Gopa Ghosh

Inspirational

5.0  

Gopa Ghosh

Inspirational

মৃত্যুহীন ভালোবাসা

মৃত্যুহীন ভালোবাসা

8 mins
908


পলাশ এবার মনে মনে ঠিক করেই নিয়েছে সামনের রবিবার বাবা মাকে যেভাবে হোক দিয়ার বাড়ি পাঠাবেই। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে অশান্তি আর ওর ভালো লাগছে না। এই জুনে ওদের প্রেমের বয়স হবে আট বছর। আসলে পলাশ চাকরি না পেয়ে বিয়ে করতে চায় নি। দিয়া কতবার বলেছে,"তোমার কি আমার ভালোবাসার ওপর ভরসা নেই, একটা যে কোনো চাকরি তুমি ঠিকই জুটিয়ে নিতে পারবে কিন্তু সেই এক গোঁ ধরে বসে আছো, ডিফেন্স এ যাবে।"

পলাশ বোঝে ওর সাথে প্রেম না করলে দিয়ার অনেক আগেই বিয়ে হয়ে যেত।

ওকে অনেক কথা শুনতে হয় এর জন্য। "দিয়া, স্বপ্ন না দেখলে তুমি এগোবে কি করে? আর জেনে রাখো ডিফেন্স এ চাকরি টা আমার স্বপ্ন"

দিয়া মুখ ভার করে বসে থাকে। পলাশ অনেক বকবক করে গেলেও ও আর কথা বলে না।

দিয়ার বাড়ির পলাশের সাথে বিয়েতে কোনো আপত্তি নেই, ওরা বিয়েটা সেরে ফেলতেই চায়। পলাশের বাড়িতেও বেশ কয়েক বার ঘুরে এসেছে দিয়ার বাবা কিন্তু দিয়ার বারণে পাকা কথা বলা হয় নি।


আজ আকাশটা যেনো কেমন থম মেরে রয়েছে। দিয়া গানের স্কুলে বেরোনোর সময় ছাতা টাও ব্যাগে ভরলো। মোবাইলটা টেবিল থেকে তুলে ব্যাগে ভরতে যাচ্ছে, ওটা বেজে উঠলো। দ্যাখে পলাশের নাম,

"হ্যা বলো"

"আমার চাকরির আপয়েন্টমেন্ট লেটার এসে গেছে দিয়া, সামনের বুধবার থেকে ট্রেনিং শুরু...

দিয়া থামিয়ে দিয়ে বলে

"কতদিনের ট্রেনিং?"

এর উত্তর না দিয়ে বলে " তুমি আজ বিকেলে একটু দেখা কারো প্লিজ"

দিয়া "আচ্ছা " বলে ফোন কেটে দেয়।

আরো এক বছর ওদের প্রেমের বয়স বাড়লো। ট্রেনিং শেষ করে আর্মিতে জয়ন করলো পলাশ। তবে প্রথম পোস্টিং টা জম্মুতে হলো। পলাশ চেয়েছিলো সেনা হয়ে দেশের সেবা করবে, ওর ইচ্ছা পূরণ হলো।

কিন্তু দিয়ার ইচ্ছা কিছুতেই পূরণ হতে চাইছে না। পলাশ এবারে অবশ্য ওকে কথা দিয়ে গেছে পরের ছুটিতে এসে বিয়েটা সেরে নেবে। দিয়াও জানে পলাশ ওকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। আসলে পলাশ অনেক ছোটো থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতো। দিয়া মাঝে মাঝে ওর উপর রেগে গেলেও পলাশের এই ভাবনায় ও গর্ব বোধ করতো। এবারে জম্মুতে যাওয়ার আগে পলাশ ওর বাবা মাকে নিয়ে দিয়াদের বাড়ি এসে বিয়ের পাকা কথা সেরে রেখে গেছে। সামনের এপ্রিলে বিয়ে। দিয়ার খুশি মুখ চোখ ঠিকরে বাইরেও বেরিয়ে পড়ছে।

এখন পলাশ খুব বেশি ফোন করতে পারে না বাড়িতে। দিয়াকে চিঠি লিখে মাঝে মাঝে জানায় ও কিভাবে ডিউটি করছে বা জায়গাটা কেমন এইসব । দিয়া চিঠির উত্তর দেয় না কারণ পলাশের ডিউটির কোনো ঠিক নেই।

সেদিন সকালে দিয়ার ঘুম ভাঙতেই একটু দেরি ই হলে গেলো। এক দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছিল ওর জন্য। মায়ের কাছে শুনলো পলাশের বাবা আগের দিন রাতে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। দেরি না করে বাবাকে নিয়েই ছুটলো। সত্যি একই বলে নিয়তি। আর একমাস পরে ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ে ছিল, সে আর দেখা হলো না।


পলাশ এলো বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে। খুব কষ্ট পেয়েছিলো। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। পলাশের এক বছর কালা আশৌচ, তাই বিয়ের মতো শুভ কাজ ওই সময়ে করা যাবে না। ডিউটিতে যাওয়ার আগে দিয়ার বাবার কাছে বারবার ক্ষমা চেয়ে গেছে বিয়েটা এতদিন পিছিয়ে যাওয়ার জন্য।


দিয়া এখন আর পলাশের উপর রাগ করে না। ও জানে পলাশের মতো ছেলে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। এত বছরের সম্পর্কে অনেক মান অভিমান এর পালা গেছে, আর প্রতিবারই পলাশ প্রথম এগিয়ে এসেছে না থাকতে পেরে। দিয়া জানে পলাশ শুধু রেগে যায় দেশের সম্বন্ধে খারাপ কিছু বললে। দিয়াকে অনেকবার বলেছে কথার পরিপ্রেক্ষিতে

"আমার দেশের জন্য যদি প্রাণ দিতে হয়, তুমি কষ্ট পেও না, আমার জন্য গর্ব করো"

দিয়া সঙ্গে সঙ্গে ওর মুখে হাত চাপা দিয়ে বলেছে "বালাই শাট, একথা আর কখনো বোলো না, তুমি না থাকলে আমি বাঁচবো না" দুজনের চোখ জলে চিক চিক করে উঠেছে।


পলাশের বাবা নেই প্রায় এক বছর হতে চললো। এখন পলাশ কাশ্মীরে পোস্টিং। দিয়া রোজ একবার করে পলাশের বাড়ি যায়। মায়ের ভার এখন দিয়ার উপরেই দিয়ে গেছে পলাশ। পরিবারের সবাই চায় ওদের দু হাত এবার এক করে দিতে। পলাশ নিজেও ঠিক করে নিয়েছে বাবার কাজের পর বিয়েটা সেরে নেবে। সেই প্রায় ন দশ বছর ধরে দুজনে সম্পর্ক টাকে ভালোবাসা দিয়ে ধরে রেখেছে। দিয়া যে ওকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবাসে তাও জানে। পলাশও দিয়া ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে না। এখন শুধু এই সম্পর্কের একটা নাম দেওয়া বাকি।

পলাশ এসে বাবার কাজ সেরে কাজে যোগ দিয়েছে প্রায় দুমাস হতে চললো। বিয়ের জন্য ছুটির দরখাস্ত দিয়েও রেখেছে। আর মাত্র একমাস, তারপরেই দিয়াকে সারাজীবনের জন্য কাছে পেয়ে যাবে পলাশ।

"কি রে দিয়া, কার চিন্তা করছিস তখন থেকে?"

দিয়ার বন্ধু পল্লবী র কথায় সম্বিৎ ফেরে দিয়ার।

"কখন এলি, আমি তো তোর জন্যই..."

মাঝখানে কথা থামিয়ে দেয় পল্লবী

"পলাশ দা কবে আসছে?"

"এই তো সামনের বুধবার"

"তাই ম্যাডামের জেগে জেগে স্বপ্ন দেখা হচ্ছে বুঝি?" পল্লবী জোরে একটা চিমটি কাটে দিয়ার হাতে।

"আ আআ, লাগছে কিন্তু পল্লবী,"

দিয়া কপট অভিমান করে অন্য ঘরে চলে যায়।

আর মাত্র একদিন বাকি পলাশ ফিরতে। বিয়ের বাকি এক সপ্তাহ। পলাশের বাড়িতে বিয়ের আয়োজনে কোনো আড়ম্বর নেই, কারণ বাবার চলে যাওয়া। দিয়ার বাড়িতে অবশ্য ঠিক এক বিপরীত। মেয়ের বিয়েতে সামর্থ অনুযায়ী সব আয়োজন করেছে দিয়ার বাড়ি।

সেদিন সকাল থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছিল। দিয়ার খুব টেনশন হচ্ছিল পলাশের জন্য। ও চাইছিলো পলাশ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে যাক। সন্ধ্যে অবধি অপেক্ষা করেও পলাশ এলো না। দিয়া আর থাকতে পারছিলনা। বারবার পলাশের মাকে ফোন করে জানতে চাইছিলো কাশ্মীর থেকে কোনো খবর এসেছে কিনা।

খবর এলো, সাথে পলাশও, তবে কফিনে করে। শত্রুর গুলিতে প্রাণ দিয়েছে পলাশ।

দিয়াকে সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল সেদিন। পলাশকে ছাড়া ও বাঁচবে এটা চিন্তার বাইরে ছিল। কিন্তু নিয়তিকে কে আর এড়াতে পারে।

এখন দিয়া আর আগের মতো নেই। যে মেয়েটি সারাদিন কথা বলতেই থাকতো তার মুখে কথা নেই। একা থাকলেই কি সব ভাবে আর দু চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জল। বাড়ির লোক চায় দিয়া যেনো সব ভুলে নতুন জীবন আরম্ভ করে কিন্তু ও তো চোখ বুজলেই পলাশকে দেখতে পায়, ওকে ভুলবে কি করে?

দিয়ার বাবা মায়ের অবস্থা হলো না মরে বেঁচে থাকার মতো। মেয়ের এই করুন অবস্থা ওদের আর সহ্য হচ্ছিলো না। দিয়ার বাবার মনে হলো মেয়েকে কোথাও বাইরে নিয়ে গেলে হয়তো দিয়ার মন একটু হালকা হতে পারে। দিয়ার মাকে একথা বলতে সেও রাজি। কিন্তু দিয়া কি রাজি হবে?

দিয়া অবশ্য খুব একটা রাজি না হলেও নাও বললো না। ওরা দিন সাতেকের জন্য পুরী ঘুরে এলো। দিয়ার এবার একটু পরিবর্তন লক্ষ্য করলো ওর বাবা মা। টিউশনি যেতে আরম্ভ করলো সাথে গানের ক্লাস ও চলেতে থাকলো। দিয়ার বাবা মা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। মেয়েটা আবার নতুন জীবন ফিরে পাবে। অতীত আঁকরে ভবিষ্যত কে নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। আর পলাশ তো আর কোনোদিনই ফিরবে না।

"দিয়া আজ কি তোর ফিরতে দেরী হবে?"

মা জিজ্ঞেস করলো।

"না, কিন্তু কেনো?"

"তোর মামা আসবে, ফোন করেছিলো"

"ও, ঠিক আছে, চলে আসবো" দিয়া সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়ে বেরিয়ে যায়।

দিয়া সেদিন ফিরে দ্যাখে ঘরে অনেক লোক। মামা মামী ছাড়া আর কাউকে ও চেনে না। দিয়ার মা ব্যস্ত অতিথি আপ্যায়নে। দিয়াকে দেখেই বলে ওঠে

"এসেছিস, "

দিয়া মামা মামীকে প্রণাম করে বলে

"কেমন আছো, অনেকদিন আসো নি, টুম্পা ভালো আছে তো?"

টুম্পা ওর মামার মেয়ে। মামা ওকে নতুন অতিথিদের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়।

"দিয়া ইনি হলেন প্রতুল বাবু, আমাদের প্রতিবেশী, এই কয়েক মাস আগে পাশের বাড়িটা কিনে এসেছেন"

দিয়া চুপ করে শোনে। সবাই এর সাথে আলাপের পর ও হাত জোড় করে প্রণাম করে বলে "আমি একটু ভিতরে যাচ্ছি, কিছু মনে করবেন না"

দিয়ার মায়ের ইচ্ছা ছিল আর কিছুক্ষণ দিয়া ওদের সাথে থাকুক কিন্তু মুখে বললেন "হ্যা তুই এবার যা"

দিয়াকে কেউ কিছু না বললেও ও বেশ ভালো করেই বুঝতে পারলো ওরা ওকে বিয়ের জন্য দেখতে এসেছে। বাবা মা জানে না পলাশের জায়গা আর কাউকে কোনোদিন ও দিতে পারবে না। আসলে পলাশ সবার কাছে মৃত হলেও দিয়ার কাছে নয়। চোখ বুজলেই পলাশ, আর চোখ খুললেই ওর স্মৃতি। ওর বাইরে আর ভেতরে শুধুই পলাশ, অন্য কারো জায়গা হবে কিভাবে?

দিয়ার অনুমান সঠিক প্রমাণ হলো, মা সেদিন রাতে কথাটা বলেই ফেললেন

"দিয়া আজ যারা এসেছিলেন, তোকে ওদের খুব পছন্দ হয়েছে জানিস," মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দিয়া বলে

"আমি জানি"

"সেটাই তো বলছিলাম দিয়া, মামা বলেছিলো ওরা খুব ভালো মানুষ, ছেলেও খুব বড় অফিসে চাকরি করে, দেখিস তুই খুব সুখী হবি।"

"মা আমার মত একবারও নেওয়ার প্রয়োজন মনে করলে না তোমরা?"

দিয়ার মুখ থমথমে।

"তোর মত এখন চাইছি, আর তোকে তো থেমে থাকলে চলবে না মা, পলাশের স্মৃতি আঁকরে ভাবছিস সারা জীবন কাটাবি? আমাদের কথা একবারও ভাববি না?"

মায়ের চোখে জল। এবার দিয়া একটু নরম হয়।

"মা, পলাশ তোমাদের কাছে হয়তো মারা গেছে, কিন্তু আমার কাছে নয়"

মা চোখের জল মোছে,

"কি সব বলছিস তুই, যে মানুষটা আর কোনোদিনই ফিরে আসবে না তার জন্য গোটা জীবন টা নষ্ট করবি ?"

মায়ের চোখ জলে চিক চিক করে ওঠে।


দিয়া সেদিন একটু আগেই টিউশনি থেকে ফিরেছে। পলাশ চলে যাওয়ার পর থেকেই ও ঘরে ঢুকে কিছুক্ষণ পলাশের ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কখনো আবার কথাও বলে তবে কেউ না থাকলে। আজও সেভাবেই তাকিয়ে এতটাই অন্যমনস্ক হয় গিয়েছিল যে বাইরের দরজায় কলিং বেলটা বারবার বাজছে কিন্তু ও শুনতে পাচ্ছে না। মায়ের চিৎকারে ওর সম্বিৎ ফেরে

"দিয়া, দ্যাখ তো, কে বেল দিচ্ছে, দরজাটা খুলে দে না মা" মায়ের গলায় অনুরোধের সুর।

দরজা খুলে যাকে দেখলো তাকে দিয়া শুধু একবার দেখেছে ওর মামার সাথে ওদের বাড়িতে আসতে। তবে এর নাম যে রজত ও জানে, মায়ের মুখে অনেকবার শুনেছে

"দাদা বলেছিলো, রজতের মতো জামাই পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার"

দিয়া দরজা খুলে দিয়ে ভেতরে চলে যায়। মা রজতকে দেখে ব্যস্ত হয়ে ঘরে এনে বসায়।

"কেমন আছো বাবা, তুমি আসবে একটা ফোন করে জানালে দিয়ার বাবাকে পাঠাতাম, তোমায় বাস স্ট্যান্ড থেকে নিয়ে আসতো"

রজত হাসে, "এটুকু আমি ঠিক চিনে আসতে পারবো , আপনি টেনশন করবেন না"

"তোমার বাবা বলেছিলেন ভাদ্র মাস টা কেটে গেলে একবার আসবেন"

"হ্যাঁ, জানি, আজ একটা কথা আপনাকে বলতে এসেছি, যদি কিছু মনে না করেন"

আমতা আমতা করে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। দিয়ার মা থামিয়ে দিয়ে বলে

"বলো না বাবা, আমার কাছে কিসের সংকোচ তোমার?"

মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মায়ের টেনশন বাড়ায় রজত। তারপর খুব আস্তে করে বলে,

"আপনি কিছু মনে করবেন না, এই বিয়েতে আমি রাজি নই"

দিয়ার মা এইরকমই কিছু একটা আশা করছিল। একটু গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞেস করলো "কারণটা কি? আমি কি জানতে পারি?"

"আমার দিয়াকে খুব পছন্দ, কিন্তু কাল আমি ওর আগের জীবন সম্পর্কে সব জেনেছি, এত দীর্ঘ সম্পর্কের পর দিয়া কি পারবে অন্য কাউকে নিজের জীবনে জায়গা দিতে?"

"তুমি একটা ভুল করছো রজত, পলাশ আর পৃথিবীতেই নেই, তাই দিয়াকে বাঁচতে গেলে অন্যকে জায়গা দিতেই হবে, তবে তুমি অমত করতেই পারো, এখানে জোরাজুরির ব্যাপার নেই"

দিয়ার মায়ের চোখে জল। রজত পিছনে ঘুরে দ্যাখে দিয়া। দিয়াকে দেখে মা বলে ওঠে "তোর ভালই হলো, রজতও আর রাজি নয়"

দিয়া এবার মায়ের সামনে এসে বসে। মায়ের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলে

"এত কেনো আমার জন্য চিন্তা করো মা? তুমি তো মা, ভালোবাসা কি তোমার থেকে বেশি কে জানে? " একটু থেমে আবার বলে

"পলাশ আমার প্রেমিক ছিল, আজ সে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে, সে আর কোনোদিন আমার কাছে ফিরে আসবেনা"

দিয়ার দু চোখ জলে টলমল করে

"এবার আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও, তাহলে তুমি যা বলবে আমি মেনে নেবো, আমাকেও তো তুমি খুব ভালোবাসো, আমি যদি কাল না থাকি, তুমি কি পারবে, আমার জায়গায় অন্য কাউকে ভালোবাসতে?" মা চুপ করে বসে থাকে।

"আসলে রক্তের সম্পর্ক যেমন গভীর হয়, হৃদয়ের সম্পর্কটাও তাই।

রজত এবার দিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে

"পলাশের জন্য সত্যি আমার খুব দুঃখ হচ্ছে, আপনাদের প্রেমটা রক্তের সম্পর্কের চেয়েও গভীর এটা আজ বুঝলাম"

দিয়া আর কথা বলতে পারে না, কান্নায় ওর গলা বুজে আসছে। ঘরে গিয়ে পলাশের ছবিটা বুকের মধ্যে চেপে ধরে হাপুস নয়নে কাঁদতে থাকে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational