Rinki Banik Mondal

Inspirational

3  

Rinki Banik Mondal

Inspirational

ময়ূরীর সংগ্রাম(বিষয়-দুর্ঘটনা)

ময়ূরীর সংগ্রাম(বিষয়-দুর্ঘটনা)

2 mins
700


এক বছর হয়ে গেছে ময়ূরী ঘরবন্দী। ময়ূরীর মা-বাবা ময়ূরীকে কখনো বুঝতে দেননি ওর অক্ষমতার কথা। কিন্তু ময়ূরী তো আর অবুঝ নয়।

আজ ময়ূরীর স্বপ্নগুলো তো ভাষাহীন হয়ে পড়েছে। 'নাচ'- এই ইচ্ছের জন্যই'তো ভালোবাসার অদম্য ইচ্ছে আজ'ও ওর রক্তের সাথে মিশে আছে। একবছর আগে একটি বৃষ্টির দিনে, একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় ময়ূরী ওর একটা পা হারিয়েছিল। তখন থেকেই ওর এই অবস্থা।


ঘড়ির কাঁটা'টা সব সময় ঘুরে চলেছে। সারাদিন ব্যস্ত শহরের কোলাহলে ময়ূরীর আবেগগুলো চাপা পড়ে যায়, কিন্তু মাঝ রাতে এসে ময়ূরীর কাছে সময়টা হঠাৎ করেই থেমে দাঁড়ায়, শুধু ভোররাতে কান্নার জল হয়ে স্মৃতিগুলো থেকে যায়।

হঠাৎ করেই আবার ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমে এলো শহরের বুকে। ময়ূরীর ঘরের জানলা দিয়ে বৃষ্টির ছাঁট আসছে। ময়ূরী জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির জল হাতে নিয়ে বৃষ্টিকে নতুন করে উপভোগ করতে চাইল। সে এখন আর বৃষ্টিকে অভিশপ্ত মনে করবেনা। সে বৃষ্টিকে নবরূপে বরণ করতে চাইছে। এক দমকা হাওয়ায় দরজার পেছনে ঝুলিয়ে রাখা ছোট্ট থলিটায় ঝন্ করে আওয়াজ হলো। ময়ূরী ওই ছোট্ট থলিটা থেকে ঘুঙুর দুটো বের করলো। তার থেকে একটা ঘুঙুর বেঁধে নিলো নিজের এক পায়ে। তারপর নিজের লাঠিতে ভর দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে বাড়ির ছাদে গেল। সেখানে গিয়ে হাতের লাঠিটা ফেলে দিয়ে একপায়ে ভর করে মনের আনন্দে নবরূপে বর্ষাকে অভিবাদন জানাতে বর্ষারানী সেজে উঠল। পুরো পৃথিবী যেন আজ ময়ূরীকে বলে উঠল- "নাচ ময়ূরী নাচ রে, ঝুম ঝুমা ঝুম নাচ রে, ওই এলো আকাশ ছেয়ে ওই বর্ষারানী সাজ রে"

এক পায়ে ঘুঙুর বেঁধে নাচ করে আজ সে শত কষ্টকে জয় করে নিলো। একটি অভিশপ্ত দুর্ঘটনাকে সে মুছে ফেলতে চাইল নিজের জীবন থেকে। ময়ূরীর এই সংগ্রামে সঙ্গী হলো তার বাবা-মা। ময়ূরীর এই স্বপ্ন আর ইচ্ছাশক্তি সকলের কাছে অনুপ্রেরণা জাগালো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational