কৃষ্ণদাসী {পর্ব-১০}
কৃষ্ণদাসী {পর্ব-১০}
শ্রীরাধা : তুমি আমার চোখের দিকে তাকাও কিশোরী ......নিজেই নিজের আসল পরিচয় দেখতে পাবে ......
এক দৃশ্যপট ফুটে উঠল কিশোরীর চোখের সামনে । ঐ তো একটা মেয়ে কে দেখা যাচ্ছে, যেন দেবীর মত সাজ .......হাতে সাদা পদ্ম নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে .....চারপাশটা কি সুন্দর ......মনে হয় স্বর্গে ও এত সৌন্দর্য নেই , যা ঐ স্থানে আছে । এ কী .....সামনে যে রাই দিদি বসে .....মেয়ে টা রাইদিদি র পায়ে ঐ পদ্ম টা রাখল........মেয়ে টার মুখটা এখনো ভালো ভাবে দেখতে পারছে না কিশোরী ....এই তো ...এই তো মেয়ে টা সামনে ঘুরছে ......এটা তো কিশোরী নিজেই.......একী ঐ কিশোরী র মত দেখতে মেয়ে টা তো উবে যাচ্ছে .....রাইমুরারীর শরীরে যেন মিলিয়ে যাচ্ছে ও ।
চমকে উঠল কিশোরী ।
কিশোরী : আমি তো কিছু ই বুঝতে পারছি না ......কি হচ্ছে এসব.....শ্রীমুরারি কে এই মেয়েটা .........কিসব দেখলাম আমি ????
শ্রীকৃষ্ণ (হেসে ) : নিজের অস্তিত্ব কে .....
শ্রীরাধা : কিশোরী , তোমার কি কখনো মনে হয়নি .....যে কেন তোমার এত অলৌকিক শক্তি .....কেন এত ভক্ত থাকতেও আমরা শুধু মাত্র তোমার সাথে সাক্ষাৎ সম্পর্ক রেখেছি........তুমি কোনো সাধারণ ভক্ত নও কিশোরী ....তুমি একজন কৃষ্ণাংশী ।
কিশোরী (অবাক হয়ে ) : কৃষ্ণাংশী মানে ?
শ্রীকৃষ্ণ : যে সমস্ত ব্যক্তি রা নিজের কর্মগুণে মৃত্যুর পর আমার বাসভূমি গোলকে মুক্ত হয় .....তারা গোলকে আমার মধ্যে বিলীন হওয়ার পর পুনরায় আমার থেকেই সৃষ্ট হয়ে দেহধারণ করে আমাদের সাথে আমাদের সখা ও সখী হয়ে গোলোকে বিরাজ করে .....তাদের ক্ষমতা কোনো সাধারণ দেবতার থেকে কম হয় না .....এরা কৃষ্ণের অংশ তথা কৃষ্ণাংশ বা কৃষ্ণাংশী রূপে পরিচিত হয় ......
কিশোরী : তার মানে....তার মানে আমার মত ঐ মেয়েটাকে ....মানে আমাকে...... আমি ওটা গোলোকে ই দেখলাম .........কিন্তু এই পৃথিবীতে আমি আবার কেন এলাম ....? আর কৌস্তভ টাই বা কে ?
শ্রীরাধা : সব বলছি কিশোরী ......কৌস্তভ কোনো ব্যক্তি নয় , কৌস্তভ হল শ্রীকৃষ্ণের শিরোমণি । এই শিরোমণি মর্ত্যলোকের কিছু কল্যাণ সাধনের জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর মর্ত্যলোকে স্বয়ং প্রকাশিত হয় । এই সময় শ্রীকৃষ্ণ তার প্রতিশ্রুতি স্বরূপ কৌস্তভের ওপর থেকে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে নেন .....তাই এই সুযোগ টা নিতে চায় অশুভ শক্তি রা । কারণ , যদি কৌস্তভ ঐ সময় কোনো অশুভ শক্তির হাতে চলে যায় ....তাহলে ত্রিলোকের জন্য তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে । তাই যখন যখন অনুরাধা নক্ষত্র রাধাষ্টমী তে উদিত না হয়ে জন্মাষ্টমীতে উদিত হয় অর্থাৎ কৌস্তভ মর্ত্যে প্রকাশিত হয় , তখন তখন কোনো কৃষ্ণাংশী কে মানুষ রূপে পাঠানো হয় কৌস্তভ কে রক্ষা করতে ......আগামী জন্মাষ্টমী তে ৭৩২ বছর পর আবার কৌস্তভ মর্ত্যে প্রকাশিত হবে ......আর তাই এইবারে তোমায় পাঠানো হয়েছে ....
কিশোরী : তার মানে এই কারণেই অশুভ শক্তির সম্রাজ্ঞী তমসা আমার শত্রু.....?
শ্রীকৃষ্ণ : হ্যাঁ .....কিশোরী ...আর তুমি যে এই সিংহরায় পরিবারে এসেছো .....তার ও নির্দিষ্ট কারণ আছে ....
কিশোরী : তা তো আমি বুঝতে ই পেরেছি শ্রীমুরারী , এই জগতের সমস্ত ঘটনা ই যে অতীতের কোনো কারণের ফল স্বরূপ সঞ্চালন করো.....তা বুঝতে আমার আর বাকি নেই ।
শ্রীরাধা (হেসে) : যথার্থ বলেছো । তোমাদের জমিদারির অন্তর্গত তুলসীপুরের ঐ মন্দির টির পূর্বে যারা মালিক ছিলেন, তারা ঐ মন্দিরের সম্পত্তি এক ব্যবসায়ী কে নিলাম এ বিক্রি করতে যাচ্ছিল তখন সিংহরায় রা ঐ জমি কে রক্ষা করার জন্য অনেক বেশি মূল্যে কিনে নেন , এবং ঐ জমিকে চিরকালের জন্য নিষ্কর দৈবত্র সম্পত্তি বলে ঘোষণা করেন .....আর তারা প্রার্থনা করেন তাদের মৃত্যুর পর আত্মা যেন শ্রীহরির চরণে মুক্ত হয় ....কিন্তু তাদের কর্মগুণ তাদের কৃষ্ণের চরণে মুক্ত হবার জন্য যথেষ্ট ছিল না .....তাই আমরা ঠিক করি .....পরবর্তীকালে কোনো কৃষ্ণাংশী ওদের গোত্র ভুক্ত হয়ে কৌস্তভ কে ব্যবহার করে ওদের মুক্তি দেবে......
কিশোরী : কিন্তু কৌস্তভ মণি জন্মাষ্টমীর দিন কোথায় প্রকাশিত হবে .??......
হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি তে ঘুম ভেঙে গেল কিশোরীর । কেউ দরজা ধাক্কাচ্ছে .....বৌদিদির গলা .....। তাড়াতাড়ি উঠে দরজা টা খুলল কিশোরী ....
বৌদিদি (কাঁদতে কাঁদতে) : কিশোরী ... কিশোরী ....সর্বনাশ হয়ে গেছে ...
কিশোরী (খানিকটা ভয় পেয়ে) : কি হয়েছে বৌদিদি ?
বৌদিদি : বাবার একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে ....
কিশোরী : কি বলছো .... বৌদিদি ....বাবার তো আজ ভোরে ই ফেরার কথা ছিল ....
বৌদিদি : ফেরার পথেই তো হয়েছে ......ভাই কি ঘুমাচ্ছে ....??
কিশোরী : হ্যাঁ আমি ডেকে দিচ্ছি ....এখন কোথায় বাবা ......??
বৌদিদি : বাবা কে City Hospital এ admit করা হয়েছে .....বাড়ির সবাই ওখানে গেছে , আমি , তোমরা দুজন , সৌভিক আর বোন যাব এখন .......আমি যখন তোমায় ডাকতে এলাম ....তখনই তোমার দাদাভাই আর বাকিরা সব গেল হসপিটালে .....তুমি ভাইকে ডাকো তাড়াতাড়ি ...
কিশোরী : হুম .....
শোভন কে ডেকে পুরো ঘটনা টা বলল কিশোরী । সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেশ হয়ে ওরা রেডি হয়ে নিল । তারপর ওরা ৫ জন শোভনের car এ করেই বেরিয়ে গেল । হসপিটালে পৌছিয়ে দেখে সবার মধ্যেই একটা থমথমে ভাব । ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছে - বাঁচার chance মাত্র 0.01% । সবাই বুঝে গেছে যে 99.9 % death possibility র বদলে এই 0.01 % recovering possibility কখনো ই বাস্তবায়িত হবে না ......সবার মত শোভন ও খুব ভেঙে পড়ল । শোভন কে কখনো এত ভেঙে পড়তে দেখেনি কিশোরী ।
কিশোরী (নিজের দুশ্চিন্তা কে লোকানোর চেষ্টা করে ) : এত ভেঙে পড়বেন না ছোটসাহেব .....বাবা ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে....
শোভন : কিভাবে কিশোরী .....তুমি শুনলে না doctor কি বলেছেন .....
কিশোরী : ঈশ্বরের উপর ভরসা রাখুন ছোটসাহেব .....সব ঠিক হয়ে যাবে .....
ঈশ্বরের নাম শুনে আরো রেগে গেল শোভন .....
শোভন : আদেও কী ঈশ্বর আছে......যদি থাকে তাহলে এত মানুষের এত দুঃখ কেনো ?
কিশোরী : এই ভাবে ভেবো না.....
শোভন : কিভাবে ভাবব......তুমি আমাকে তার ওপর ভরসা রাখতে বলছ.....যে আমার মাকে কেড়ে নিয়েছে, আজ আমার বাবা কে কেড়ে নিচ্ছে .....মা এর সময় তো অনেক ডেকেছিলাম, সাড়া দেয় নি তোমার ঈশ্বর ।[ শোভনের চোখে জল দেখতে পেল কিশোরী ] তুমি তো খুব বিশ্বাস কর তোমার রাইমুরারীকে ......আমার বাবা তো কোন পাপ কাজ করেনি কখনো, আমাদের আলাদা করতে চাওয়ার ভুল টা ও তো সে শুধরে নিয়েছে .......তাহলে তুমি বলো তোমার রাইমুরারীকে , ফিরিয়ে দিক আমার বাবার জীবন ........আমিও মানব তোমার রাইমুরারীর অস্তিত্ব .......
গলা ধরে গেছে শোভনের । ওকে দেওয়ার মত কোনো উত্তর নেই কিশোরীর । এখন ভগবানকে ওর প্রশ্ন করার পালা ......কি অপরাধে শোভন কে পেতে হয় বারবার স্বজন হারানোর দুঃখ .....কি কারণে ভেঙে যাচ্ছে মর্ত্যবাসীর ঈশ্বর বিশ্বাস ........কি কারণে আমার ঈশ্বর সংযোগ থাকা সত্বেও আমি নিজের প্রিয়জন দের বিপদ রুখতে পারিনা .......।
কিশোরী শোভনের পাশ থেকে উঠে hospital এর প্রার্থনা কক্ষের দিকে গেল । ওখানে শ্রীকৃষ্ণের একটা মূর্তি হয়েছে, আরো কয়েকজন রয়েছেন ...তাদের আত্মীয় দের সুস্থতা প্রার্থনা করার জন্য । মূর্তির সামনে এগিয়ে গেল কিশোরী, প্রদীপ জ্বালাতে জ্বালাতে মনে মনে বলল , " শ্রীকৃষ্ণ আমার তোমাকে কিছু বলার আছে ......আমি নিজের জন্য নয় , ছোট সাহেবের জন্য কিছু চাইব , আমি জানি একান্ত স্থান ছাড়া তুমি আবির্ভূত হবেনা ......কিন্তু হে সখা আমি জানি তুমি চাইলে সব সম্ভব ........ তুমি চাইলে ই কিছু না কিছু উপায় করে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারো ......আমি এও জানি যে তুমি জানো আমি আসার সময় থেকেই বাবার প্রাণভিক্ষার প্রার্থনা করে চলেছি......তুমি তাও শোনোনি ....তাই দয়া করো দয়াময় আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলতে চাই ..... "
বেশ কিছু ক্ষণ সময় কেটে গেলেও পরিস্থিতি র কোনো পরিবর্তন হল না । ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল কিশোরী র ।
কিশোরী : ঠিকাছে , আজ স্রষ্টা যদি তার অংশের পাশে না থাকে , তবে এই কৃষ্ণাংশী র অস্তিত্বের ও কোনো দাম নেই .....আমি জানি কাউকে জীবন দেওয়ার শক্তি আমার নেই ......কিন্তু আমার সব শক্তি দিয়ে আমার জীবনকে কাউকে দান করার ক্ষমতা আমার আছে ...... আমি আমার সমস্ত শক্তি কে নিয়োগ করে এই আদেশ করছি ......রাধাকৃষ্ণ মহানাম মহিমা অপার, আমার প্রাণ বিনিময়ে প্রাণ ফি........
কিশোরী র মুখের কথা শেষ হবার আগেই হঠাৎ চারিদিক স্তব্ধ হয়ে গেল । পৃথিবীতে সময় চক্র হঠাৎ করে থেমে গেল । কিশোরীর সামনে আবির্ভূত হল ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ।
শ্রীকৃষ্ণ : এসব কি করছ কিশোরী ......বিধির বিধান কে বদলানো যায় না ।
কিশোরী : তুমি তো নিজেই বিধাতা .....তুমি পারো না এমন কিছু নেই......
শ্রীকৃষ্ণ : যা রচিত হয়ে গেছে ......তা বদলানো যায় না .........
কিশোরী : কিন্তু কি কারণে বাবার আয়ু এত কম ছিল ......এখনো ৬০ বছরও হয় নি বাবার .....
শ্রীকৃষ্ণ : এটা সত্যি যে....এটা আদিনাথের মৃত্যুক্ষণ নয়........এটা ওর জীবনের একটা বড় ফাঁড়া ........কিন্তু ওর কর্মগুণ অনুযায়ী ও এই ফাঁড়াতেই মৃত্যু প্রাপ্ত হচ্ছে , কিন্তু চিন্তা কোরো না ওর আত্মা সদ্গতি ই প্রাপ্ত হবে .......
কিশোরী : বিষয় টা তার আত্মা র গতি নিয়ে নয় ......বিষয় টা তার জাগতিক সম্পর্ক নিয়ে .....তার এই জগতের আত্মীয় দের নিয়ে .....না আমি ছোট সাহেব কে কষ্ট দিতে পারব ....না পারব ঈশ্বর বিশ্বাস কে মর্ত্যবাসীর চোখে ছোট হতে দিতে .....আর না পারব যে আমাকে বাবা বলে ডাকার অধিকার দিয়েছে তাকে হারাতে .......
শ্রীকৃষ্ণ : কিন্তু এটাই যে ওর কর্মফলের পরিণাম .......যদি ওর কর্মফল আরো উন্নত হত ......
তাহলে হয়তো এই ফাঁড়া টায় ও বেঁচে যেত কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই কিশোরী ....
কিশোরী : ওনার কর্মফল ও উন্নত হবে আর উনি প্রাণ ও ফিরে পাবে .....
শ্রীকৃষ্ণ (হেসে) : কিভাবে ?
কিশোরী : একজন কৃষ্ণাংশী র কর্মফল অসীম ......তা কখনো কমে না .......তাই আমি আমার কর্মফলের পুণ্য শক্তির কিছু অংশ শ্রীহরি কে স্বাক্ষী রেখে আমার শ্বশুরমশাই কে দান করলাম ......সখা আশা করি আর কোনো সমস্যা নেই ......
শ্রীকৃষ্ণ (হেসে ) : তুমি পুনরায় প্রমাণ করে দিলে তুমি কৌস্তভ মণি রক্ষা র জন্য যোগ্য কৃষ্ণাংশী ........আমার প্রেমের শক্তি স্বার্থক,যে আমার সকল গোলক বাসীর হৃদয়ে অন্যের জন্য এত চিন্তা, এত প্রেম .......আদিনাথের চেতনা এক্ষুনি ফিরবে.....
বলেই অদৃশ্য হয়ে গেলেন শ্রীকৃষ্ণ । সময় চক্র ও আবার চলতে শুরু করল । কিশোরী কে প্রার্থনা কক্ষে ডাকতে এল শুভাঙ্গী, " মেজ বৌদিদি তাড়াতাড়ি চলো....জেঠুমনি response করছে.....doctor বলছে আর কোনো risk নেই " ।
কিশোরী : বাহ্ ..... চলো .....রাই মুরারি আমার কথা শুনেছে.......
ওখানে গিয়ে সবার মুখেই একটা স্বস্তির ছাপ দেখে নিজের এই শক্তি কে স্বার্থক লাগল কিশোরীর । Doctor বারণ করেছে কাউকে patient এর কাছে যেতে , তাই শোভন দরজার কাঁচ দিয়ে ই দেখার চেষ্টা করছে। কিশোরী কে দেখে কিশোরী র কাছে ছুটে এল শোভন, আশেপাশে কে আছে..... কে দেখছে কে দেখছে না সব ভুলে গিয়ে জড়িয়ে ধরল কিশোরী কে । - "Thank you Kishori ....I know this miracle only happened beacause of your prayer.......thank you so much ......এই ভাবে সারাটা জীবন সব বিপদে আমার পাশে থেকো ...love you yaar "
অন্য কোনো দিন হলে হয়তো লোক লজ্জার ভয়ে নিজেকে শোভনের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা কিশোরী .....কিন্তু আজকের এই দিন টা, এই ভালোবাসা টা , এই বিশ্বাস টা অনেকটা স্পেশাল ....। তাই এই আলিঙ্গন বেশ কিছু ক্ষণ স্থায়ীত্ব পেল .......
Background Music of marked part :
Jab koi baat bigar jaye..
Jab koi mushkil par jaye ...
Tu dena sath mera
O HUMNAVAA ...
আজ রাতে শোভন বাবার কাছে থাকবে hospital এ। আজ সারাদিনে ভীষণ tired কিশোরী ...শুতে না শুতেই ঘুম চলে এল ওর । আজও স্বপ্নে ও দর্শন পেল রাইমুরারীর ।
কিশোরী : কৌস্তভ মণি কোথায় প্রকাশিত হবে, তা তো তোমরা বললেই না .....
শ্রীকৃষ্ণ : বাংলা তে ই যখন এসেছো .......তার মানে বাংলার ই কোনো মন্দিরে প্রকাশিত হবে কৌস্তভ ।
কিশোরী : কিন্তু বাংলায় কি একটা মন্দির নাকি ??
শ্রীকৃষ্ণ ( ঠোঁটের কোণে হাসি নিয়ে ) : তুমি তো বাংলার সব মন্দির ই চেনো ....গিয়ে খুঁজবে .....
কিশোরী : জন্মাষ্টমী আর বেশি দিন বাকি নেই .....আর তুমি মজা করছো ...
শ্রীরাধা : ও এমনিতেই পুরো বিষয়টা নিয়ে ঘাবড়ে রয়েছে ..... কেন শুধু শুধু বিরক্ত করছো ওকে ...
শ্রীকৃষ্ণ : আমি বিরক্ত কোথায় করছি ...... ঠিকাছে , এটা তো সত্যি ই আমরা সেই মন্দিরের নাম উল্লেখ করতে পারব না .....তবে একটা সাহায্য করতে পারি ....শোনো কিশোরী , যেই যেই মন্দিরে জন্মাষ্টমীতে ১০৮ টা পদ্ম ফোঁটে তার ই মধ্যে কোনো একটা তে কৌস্তভ প্রকাশিত হবে .....
কিশোরী : আমি জানি বাংলা য় মাত্র ৫ টা মন্দিরে ই জন্মাষ্টমীতে ১০৮ টা পদ্ম ফোঁটে । আমাদের রাইমুরারীর মন্দির , শ্যামাচল , মোহনপুর, ব্রজমোহিনী মন্দির আর বৃন্দাধাম - তাই তো ??
শ্রীকৃষ্ণ : হুম .....
কিশোরী : কিন্তু জন্মাষ্টমীর দিন ৫ টা মন্দিরেই গিয়ে খোঁজা তো সম্ভব নয় ....
শ্রীরাধা : সঠিক মন্দির কোনটা , তার উত্তর এই ধাঁধা তে রয়েছে -
রূপ লাগি আঁখি ঝড়ে গুণে মন ভোর
প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর
তার এ কথা শুনি তারে করি আলিঙ্গন
মোর স্পর্শে বোঝে সে আমি কোন জন ।
চেতন পাইয়া সে দিলা অভিশাপ
ফলে সীতা বিনা হলাম আমি মণিহারা সাপ ।
কিশোরী : ঠিকাছে আমি চেষ্টা করছি .....
শ্রীরাধা : আর সঠিক মন্দিরে যাবার পর ১০৮ টা পদ্মের মধ্যে কোনটাতে কৌস্তভ মণি আছে তা তোমায় নিজের বুদ্ধিতে বুঝতে হবে আর শুধুমাত্র ৩ টে পদ্ম কুড়িকেই খুলে দেখার সুযোগ তুমি পাবে ....
কিশোরী : ঠিকাছে .....
শ্রীকৃষ্ণ : আর এই কৌস্তভ মণি উদ্ধারের জন্য তুমি তোমার কোনো দৈবশক্তি ব্যবহার করতে পা রবেনা ........শুধুমাত্র আত্মরক্ষার প্রয়োজন হলে তবেই ব্যবহার করতে পারবে .....
( ..........ক্রমশ)