প্রকাশকের শৈল্পিক খুন
প্রকাশকের শৈল্পিক খুন
স্টেশন এ গিয়েই কি যেন একটা বিড়বিড় করে উঠলো রমেন | আর কোনোদিন যে রমেন এর ট্রেন মিস হয় না, এমন তো নয় | কিন্তু সকাল থেকেই খিটখিটে বৌ এর জ্বালায় যেন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সে | মাইক্রো ওভেন কেনার যে কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই, সেটা সে কিছুতেই বোঝাতে পারছে না সঙ্গীতা কে | আগের দিন পাশের বাড়িতে ছোট্ট করে নেমন্তন্ন ছিল, বাড়ির ছোট মেয়ের জন্মদিন বলে | সেখানে কেক টা নিজেদের মাইক্রোওভেন এই বানানো | ব্যাস , আর দেখে কে | তার উপর ওদের বৌদি বলে ফেললো, "আমার যে কি সুবিধা হয়েছে কি বলবো | কেক, তন্দুরি, পিজা সব ই তো এখানেই হয়ে যায় | কেউ তো আর বাইরে খেতেই চায় না | হোটেল এর সব খরচা বাদ |" সকাল থেকেই সেই এক আর্জি সঙ্গীতার | বিয়ের আগে কিন্তু ব্যাপারটা এরকম ছিল না | রমেন ভ্যালেন্টাইন ডে তে একটা গ্রিটিং কার্ড আর নিজের লেখা কবিতা দিয়েছিলো যাতে সঙ্গীতার কথা বলা ছিল | সে কি খুশি সঙ্গীতা তখন | ঠিক বাকি মেয়েরা যেমন সোনার গয়না পেয়ে খুশি হয়, ঠিক তেমনটাই হয়েছিল সে, ওই কবিতা টা দেখে | একটা মিষ্টি মিষ্টি প্রেম ছিল দুজনের মধ্যে | ভজহরি মান্নার ডাব চিংড়ি নয়, একসময় ১০ টাকার ফুচকা তেই সন্তুষ্ট ছিল সঙ্গীতার মন | কিন্তু বিয়ের পর আর পাঁচটা সংসারের মতো এই সংসার ও সেই একই হয়ে গেল | রমেন এর নিজের তৈরি পাবলিকেশন থেকে বেশি টাকা আসার কথা এখন নয় | এই তো সবে শুরু করেছে সে | ভালো লেখকের ভালো লেখা, বা অনামী লেখকের দৃষ্টান্তমূলক লেখা পেতে তো সময় লাগে | তার উপর শুধু ভালো লেখাই তো ভালো ব্যবসার মাপকাঠি নয় | বই এর কভার পেজ থেকে শুরু করে ফেসবুক লাইভ এ মার্কেটিং - সব কিছু সামলে উঠতে একটু অভিজ্ঞতা আর মূলধন দুই ই লাগে, যেটা একটু সময় সাপেক্ষ | সংগীতাই আবার ওকে এই নতুন কাজটা শুরু করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল | তথ্য প্রযুক্তির ওরকম টাকা পয়সার লোভ ছেড়ে, নিজের স্বপ্ন কে নতুন করে দেখার ইচ্ছে টা, সংগীতাই দেখিয়েছিলো | কিন্তু আজ এখন সব অতীত | আর পাঁচটা বাস্তব জীবনের গল্পের মতো এরাও আজ নিজেদের হারিয়ে ফেলেছে | রমেন স্টেশন এ এসেও নিজের রাগ সামলাতে পারছে না | চোখটা লাল হয়ে আসছে আর মুখ দিয়ে এখনো মাঝে মাঝে কিছু বিড়বিড় করে যাচ্ছে | ট্রেন এর আওয়াজে সম্বিৎ ফিরে পেলো কিছুটা | আবার কাজের দিকে মন দিতে হবে | আগের দিন অভিক এসেছিলো ম্যানুস্ক্রিপ্ট নিয়ে | ওটার কাজ সত্যি ই ভালো লেগেছে রমেন এর | এটাই বলতে গেলে ওর শেষ আসা | এইসব ভাবতে ভাবতে ট্রেন এ উঠে গেল রমেন |
রমেন তার সাধের পাবলিকেশন এর অফিস এ এসে হাজির | অভিক এর মানুস্ক্রিপ্ট টা কাল থেকে ভালো করে চোখ বুলিয়েছিল সে | সুযোগ বুঝে একটু আধটু ঠিক ও করে নিচ্ছিলো, মাঝে সাঝে | এর আগেও ৬ টা বই বের করেছে নিজের পাবলিকেশন এ | ঠিক করেছিল, লেখার শৈল্পিকতার সাথে কোনোদিন ও আপোষ করবে না সে | তাই কখনো দেখেনি লেখক দের ফ্যান ফলোইং | ভালো লেখা পেলেই বই আকারে বের করেছে লেখা গুলো | কিন্তু এখন কার দিনে, নতুন লেখক দের লেখা লোকে তখন ই বের করে, যখন তাদের কম করে ৩০-৪০ হাজার করে ফেসবুক ফ্যান থাকে | কিছু লোক তো ফ্রি তে পড়তেই পছন্দ করে ফেসবুক এ | রমেন ও পড়ে মাঝে মাঝে | কিন্তু তার মাঝেও অনেকে পয়সা দিয়ে বই কিনে পড়ে | ওই ৩০-৪০ হাজার থেকে অন্তত হাজার লোক বই কিনলেই হলো | কিন্তু নতুন লেখক বা কবি রা ফেসবুক এ না থাকলেই মুশকিল | সব ঝামেলা গিয়ে পড়ে প্রকাশক এর ঘাড়ে | মার্কেটিং এর ব্যাপারটা ভালোই পড়াশুনা করেছে রমেন | কিন্তু শুধু পড়াশুনা করলেই তো চলে না | ভালো রকম ইনভেস্টমেন্ট লাগে এডভার্টাইসমেন্ট এর জন্য | সেই পয়সা আর কোথায় রমেন এর | নেহাত ভালো মাইনের চাকরি করতো বলে কিছুটা সেভিংস এখনো রয়ে গেছে | কিন্তু একদিন তো সেসব ফুরিয়ে আসবে | কিছু না কিছু তো ভাবতেই হবে | যে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শুরু করেছিল প্রকাশনার দায়িত্ব, তার ছিটেফোঁটা ও দেখা যায়না আজকের এই রমেন এর মধ্যে | সারাক্ষন একটা ভয় মনের মধ্যে | অভিক এর লেখাটা পুরোপুরি দেখে নিলো সে | লেখার গুণমান নিয়ে তার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই | এটাকে ঠিকঠাক মার্কেট এ আন্তে পারলেই কেল্লা ফতে | চোখের মধ্যে একটা স্বপ্নের উঁকিঝুঁকি যেন যে কেউ দেখতে পাচ্ছে রমেন এর চোখে | কিন্তু সারা শরীর তখন ও পরিশ্রান্ত | কেন জানিনা তাও একটা দীর্ঘশাস ছেড়ে তালা চাবি দিয়ে ঘরের দিকে রওনা দিলো রমেন |
আসতে আসতে মনে পড়লো ব্যস্ততার চোটে সংগীতা কে একবার ও ফোন করা হয়নি | এতক্ষনে নিশ্চই কেলেঙ্কারি কান্ড হবে | ভাবলেই আতঙ্ক বলে মনে হচ্ছে রমেন এর | একটা ফোন করলো সংগীতা কে | "আজকে কাজের মাঝে একদম ফোন করতে ভুলে গেছি | প্লিজ কিছু মনে কোরো না | এতো কাজ ছিল কি যে বলবো তোমায় |" ওদিক থেকে সংগীতা হেসে উঠে বললো " না বাবা | এত কিছু বলতে হবে না | তুমি তো আমার জন্যই সব করছো নাকি | আমি কি আর তোমার জন্য রাগ করতে পারি | " এই একই রকম কথা আগে যখন বলেছে, তখন রমেন বুঝেছে কেমন প্রলয় আসতে চলেছে ঘরে | কিন্তু আজ যেন অন্য রকম কোনো সুর | এ যেন অন্য সংগীতা কথা বলছে | ঠিক ৩ বছর আগের সংগীতা, ঠিক বিয়ের আগের সংগীতা | কিছুটা হতভম্ব হয়ে ফোন টা রেখে দিলো রমেন |
বাড়ি ফিরলো যখন তখন রাত ৯টা হবে | ঘরটা হালকা অন্ধকার | টেবিল এর উপর শুধু একটা মোমবাতি | ক্যান্ডল লাইট ডিনার এর উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে সংগীতা | টেবিল এর দুই পাশে দুটি চেলো কাবাব এর প্লেট সাজানো | সাথে খেজুর গুড় দিয়ে তৈরি পায়েস | এই দুটোই রমেন এর সবচেয়ে প্রিয় | অনেক দিন পর, রমেন যেন একটা নতুন আনন্দ খুঁজে পেয়েছে | একদিকে যেমন অভিক এর লেখা এক চমৎকার উপন্যাস তাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তেমনি নতুন করে সে যেন তার জীবন সঙ্গিনী কে খুঁজে পেয়েছে | জুতো খুলতে না খুলতেই সংগীতা রমেন কে জড়িয়ে ধরে বললো "তুমি বাবা হতে চলেছো |" রমেন আনন্দে আত্মহারা | চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে আসতে আসতে | চেয়ার টা টেনে দিলো সংগীতার বসার জন্য | আজ থেকে রমেন আর কিছুই কাজ করতে দেবে না সংগীতা কে | কালকেই সে কাজের মাসি ঠিক করবে | টাকা পয়সার দিকটা খেয়াল রাখতে হয় বলে, কাজের মাসি একদিন বাদ দিয়ে দিয়েছিলো রমেন | কিন্তু এখন বিশ্রাম চাই সংগীতার | রমেন ভাবতে শুরু করেছে, এখন থেকে কিছুদিন ঘরে বসেই কাজ সামলে নেবে | মাঝে মাঝে দরকার হলে প্রিন্টিং প্রেস এ গিয়েই চলে আসবে তাড়াতাড়ি | একটা এয়ার কন্ডিশন ও কিনতে হবে | কদিন পরেই গরম পড়তে চলেছে | এই গরমে সংগীতার সাস্থের দিকটা একদম ই ভুলে চলবে না | চেয়ার এ বসতে আরো একটু হতভম্ব হয়ে গেল রমেন | টেবিল এর উপর এক সাইড করে রাখা সেই গ্রিটিংস কার্ড, যেটা প্রথমবার রমেন দিয়েছিলো সংগীতা কে | সাথে সেই কবিতা টাও -
একঘেয়ে জীবনটায় হাজার বার যুদ্ধ করে যাই ,
হিসাব নিকেশ করে কঠোর হতে চায় মনের অশ্রু গুলো,
তবুও ...
তুমি চাইলেই থামিয়ে দিতে পারি ভিন্ন স্রোতের যন্ত্রনা গুলো
তোমার জন্য অনেক বছর পরেও, আনতে পারি হীরের টুকরো গুলো |
আরো অনেক গুলো লাইন লিখেছিলো রমেন | তখন সবে লেখা শুরু করেছে রমেন | কিছুটা কাঁচা হাতের লেখা | এখন আরো অনেক পটু সে, লেখা জোখায় | লেখক বা কবি হিসাবে একটু আধটু নাম ও করেছে সে | কিন্তু প্রকাশক হিসাবে এখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে উঠতে পারেনি সে | এই কটা লাইন ই সবচেয়ে বেশি প্রিয় সংগীতার | সংগীতা জানে হাজার যুদ্ধ জয় করেও, রমেন তার সকল স্বপ্ন পূরণ করবে |
পরের দিন যেন এক অন্য সকাল | অথচ একদিন আগেই সকালটা যেন অন্য রকম ছিল | রাগ, অভিমান কতকিছু বাসা বেঁধেছিলো ঘরে | ট্রেন এর সিট্ এ বসে চুপটি করে যেন আর্ত চিৎকার করছিলো রমেন | অথচ আজ একটা আলাদাই অনুভূতি | বাবা হতে চলেছে সে | আজ আর নিজের অফিস যাবে না | যা কাজ বাড়িতে বসেই সামলে নেবে | হটাত একটা ফোন এলো রমেন এর | অভীক ফোন করেছে | ফোন এর ওপর থেকে আওয়াজ ভেসে আসে "রমেন দা, কেমন দেখলেন মানুস্ক্রিপ্ট টা ? আমার প্রায় দুই বছরের খাটনি এই বই টা | ভারতবর্ষের প্রত্যেকটা মেগালিথ কে একত্রিত করে একটা থ্রিলার রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছি | প্রত্যেক টা জায়গায় গিয়ে রীতিমতো গবেষণা করে লেখাটা লিখতে হয়েছে | অনেক ঐতহাসিকদের কাছে দিনের পর দিন গিয়ে, এই উপন্যাস টা লিখেছি | পড়লে তো বুঝতেই পারবেন, যে প্রোটাগনিস্ট, ভিলেন আর এইসব মেগালিথ গুলো কে মিলিয়ে একটা থ্রিলার লিখতে কি পরিমান খাটনি লেগেছে আমার | " ঠিকঠাক শুনতে পাচ্ছিলো না রমেন কথা গুলো | মানে আবছা আবছা সোনা যাচ্ছে | সাথে শনশন করে প্রচুর শব্দ | বোধয় অভিক মোটর সাইকেল চালাচ্ছিল | হেলমেট পরেনি, তাই শব্দ টা বোধয় আরো বেশি জোরালো | লোকের সময়ের এত অভাব কেন কে জানে | গাড়ি চালাতে চালাতে কথা বলার কি এমন দরকার | ২ মিনিট সময় বেশি লাগলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যায় | এই ভাবেই যুব সমাজ বোধয় উচ্ছন্নে যাচ্ছে | কোনো শৃঙ্খলা নেই, কোনো নিয়ম কানুন মানা নেই | হটাৎ রমেন এর দিক থেকে কোনো প্রত্যুত্তর না পেয়ে অভীক আবার বলে উঠলো "শুনতে পাচ্ছ রমেন দা? " রমেন তখন ও চুপ | কি যেন একটা ভাবছিলো রমেন | আরেকজন অতিথি এলে ঘরের খরচ ও অনেক বেড়ে যাবে | এমনিতেই সংসারের অবস্থার বেশির ভাগটাই, নিজের সেভিংস থেকেই চলছে | কি করে সে সংগীতা কে আবার আগের দিনগুলোয় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে? অভিক এমনিতেই নতুন লেখক | তার উপর সোশ্যাল মিডিয়া তে খুব একটা বিচরণ নেই ওর | মানে লেখক এর ভক্ত পাঠক এর সংখ্যা প্রায় শুন্য | এই অবস্থায় অভিক এর বইটা মার্কেট এ চলবে কিনা সেই বিষয়ে রমেন এর মনে বেশ সন্দেহ | ভয় মানুষ কে অনেকসময় ভুলপথে চালিত করে তোলে | আগে হলে রমেন হয়তো এইসব কিছু ভাবতোই না, ভাবেও নি | তাই তো তার বেশির ভাগ বই ই বেশিদিন টিকলো না | কিন্তু এখন এই সংসারে শুধু দুজন নেই, তিন জন | সংসারের দায়িত্ব তাকে কঠোর হৃদয় করে তুলেছে | চোখ বন্ধ করে কিভাবে যেন বলে উঠলো রমেন " কে আপনি? কি চাই? কিছুই তো বুঝতে পারছি না | আপনি কবে মানুস্ক্রিপ্ট পাঠালেন | কোনো ভুল হচ্ছে না তো |" অভিক এর দিকে যেন 'এ কে ৪৭' এর খান দশেক গুলি ধেয়ে এলো | কিছুই বুঝতে পারছে না সে | একদম হতভম্ব | "কি বলছেন কি? এই তো দিলাম ৫ দিন আগে | মনে করে দেখুন | একসাথে চা ও তো খেলাম আপনার অফিস এর পাশে |" - বলে উঠলো অভিক | এদিকে নির্বাক রমেন যেন বুকে পাথর চেপে কিছু বলে যাচ্ছে | রমেন এর সোশ্যাল এক্টিভিটি বেশ ভালোই | লেখক হিসাবে নামডাক নেহাত কম নেই | এই অবস্থায় নিজের নামে যদি বইটা ছাড়তে পারে, তাহলে এই বই বেস্ট সেলার হতে বাধ্য | নির্দয় শরীর নিয়ে বলে উঠলো "কি সব কথা বলছেন| মনে হচ্ছে রঙ নম্বর |" এদিকে অভীক এর বুকে একরাশ হতাশা | বিশ্বাস এর মর্যাদাই কেউ দিচ্ছে না আজকাল | কি বলবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না অভিক | এই সময় হটাৎ একটা ধাক্কা লাগলো ট্রাক এর সাথে | এতটাই স্তব্ধ হয়ে ছিল সে, যে সামনের লাল সিগন্যাল এর আলো টা দেখতেই পায়নি | কত বছরের স্বপ্ন আর কঠোর পরিশ্রম দিয়ে তৈরি করেছিল তার প্রথম বই | অথচ এভাবে বই চুরি যাবে সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি | গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে তার শরীর দিয়ে | একটা আর্ত চিৎকার শুনতে পেলো রমেন এদিক থেকে | বলে উঠলো "হ্যালো হ্যালো |" কোনো সাড়া নেই | কিছুটা বুঝতে পেরেছে রমেন কি হয়েছে | টেবিল এর সামনের চেয়ার টা ধরে কোনোরকমে ধপ করে বসে পড়লো সে | চোখ দিয়ে একফোঁটা জল পড়েই যেন শুকিয়ে যাচ্ছে | জানি না কি ভাবছে রমেন | একবার ক্ষমা চাইতে পারা যেত যদি, তাহলে বোধয় বেশ ভালো হতো |
বিধাতা হয়তো অন্যদিকে অঙ্ক কষছে অপরাধীর সাজার | শিল্পের খুন আর মানুষ খুনের সাজা কি এক? নাকি শিল্পের খুন হলে আপনা আপনি আরও হাজার হাজার মানুষ মৃত্যু মুখে পতিত হয় |