জোনাকিকে কেউ মরতে দেখেনি কখনও
জোনাকিকে কেউ মরতে দেখেনি কখনও
আর তাকে সেই মরণ চেয়ারে বসানো হল। মৃত্যুঘন্টার আগে জানতে চাওয়া হল তার শেষ ইচ্ছে কি? যদিও মৃত্যুগামী মানুষটি জানত না তার দোষ কি! এমনকি যারা সাজা দিতে এসেছে কিংবা যারা বিচারক তারাও কেউই জানত না মৃত্যুদন্ডের আসল কারণ। যদিও মৃত্যুদন্ডই বহাল হয়েছিল তার। যেহেতু মানুষটি ছিল অন্ধ, হতে পারে চাক্ষুষদের দেশে অন্ধত্ব একটা অপরাধ। আর তাকে শেষ ইচ্ছে জানতে চাওয়ায় তার মুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠেছিল। বলল, হাতের মুঠোয় একবার জোনাকি ধরতে চাই। খুব ছোট থেকে সে চেয়েছিল একটা জোনাকি পোকাকে বশ মানাতে। যদিও কখনও জোনাকি দেখেনি সে। যারা তাকে ঘিরেছিল তারা সে আবদার মেনে নিল। আর দূর দূরান্তে পাঠাল জোনাকি ধরে আনতে। তারা ছিল লোকটির ওপর সহানুভূতিশীল। যদিও তারা লোকটির মৃত্যুদন্ডই চেয়েছিল। কোত্থাও জোনাকি পাওয়া গেল না। জঙ্গল কেটে সব বাড়ি হয়ে গেছে। অবশেষে জেলার একটা ছোট্ট কালো পোকা তার হাতে ধরিয়ে দিল আর বলল, এই নাও জোনাকি। লোকটি শিশুর মত হেসে মুঠোয় ধরল। অদ্ভুত অনুভূতি হল তার। যা আগে কখনও হয়নি। শেষ মৃত্যুঘন্টাটা যখন বেজে গেল, লোকটি তবু হাসল। সে তো জেনেই ছিল, জীবনে তার স্বপ্নপূরণ হয়ে গেছে। সেই কবে থেকে তার ইচ্ছে একটা জোনাকিকে পোষ মানানো। তাই চেয়ারে যখন আগুন জ্বলে উঠল সে কাঁদল না। ভয়ও পেল না। মুঠোর ভিতর পোকাটাকে শক্ত করে ধরে রইল শুধু।