PRITTHISH SARKAR

Romance Fantasy Thriller

3.5  

PRITTHISH SARKAR

Romance Fantasy Thriller

কৃষ্ণদাসী [পর্ব-৫]

কৃষ্ণদাসী [পর্ব-৫]

5 mins
193



        কিশোরী র দুশ্চিন্তা দেখে শোভন কিশোরী র কাঁধে হাত রেখে বলল , " কি হল ? এত চিন্তা করছ কেন ? It is just an incident .Don't worry. " 


কিশোরী  (বেশ চিন্তিত হয়ে )   : না ছোট সাহেব । এটা শুধুমাত্র সাধারণ ঘটনা নয় ......আমার জীবনে এই সমস্ত ঘটনা গুলো ....এক একটা ঈশারার সমান ।


শোভন     : Ok. অন্য দিন হলে ...আমি এই বিষয়ে তোমার সাথে তর্ক করতাম ...but.....আজকের এই স্পেশাল দিনে আমি এসব চাই না ...। তুমি এরকম মুড অফ করে থাকলে আমার একটু ও ভালো লাগবে না । দেখো যা বিপদ আসুক না কেন, আমরা এক সাথে ঠিক সেটাকে জিতে নেব ।


কিশোরী      : হুম । (মনে মনে ) কি করে বোঝাই আপনাকে ছোট সাহেব আমি সাধারণ নই ...... এমন অনেক কিছু আছে .....যেগুলোর সমাধানে আপনি আমার পাশে থাকতে পারবেন না ....বা আমিই চাইবো না আপনাকে সেই সবে জড়াতে .....কিন্তু তাও আপনার আশ্বাস সবসময় আমাকে অনেকটা ভরসা দেয় । ( শোভনের কাঁধে মাথা রেখে মুখে বলে ) ছোটসাহেব , এই ভাবেই সারাটা জীবন শুধু আমার পাশে থাকবেন ।


শোভন       :  তুমি আমার জন্য সব ছেড়েছ .....আর তোমার সব কিছু তে আমি পাশে থাকব না?


কিশোরী      :  আচ্ছা ছোট সাহেব, বিকেল হয়ে গেছে ...এর পর আমরা কোথায় যাবো?


শোভন       : কেন, আমাদের বাড়িতে .....মানে সিংহরায় হাউসে ।


কিশোরী      : কিন্তু বড়বাবু ....


শোভন       : ভরসা আছে তো আমার উপর ?


কিশোরী     : অগাধ ....


        কিশোরী শোভনের কাঁধ থেকে মাথা তুলে মন্দিরের দরজার সামনে গেল ....খুব সহজেই দরজা খুলে গেল । ওরা দুজনে ই বাইরে বেরিয়ে এল। ঠাকুর বাবা , বামুন মা আর লক্ষী বসে আছে ।

কিশোরী র মাথায় সিদুর দেখে ঠাকুর বাবা আর ও রেগে গেলেন । 

        আর কিশোরী র মুখে থাকা আনন্দের ছাপ দেখে লক্ষী র সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেল ।


ঠাকুর বাবা     : ছিঃ ছিঃ ছিঃ । শেষ পর্যন্ত ....।ছোট সাহেব, আমি আর এক মুহূর্ত সহ্য করতে পারছিনা ঐ মেয়েকে । আপনি এখখুনি এই মেয়ে কে নিয়ে যান এখান থেকে ...


শোভন  ( হেসে)     : Of course. For this I've married her.


কিশোরী       : ঠাকুর বাবা, এখনও রাগ করে তুমি ? তুমি তো নিজেই দেখলে রাই মুরারি কিভাবে আমাদের রক্ষা করল .....আচ্ছা ,আমি কি যাবার আগে একবার তোমায় একটু প্রণাম করতে পারি ।


ঠাকুর বাবা  (চিৎকার করে )    : না । আর শোন , তোকে ঈশ্বর রক্ষা করেছেন ....তোর অকালমৃত্যু র হাত থেকে । কিন্তু তোর এই অনাচারের শাস্তি তুই পাবি । তোর এই সুখের মুখ ক'দিন থাকে .......আমিও দেখব.....

  

             সেদিন গাড়ি করে সিংহরায় হাউসে ফেরার সময় সত্যি ই খুব কেদেছিল কিশোরী । তবে কারণ টা ছিল অন্য ........একেতে চিরকালের মত নিজের পূর্বতন আশ্রয় ছাড়ার দুঃখ আর তার ওপর আবার ঠাকুর বাবার তিরস্কার .....


           ওরা সিংহরায় হাউসে র সামনে প্রচুর ভিড় দেখতে পেল । ভিড়টা ছিল প্রেসের ।এর মধ্যেই তারা খবর পেয়ে গেছে । শোভনের গাড়ি দেখে প্রেস পুরো ছেঁকে ধরল। সম্ভবত মন্দির থেকে সিংহরায় হাউসে আগেই খবরটা চলে এসেছে ...তাই সিংহরায় রা গেট খোলেনি । শোভন কিশোরী কে নিয়ে " Excuse me" , " I am tired now but I promise to attend a virtual meeting with all " - এসব বলে তাদের কাটিয়ে গেটের ভিতরে চলে এল । তাও কিছু রিপোর্টার গেটের ভিতরে চলে এসছিল ......সিকিউরিটি গার্ড দের দিয়ে তাদের বাইরে বার করে দিল ।


        মেন গেটে এসে দরজা নক করতেই দরজা খুলল শোভনের মা , ওর বাবা আর পিসিমনি পিছনে দাঁড়িয়ে । দরজা টা খুলেই ওর মা ভিতর দিকে সরে এল ।


আদিনাথ (শোভনের বাবা )   : ছিঃছিঃ বেটা এটা তুই কি করলি ? আমাদের ফ্যামিলির তো একটা স্ট্যাটাস আছে । শেষ পর্যন্ত একটা নাম গোত্র হীন মেয়েকে বিয়ে করলি ? আমরা কি বলব লোককে .......


অলঙ্কারা (শোভনের পিসিমনি )   : এটাই বলব যে .....আমাদের ছেলে একটা সার্ভেন্ট কে বিয়ে করেছে ........কৃষ্ণদাসী .....slave of temple.....


শোভন        : পিসিমনি, ওর পরিচয় Mrs. Kishori Sinha Roy.  ...আর she is a great devotee of Lord Radhakrishn. আর এই "কৃষ্ণদাসী " term টা তো তোমরা দিয়েছ...এই সোসাইটি দিয়েছে ।


আদিনাথ        : বেটা, সেটা ই তো প্রবলেম ।সোসাইটি কে কী জবাব দেব বলো?


শোভন     ( আদিনাথের হাত ধরে)      : পাপা , আমরা বাধ্য নই তো সমাজ কে জবাব দিতে । আর পাপা , তুমি কি সোসাইটি র জন্য তোমার বেটা কে হার্ট করবে ....বলো?.......আমি এমনিতেই অনেক হার্ট হয়ে ছি।


মেঘা (শোভনের মা)    :    ছেলে তো ঠিকই বলছে.......


অলঙ্কারা       : Please Boudi. যেটা বোঝো না, সেটা নিয়ে কথা বোলো না ।


শোভন    (খানিকটা বিরক্ত হয়ে) : পিসিমনি , তুমি মানবিকতা বোঝো না বলে অন্য কেউ ও বুঝবে না ....সেটা তো না .....তাই না ??


আদিনাথ        :  বেটা । এই ভাবে কথা বলতে নেই । যা , তুই বৌমাকে নিয়ে ঘরে যা । (হেড অব দ্য সার্ভেন্টস্ কে ডেকে ) কাকুলি , কাউকে বলো মেজবৌরাণির এই জিনিস গুলো তোমাদের শোভন স্যার এর রুমে রেখে আসতে ।


          কিশোরী এতক্ষণ চুপ করে প্রায় কাঠের পুতুলের মত ই দাঁড়িয়ে ছিল । কিন্তু এবার শ্বশুরের কাছ থেকে মর্যাদার আভাস পেয়ে একটু সাহস করে বলল , " না বড়বাবু , এমন কিছু জিনিস নেই ....শুধু কটা শাড়ি আর কিছু জিনিস আছে ......আমিই পারব...."


আদিনাথ    : তোমার মতামত আমি শুনতে চাইনি .....


             মেঘা শোভন-কিশোরী কে ঘরে নিয়ে গেল।


অলঙ্কারা     : বড়দা , তুই মেনে নিলি ঐ ক্লাসহীন মেয়েটা কে ?


       - " আমি না ঘরে যাচ্ছি .......প্রেস কন্ফারেন্স গুলো অ্যাটেন্ড করতে হবে " - বলে আদিনাথ সিংহরায় রুমে চলে গেল । অলঙ্কারা বেশ অবাক হয়ে রইল .....এই মেয়ে এসেই কি চাল বদলে দিল ?


           দু - তিন ঘন্টার মধ্যেই এই বিয়ের খবরটা অল ওভার ইন্ডিয়া য় ছড়িয়ে গেল । রুহানা ও খবরটা পেয়ে সিংহরায় হাউসে এসেই সোজা চলে গেল শোভনের বাবার ঘরে ।


রুহানা  (খানিকটা এক্সপ্লোসিভ হয়ে )  : আঙ্কেল , তুমি এই বিয়ে টা মেনে নিলে ? তুমি তো আমাকে চুস করেছিলে বলো । আর ......আর তুমি নাকি প্রেস কে বলেছো ......যে তুমি ওদের  one month of marriage day তে নাকি ওদের আবার বিয়ে দিয়ে গ্র্যান্ড পার্টি দেবে?.....কেনো করছো আঙ্কেল এসব ?


আদিনাথ      :  সরি রুহানা মা ....I can understand you ......but I have not another choice । এমনিতেই এই বিয়ে তে আমাদের প্রেস্টিজ হ্যাম্পার হয়েছে ......এই বিয়ে ভেঙে লোক হাসাতে চাইনা আমি । তাছাড়াও আমার ছেলে কে আর হার্ট করতে পারব না ........দরকার পড়লে কিশোরী কে আমাদের বাড়ির যোগ্য করে তুলতে হবে ....I am really sorry .....


রুহানা  (আশাহত হয়ে ) : Ok uncle ....ok


        কথাটা বলেই রুহানা আদিনাথের রুম থেকে বেরিয়ে এল ।


রুহানা (মনে মনে )   :   Ok uncle .তুমিও পাল্টি খেয়ে গেলে......very good......কিন্তু এখনো কেউ আছে যে আমায় সাহায্য করবে ......পিসিমনি ।আর তাছাড়াও এবার আমি নিজে খেলার চাল দেব......আর তাতে আমায় হেল্প করবে কিশোরী নিজেই ।


                   (...... ক্রমশ )



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance