PRITTHISH SARKAR

Drama Fantasy Thriller

4.0  

PRITTHISH SARKAR

Drama Fantasy Thriller

কৃষ্ণদাসী [পর্ব ৮]

কৃষ্ণদাসী [পর্ব ৮]

6 mins
392



          আজ grand wedding party. সকাল থেকেই দধিমঙ্গল , গায়ে হলুদ নানা উপাচারের তোড়জোড় । তারই মধ্যে পিসিমনির সাথে সব প্ল্যান সেরে নিয়েছে রুহানা । বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বিয়ের লগ্ন । কিশোরী কে সাজানোয় তদারকির দায়িত্ব নিয়েছে রুহানা আর শুভাঙ্গী ।


         খুব নামকরা মেকআপ আর্টিস্ট এসেছে কিশোরী কে সাজাতে । রুহানা আবার তাকে সব ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিচ্ছে । রুহানা নিজেও খুব ভালো মেকআপ আর্টিস্ট । প্রথমে ঐ সাজাবে বলেছিল কিশোরী কে বাট শোভন ওদের বিউটি প্রোডাক্টস আর পোশাক এর মডেল দের যে সাজায় , তাকেই অ্যাপয়েন্ট করেছে । শোভনের মতে , ও ফ্রিতে বাইরের কারোর হেল্প নিতে চায় না ।


           অনুষ্ঠান টা হচ্ছে সিংহরায় ফ্যাশন্সের কলকাতার রিসর্টে । বিশাল বড়ো রিসর্ট । বাথরুম অ্যাটাচ্ড বেডরুম ই আছে ৩৫ টা । তাছাড়াও ৭ টা ফ্লোরে ৭ টা হল । পুল আছে, বাগান আছে , আছে খুব সুন্দর সুন্দর ফোয়ারা ও । পরিবেশ টা এতটা ই সুন্দর যে স্বর্গের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ বললে ভুল হবে না ।


        Ground floor টা ফাঁকা রাখা হয়েছে ....বিকেলে আসা guest রা use করতে পারবে । 1st floor এ ফ্যামিলির সিনিয়র পুরুষ candidate আর relative রা থাকছে । 2nd floor এ ফ্যামিলির সিনিয়র মহিলা candidate আর relative রা , 3rd floor এ এই generation এর ছেলেরা আর 4th floor এ এই generation মেয়েরা রয়েছে । 


              কিশোরী র মেকআপ complete . লাল সবুজের বেনারসি আর তার সঙ্গে হীরের গয়নার সাজ , তার ওপর Mrs. Ahuja র মত মেকআপ আর্টিস্টের bridal makeup এর টাচ - কিশোরী র মত সুন্দরী কে যে আজ স্বর্গের অপ্সরার সমতুল্য মনে হচ্ছিল, সেই বিষয়ে কোন দ্বিমত থাকার কথা নয় ।


            


রুহানা      :  শুভাঙ্গী, যাও তুমি রেডি হয়ে নাও ।আমি কিশোরী র সাথে রয়েছি .....এখনো তো অনেক টাইম আছে....তুমি রেডি হয়ে আসো তারপর আমি রেডি হতে যাবো ।


শুভাঙ্গী     :  হুম । টাইমের অনেক আগেই সব হয়ে গেছে । আচ্ছা আমি রেডি হতে গেলাম ।


        শুভাঙ্গী যেতেই নিজের প্ল্যান কে বাস্তবায়িত করার প্রথম ধাপে পা দিল রুহানা । 


রুহানা      : কিশোরী, চলো ।


কিশোরী  (অবাক হয়ে )    :  কোথায় ? 


রুহানা        :  তোমাকে আন্টি ঐ কনে খোঁজার রিচুয়াল টার কথা বলে নি ? 


কিশোরী     :  না , তো ।


রুহানা       :   May be , she has forgotten . Any way ....এই বাড়ির নিয়ম হল .....বিয়ের আগে কনে কে কোনো একটি ঘরে লুকিয়ে রাখা হয় আর বরকে বলা হয় কনেকে খুঁজে বার করতে । Then ,খুঁজে বের করার পর বিয়ে টা হয় ।


কিশোরী      : এরকম নিয়ম কেন ?


রুহানা       :  I don't know properly.....but শুনেছি এরা তো আগে রাজপরিবার ছিল ......এই বংশের ই কোন prince একজন princess কে দস্যু দের ডেরা থেকে rescue করে বিয়ে করেছিল ....সেই জন্য ই নাকি এই ritual টা perform করা হয় ।

{(মনে মনে ) এত দিন তো আমি business girl and makeup artist ছিলাম .....but এখন তো দেখছি ভালো story writer ও হয়ে গেছি ।} 


কিশোরী     :  ওহ ....., কোথায় লোকাবো আমি ?


রুহানা      :   দেখো এখনো তো অনেক time আছে.....so i think তুমি এমন জায়গায় লুকাও ....যাতে শোভন সহজে খুজে না পায় । দেখো এই ৫ টা floor ই তো use হচ্ছে ........ওপরের floor দুটো তো use হচ্ছে না । তুমি 6th floor মানে সাত তলায় লোকাতে পারো ....


         কিশোরী কে সেদিন রুহানা বাঁচিয়েছিল , তাই ই হয় তো রুহানা কে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না কিশোরীর ।


কিশোরী    : ঠিকাছে, চলো ।


        সাততলার একটা ঘরে কিশোরী কে রেখে দরজা টা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিল রুহানা । তারপর কিশোরী যে রুমে রেডি হচ্ছিল, সেই রুমে চলে এল ও । আগেই পিসিমনিকে দিয়ে কিশোরী র ড্রেস আর জুয়েলারি র আর একটা সেট আনিয়ে রেখেছে রুহানা । সেগুলো পড়ে নিল রুহানা । মেকআপ টাও complete করে নিল নিজেই ।এদিকে শুভাঙ্গী রেডি হয়ে রুহানা কে কনের সাজে দেখে অবাক হয়ে প্রশ্ন করল , " রুহানা দি , তুমি কনের সাজে ? মেজ বৌদিদি কোথায় ? "


রুহানা    : ( মনে মনে)  ভালো হয়েছে তুমি এসেছো .......কারণ যদি আমি বিপদে পড়ি তুমিই হবে আমার বাঁচার উপায় । (মুখে) সব বলছি ।তার আগে বলো তো তোমার দাদার কাছ থেকে বিয়ে উপলক্ষে টাকা আদায় এর কোনো প্ল্যান করেছো ?


শুভাঙ্গী      :   না .... আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম .....


রুহানা       :  আমার এই সাজটা তো তার ই প্ল্যান .. .....আমি কিশোরী কে ওপরে রেখে এসেছি .........আর আমি এই ভাবে মন্ডপে যাব ....তার পর যখন আমার ঘোমটা খোলা হবে.....তখন শোভন কে বলব কিশোরী কে বিয়ে করতে হলে ...আমাদের treat এর টাকা দিতে হবে ...


শুভাঙ্গী       : wow ....great idea.....কিন্তু please ....সিদুরদানের আগেই এসব করো ...


রুহানা       :   আরে okk.....don't worry....। আমি ঘোমটা দিয়ে নিচ্ছি ।


শুভাঙ্গী      :   হুম .....চলো ।


          মন্ডপে যাওয়ার পর বিয়ের বিধি স্বরূপ কনেকে বরের চারদিকে ঘোরানো হল। সবারই মনে প্রশ্ন হচ্ছে ....কনের মুখ ঘোমটায় ঢাকা কেন?


             প্রশ্ন উঠতেই defend করতে চলে এল পিসিমনি......." যেহেতু ওদের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে ......তাই আমাদের গুরুদেব বলেছেন ওদের এই বিয়ে টা complete না হওয়া পর্যন্ত ওরা কেউ কারোর মুখ দেখবে না ......তাই শুভদৃষ্টি ও হবে না । গুরুদেবের আসার তো কথা ছিল.....but সকালে ফোন করে জানালেন যে উনি একটু অসুস্থ .......তাই আর এই pandemic এর মধ্যে আসবেন না "


           পিসিমনির এই ডিফেন্সে বেশ অনেকটাই নিশ্চিন্ত হল রুহানা । বিয়ে চলতে চলতে হঠাৎ ই শোভন বলে উঠল , " Stop it .....stop it " আদিনাথ জিজ্ঞাসা করল, " কী হল বেটা? "


শোভন        :  There's any wrong papa....this bride is not Kishori......


মেঘা  (শোভনের মা )      : কি বলছিস তুই শোভন?


শোভন         : হ্যাঁ মা , I am sure......unveil her .....


         শোভন যে এবার ঘোমটা খুলিয়েই ছাড়বে, তা বুঝে গেছে রুহানা । তাই নিজেই ঘোমটা খুলে এক মুখ হাসি নিয়ে বলে উঠল, " Yes you are right " । সবাই অবাক হয়ে গেল ।


শোভন   ( ধমকের সুরে ) : What's this Ruhana ?


রুহানা        :   আসলে , আমি এটা মজার জন্য করেছিলাম .........as a part of a plan of Shuvangi and mine .আমরা ভেবেছিলাম সিদুরদানের আগে আমি ঘোমটা খুলে বলব আসল বৌ কে পেতে গেলে treat দেওয়ার টাকা দিতে হবে .......ঐ শুভাঙ্গী বলো....


শুভাঙ্গী        :  হুম ....ছোটদার কাছ থেকে treat পাওয়ার জন্যই এসব....


আদিনাথ       : না না , আজকের দিনে এসব মজা করা একদম ই উচিত হয় নি ....


রুহানা        :  Sorry uncle....দোষটা আমারই ....শুভাঙ্গী তো ছোট .....আমারই বোঝা উচিত ছিল .........


শোভন       :  Really?? এটা শুধু মাত্র prank ? আর কোনো intention ছিল না তো ....I mean past related ??


রুহানা      :  What are saying Shovon ? Please......এতটা নীচে নামিও না আমায় । কিশোরী 6th floor এ room no 33 তে আছে ...


          বলেই রুহানা অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে গেল । তারপর কিশোরী কে এনে বিয়ে সুসম্পন্ন করা হল । পরে কিশোরী শোভন কে জিজ্ঞাসা করেছিল, "কী করে বুঝেছিলেন আমি ঐ কনেটা ছিলাম না ?" উত্তরে  শোভন বলেছিল ," হাত দেখে ....ওর হাতে আমার দেওয়া রিং টা ছিল না .......আর আমি জানি তুমি কখনো ঐ রিং টা খোলো না ....." 


             সেই দিন কত সেলিব্রিটি রা এসেছিল , তাদের অটোগ্রাফ পাওয়া টা ও কিশোরী র কাছে স্বপ্নের ব্যাপার ছিল তাদের সাথে সামনা সামনি  introduce করানো হল কিশোরী কে । তার ওপর আবার এত camera ......কিশোরী র মনে হচ্ছিল ও যেন cellebrity হবার স্বপ্ন দেখছে.....


             সেই দিন সব ভালো ভাবেই মিটল ।তারপর থেকে রাইমুরারীর আশীর্বাদে বেশ ভালোই দিন কাটছিল কিশোরীর । ধীরে ধীরে ও হয়ে ওঠে সিংহরায় হাউসের গৃহলক্ষী - সবার বিশ্বাস আর ভালোবাসার পাত্রী । যদিও পিসিমনি বা রুহানা যে এর মধ্যে ওকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেনি - তা নয় । কিন্তু রাইমুরারীর আশীর্বাদে সব বাঁধা ই জয় করতে পেরেছে ও । 


           এখন রাইমুরারী আর একান্তে দর্শন দেয় না কিশোরী কে ......হয়তো মন্দিরের মত একান্ত সাক্ষাতের সুযোগ হয় না বলেই। এখন কোনো কিছু কিশোরী কে বলার প্রয়োজন হলে স্বপ্নে দর্শন দেন তার । তাদের কৃপায় সবকিছু নির্বিঘ্নেই চলছিল ওদের । কিন্তু আজ স্বপ্নে কিশোরী কে কিছু নতুন ইঙ্গিত দিল তারা । তারা বলেছে যে , কিশোরীর জীবনে দুটো নতুন শক্তির প্রভাব আসতে চলেছে - কৌস্তভের শুভ শক্তি আর তমসার অশুভ শক্তি । কে এই কৌস্তভ আর কে ই বা এই তমসা.......সেটা জিজ্ঞাসা করার আগেই ঘুম ভেঙে গেল কিশোরীর ।


                        (ক্রমশ)

            এটি একটি ধারাবাহিক গল্প, এর বিষয়বস্তু: 

মন্দিরে পালিত কিশোরী বড় হওয়ার সাথে সাথে উপলব্ধি করেছে তার ঐশ্বরিক সংযোগ ।ভাগ্য ওকে মন্দিরের আঙিনা থেকে নিয়ে এল জমিদার বাড়ির অন্দরমহলে।কিন্ত হঠাৎ ই ঘটল ওর অকালমৃত্যু।কে ছিল এই খুনের পিছনে?এই শত্রুরা লৌকিক জগতের না অলৌকিক জগতের?কে নেবে এই মৃত্যুর প্রতিশোধ?সব উত্তর পেতে পড়ুন ভালোবাসা , রহস্য আর অলৌকিকতায় ভরা এই ধারাবাহিক গল্প "কৃষ্ণদাসী"।

      



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama