তানিয়া একটু অবাক ভঙ্গিতে ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, আমি কি বাচ্চা ! বকাঝকা করে আবার আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে এসেছে । জানো, আমার বাপি ছোটবেলায় এর’ম করে ভোলাতো ।

এতক্ষণে শুভ্র বুঝে গেছে গল্পটা । বন্ধুবান্ধবের মুখে শোনা সিকোয়েন্সগুলো মিলিয়ে বুঝতে পারছে এই নরম মেয়েটার হাতটা ওকে এখন ধরতে হবে । ও হাতটা ধরে চরম আত্মবিশ্বাসের সাথে বলল- তুমি এখনও বাচ্চাই আছো । ব্ল্যাকফরেস্ট বলছি । তানিয়ার মনেও অনেক ঢেউ বইছে, উথালপাতাল হয়ে যাচ্ছে সবকিছু । ও কোনোমতে বলল, তোমার যা খুশি ।

দিনটা যেন কোথা দিয়ে কেটে গেল । মাঝে মাঝে চোখাচোখি হয়েছে । কেউ বলেনি তবু দু’জনের জানা ছিল একসাথে ফিরবে । সাধারণত শুভ্ররা ক’জন একটু দেরীতে বেরোলেও সেদিন ও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে বাইরে একটা সিগারেট ধরিয়ে অপেক্ষা করছিল । সিগারেটটা শেষ হবার আগেই তানিয়া চলে এল । ওদের বাড়ি একদিকে হলেও আগে কখনও একসাথে ফেরানি ওরা । একটা ট্যাক্সি নিয়ে তানিয়ার অ্যাপার্টমেন্টের কাছাকাছি এসে পরস্পরকে গুডনাইট জানিয়েও পা যেন নড়তে চাইছে না । তানিয়ার চোখে স্বপ্ন, ঘোর লাগা একটা অবস্থা । তুলনায় বয়স্ক শুভ্রর সব গাম্ভীর্য আটিটিউড ভেঙে চুরে খানখান । দু’জনকে ছুঁয়ে যাওয়া বসন্তের হাওয়া শুধু জানলো – শুভ্র চ্যাটার্জী আর তানিয়া সুলতানার জীবনের ভারসাম্যের বিন্দুটা একটু চঞ্চল । কিছুটা আশঙ্কায় কিছুটা রোমাঞ্চে আর কিছুটা ভালোলাগায় ।

ঘটনা এমন কিছু মারাত্মক নয় । এমনতো আকচার ঘটে । তাছাড়া শুভ্রর কলেজের বন্ধুবান্ধবীর সংখ্যা কিছু কম নয় । কিন্তু এর’ম ঘোর তো আগে কোনোদিন লাগেনি । সারাক্ষণ ফোনের অপেক্ষা, হোয়াটসঅ্যাপে রিপ্লাই না এলে মনখারাপ । বন্ধুরা শুভ্রকে জ্যাক দিতে লাগলো এবং একেকজনের একেক পরামর্শে শুভ্রর আরও ভোম্বল অবস্থা । সবাই উৎসাহ যতই দিক, এটাও তো সত্যি চাটুজ্জে বংশের ছেলে হয়ে মুসলিমকে তো আর বিয়ে করা যায় না ! যতই চারিদিকে সেক্যুলারিজম চলুক, আজকের দিনেও শুভ্রদের বাড়ি পাড়া বা গুরুজনদের সে’সব বলে লাভ নেই । কিন্তু তানিয়া যে স্বপ্ন বাস্তব সব জায়গায় বড্ড ঘিরে রেখেছে ওকে । কয়েক সপ্তাহে শুভ্রর মধ্যে বেশ খানিকটা পরিবর্তন এসে গেছে ।

তানিয়াও সমস্যাটা বুঝতে পারছে হয়তো । ওর বাবা বাঙালী মুসলিম হলেও মা হিন্দু । তবু কোথাও সংস্কারের বীজ থেকে যায় । ও বোঝে না, বুঝতে চায় না। তবু এটা বুঝতে পারছে শুভ্রর জীবনে তো ও ছাড়াও অনেককিছু আছে । অন্তত শুভ্রর মুখে যেটুকু শুনেছে ওদের দু’জনের সোশ্যাল ব্যাকগ্রাউণ্ডটা আলাদা। ওর পক্ষে শুভ্রকে ভুলে থাকা যের’ম অসম্ভব হয়ে উঠেছে । এসব ভাবতে ভাবতে শুভ্রকে হঠাৎ মেসেজ করে ফেলল, তুমি আমাকে ভুলে বাকী সব নিয়ে থাকতে পারবে ? আমি কিন্তু তোমায় ছেড়ে থাকতে পারবো না ।

শুভ্র রিপ্লাই দিল, এসব না ভেবে মুহূর্তটাকে এঞ্জয় করো । এর’ম তো হতে পারে, তুমি তোমার প্রিন্স চার্মিংয়ের দেখা পেয়ে আমার মতো ভেতো বাঙালীকে ভুলে গেলে । তাতে আমি কিছু মনে করবো না, সুলতানাকে মনের মধ্যে রেখে দেবো ।

এর’ম উত্তরে আরও কান্না পেয়ে যায় তানিয়ার । শুভ্র ওকে সুলতানা বলে খেপায় । আর শুধু বলে, তুমি যদি আমায় ভুলেও যায় আমি কিন্তু তোমায় ভুলবো না। তানিয়া কি পারবে ওকে ভুলতে ! এসব আজেবাজে কথার জন্য ওকে খুব মারতে ইচ্ছে করে, খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করে । সবথেকে ইচ্ছে করে ওকে জড়িয়ে ধরে রাখতে ।

এবার দোল, গুড ফ্রাইডে শনি রবি নিয়ে টানা ছুটি । কিন্তু ইয়ার এণ্ডিংয়ের ঝামেলায় ছুটিগুলোকে খুব একটা রেলিশ করতে পারছে না শুভ্ররা । তবে এটা জানে প্রতিবারের মতো দোল খেলা হবে । সবাই মুখে না না বলবে কিন্তু একবার কেউ ডাক দিলে আর ঘরে বসে থাকা যাবে না । ফুলের আবীর দিয়ে শান্তিনিকেতনের এলিট দোল নয় । মুখে রঙের কয়েক পোঁচ, মাথায় সবুজ সোনালি চুল, কেউ খালি গায়ে রূপালী রঙ মাখা । উদ্দাম দোল । দল বেঁধে হাঁটতে হাঁটতে হেদুয়ার কাছে সিদ্ধির সরবতের নেশার শেষে বহুক্ষণের স্নানের পর ভাত খেয়ে একটা দুরন্ত ঘুম । কিন্তু এবার শুভ্রর খুব ইচ্ছে করছিল তানিয়ার গালে রঙ মাখিয়ে আসতে । অথচ তানিয়া খুব কনফিউজড, একবার বলছে যাওয়ার কথা তারপরই নানা কারণে বারণ করছে ।

শুভ্র ঘেঁটে ঘ অবস্থায় দোলের আগের দিন আড্ডায় কথাটা পাড়ল । মানে এটার কোনও সমাধান বের করা যায় কি না ! সবাই ভাবনাচিন্তা করে যেটা বুঝল, একা শুভ্র বোকার মতো যেতে পারবে না । তাছাড়া সাধারণত অ্যাপার্টমেন্টের দরজা বন্ধ করে ভেতরে নিজেদের মধ্যে রঙ খেলে সবাই, সেখানে বাইরের ছেলেপুলেদের অ্যালাউ না করাটাই স্বাভাবিক ।

এসব নানা যুক্তি পালটা যুক্তি, বিভিন্ন জায়গায় ফোন করতে করতে হঠাৎ ইউরেকা বলে লাফিয়ে ওঠার মতো পরিস্থিতি । একজনের পিসতুতো দিদি ওই অ্যাপার্টমেন্টে থাকে, সুতরাং শুভ্ররা কয়েকজন ওই দিদির সূত্রে ঢুকবে । তারপর তানিয়ার ব্যাপারটা অবশ্যই শুভ্রর কনসার্ণ । বাকীরা এজন্য সাথে যেতে পারে যে শুভ্রকে একা পেয়ে ওসব অ্যাপার্টমেন্টের লোকজন যাতে মুরগি না করে দেয় ! কয়েকজন অচেনা মেয়েদের রঙ মাখাতে পাড়ার উৎসাহেই দৌড়চ্ছে ।

সেদিন পাড়ায় একচোট খেলে, রঙ মেখে ওরা দু’টো ট্যাক্সিতে ন’জন উঠে পিকটাইমে পৌঁছলো ওই অ্যাপার্টমেন্টের কাছাকাছি । ইতিমধ্যে তানিয়াকে ফোন ম্যাসেজ করে দিয়েছে শুভ্র । গেটের কাছাকাছি পৌঁছে দিদিকেও ফোনে ধরা হল । যেন কোনও দুর্গে ওরা প্রবেশ করছে একটা গেটের ফাঁক গলে । বিরক্তি চেপে ঢুকে আরেক কাণ্ড, তিন চারটে বাড়ির ছাদ থেকে একযোগে রঙীন জল এসে ভিজিয়ে দিল ওদের । এতক্ষণে বোঝা গেল গেট পুরোটা না খোলার কারণ।

ততক্ষণে পকেট হাতড়ে শিশি কৌটোর রঙ নিয়ে রেডি হয়েছে ওরা, মানে সামনে যাকে পাবে ধরে মাখিয়ে দেবে । সে যেন এক বিরাট কার্নিভাল শুরু হয়ে গেছে । অথচ শুভ্র তানিয়াকে খুঁজে পাচ্ছে না । চারদিকে রঙের স্রোত, ফুটে থাকা ফুলের মাঝে দিশাহারা শুভ্র হঠাৎ দেখলো চারদিকের সব ঘটনা যেন ফ্রিজ হয়ে গেছে, শুধু দেখতে পেল একটা রঙিন পাখির মতো তানিয়া এসে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ওর বুকের ওপর । দুজন হারিয়ে যাচ্ছে রঙীন বসন্তে । চারপাশে সবার হাসাহাসি দু’জনের মাথায় বালতি করে রঙ ঢালা, হইচইয়ের মাঝে বিহ্বল ওরা দু’জন কিছুই দেখছে না... পৃথিবীর সবকিছু ভুলে দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।

অল্প অল্প বওয়া বসন্তের হাওয়া, সূর্যের আলোর ছটায় তানিয়াকে যেন অপার্থিব মনে হচ্ছিল শুভ্রর । ভিজে সপসপে পাঞ্জাবী, ছেঁড়াফাটা জিন্সে ভিজে জবজবে শুভ্র এর’ম মুহূর্তে ছোট্ট একটা আদর এঁকে দিল তানিয়ার ঠোঁটে । সিদ্ধান্ত নিল, যা ঘটে ঘটুক...আজই তানিয়ার বাড়ির লোকেদের সাথে প্রাথমিক আলাপ করবে এবং বাড়িতে ফিরেও তানিয়ার কথা জানাবে । তানিয়া তখন সবকিছু ভুলে গেছে, তাই হয়তো ভাবছিল – এ বসন্তে ওর প্রিন্স চার্মিং তো এসেই গেছে ওকে জয় করতে ! ওরা দু’জনেই বুঝলো, এর’ম বস্তাপচা গল্প ভীষণ রঙীন মনে হতে পারে একমাত্র বসন্তোৎসবের দিনেই ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance