প্রস্তাবে দেরি
প্রস্তাবে দেরি
আজ নিজেকে বড় অবসন্ন লাগছে কুনালের। খুব যেন হাঁপিয়ে উঠেছে। ছোট বেলার সেই দামাল দস্যি চনমনে ছেলেটা আজ যেন বড়ই ক্লান্ত। কিন্তু এই ক্লান্তির উৎস কী, তার যেন কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেনা ও। কুনাল খেলতে ভালোবাসে তাই বিকেলটা কোনদিনও অন্য কাউকে দিতে পারেনি অন্য বন্ধুদের মত। কিছুক্ষেত্রে সেটার জন্য কেউ বলেছে " জীবনে আর কি.. করলি"। তো আবার কেউ বলেছে "তুই যেগুলো করিস তা অনেকেই পারেনা করতে"। তবে এদানিং কী যেন একটা হয়েছে ওর , Office থেকে ফিরে যেন নিজেই নিজেকে চিনতে পারেনা আজকাল। তবে এমন ভাবার কারন নেই যে অফিসে ও কাজে ফাঁকি দেয়। Office এ যথেষ্ট মনযোগ সহকারে কাজ করার জন্য ওর সুনাম আছে। আগের দু'বছর Employees of the year সম্মান পেয়েছে। আত্মভোলা প্রকৃতিরও নয় সকলকে নিয়ে কাজ করতে ভালোবাসে। যার যা সমস্যা কুনাল দা সহাস্যে তৈরি। তবে কি হল কুনালের। বেশি খাটাখাটনি এর ফল নয়তো! ঠিক করে হয়তো ঘুম হচ্ছেনা। তাহলে কি খেলোয়াড় হলেই বা ওই স্বপ্নটা বয়ে নিয়ে বেরালেই ভালো হত? অফিসে মনমরা থাকলে, কেউ দেখে হয়তো বলত ক'দিন বেরিয়ে আয়। কিন্তু তা তো থাকেনা। তবে কি এটা ওর মানসিক কোন বিকার, মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেবে। না বাড়িটা আর ভালো লাগছে না অন্য কোথাও গিয়ে থাকবে। বয়স হয়েছে তা নয় নয় করে তিন নয়ে সাতাশ। ওর অনেক বন্ধুর বিয়ে হয়ে গেছে। তবে কি ও বিয়ে পাগ .... না না ছি ছি সমাজে আর মুখ দেখাতে পারবেনা।
একটা সুখবর আছে এতদিন পর ও বোধহয় আঁচ করেছে ওর সমস্যা টা। ছোট থেকে খেলোয়াড়ী মানসিকতা সম্পন্ন কুনাল। খেলা বল কি পরীক্ষা হার জিত পাস ফেল দুই আছে ওই নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ওর নেই। কিন্তু একটা জিনিষের অভিজ্ঞতা না থাকলেও ভয় আছে। তাই অভিজ্ঞতার সুযোগ জোটেনি কপালে। প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবার ভয়, প্রস্তাব দেবার পর উল্টো দিকের জন কি ভাববে, যদি কুরুচিপূর্ণ কথা বলে ফিরিয়ে দেয় বা বন্ধুত্বে ছেদ পড়ে। ও হ্যাঁ যা বলছিলাম একটু একটু পরিষ্কার যে সমস্যা কোথায়।.... রিনি।
হ্যাঁ হ্যাঁ ওই যবে থেকে চন্দনের মুখে শুনেছে রিনির দেখা শোনা শুরু হয়েছে তবে থেকেই। দুজনের রিনি কে পছন্দ হয়েছে এটা শুনে আজ যখন কুনালের বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল আর ও চেয়ার ছেড়ে লাফিয়ে উঠলো তখন বোঝা গেল। রিনি ওর কাছেই প্রথম project টা করেছে আর কাজও অনেকটাই শিখেছে। সেই রিনি ওর মনের গভীরে জায়গা করে নিয়েছে কখন ও নাকি টের পায়নি। আমার তো মনে হয় টের পেয়েছিল কিন্তু স্বভাবের দোষ।
যাক সেসব কথা শেষে র অংশটা বলি। আমার কথা অনুযায়ী যায় ওর কাছে কুনাল , দু বার মাঝ পথে ফিরে আসার পর। তারপর আমতা আমতা করে কি সব নাকি বলতে গেছিলো রিনি নাকি খুব রেগে যায় "আর একটা শব্দও শুনতে চাইনা। দিয়ে নিজেই নাকি বলে আমি তোমায় ভালোবাসি কুনাল দা। তোমাকেই বিয়ে করতে চাই। এরপর কুনাল রোগটা একদিন অফিসেও আনল। তারপর সব ঠিকঠাক। শুভ পরিণয়।