হঠাৎ একদিন
হঠাৎ একদিন


আকাশটা বেশ থমথমে হয়ে আছে। যখন তখন বৃষ্টি চলে আসতে পারে। দীয়া খুবই চিন্তায় পড়ে গেল। এই অবস্থায় বাড়ির বাইরে বেরনোটা উচিত হবে কি না। কিন্তু কাল পরশু পরপর দুদিন লকডাউন, বন্ধ থাকবে সব কিছুই, আর ঘরে সেরকম প্রায় কিছুই নেই । মা বাবা এক সপ্তাহের জন্য মাসির বাড়ি বেড়াতে গেছে। অফিসের কাজের চাপটা এই সপ্তাহে একটু বেশীই আছে, এই অজুহাতে ও বাড়ি রয়ে গেল।
তাই অগত্যা ছাতা একটা ব্যাগে ঢুকিয়ে ও বেরিয়ে পড়ল।
ওদের আবাসনের ঠিক পরের আবাসনেই একটা বড় শপিং কমপ্লেক্স হয়েছে। তাই কতটুকু আর সময় লাগবে, এখন দুপুর একটা বাজে, আধঘণ্টার মধ্যে চটপট করে কেনাকাটা সেরে বাড়ি ফিরে স্নান করে দুপুরের খাবারটা খেয়ে নেবে। মনে মনে
এইসব ভেবে ও বেরিয়ে পড়ল।
রাস্তায় বেরিয়ে কয়েক পা এগোতেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলো। দ্রুত পা চালিয়ে পৌঁছে গেল, গন্তব্যে। তিনতলা শপিংমলটিতে
সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ দুটো, অসংখ্য নানা রকম জীনিষের দোকান, কিন্তু আজ দোতলায় একটি মাত্র দোকানই শুধুমাত্র খোলা। বাকী সব দোকানই বন্ধ। ওর যা যা দরকার সব কিছুই ঐ দোকানে পেয়ে যাবে, তবে জমজমাট, লোকের ভীড়ে ব্যস্ত মলের আজকের এই নিস্তব্ধতায দীয়ার মনটাকে খারাপ করে দিল।
এই দোকানে অন্য দিনের তুলনায় কর্মচারী সংখ্যা আজ যেন অর্ধেক। ও ছাড়া জীনিষ কিনতে আসা লোক প্রায় হাতেগোনা। মনের আনন্দে প্রচুর জীনিষ কিনে ফেলল। এবার ফেরার সময় হলো, আসল বিপত্তি। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি, দুই ব্যাগ ভর্তি জীনিষ, কি করে বাড়ি ফিরবে!!
এতো বড় বিল্ডিং এর নিস্তব্ধতায় এবার প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেল। নিরাপত্তা হীনতায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ল।
খেয়াল করেনি আর একজন ও যে ওরই
মত বৃষ্টি কমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল, রাহুল, একই আবাসনে সেও থাকে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে, কারুর সাথে মেশে না, ঠিক দীয়ার উল্টো স্বভাবের।
বৃষ্টিটা একটু কমতে, বলল, "গাড়ি পার্কিং এ আছে, আমি আনতে যাচ্ছি। তুমি আমার সাথে বাড়ি ফিরবে"।
কথাটায় এতোটাই জোর ছিল যে দীয়া কিছু বলার সুযোগই পেলো না।
দীয়া কে দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়ায়, নিরাপদে ঘরে পৌঁছে দিল রাহুল।
আর, সেদিন থেকেই
, দুটি ভিন্ন চরিত্রের মানুষের ভালোবাসার গল্প আরম্ভ হলো।